বশেমুরবিপ্রবিতে জাতীয় ‘শোক’ দিবসের কর্মসূচি ঘোষণা

বশেমুরবিপ্রবি টুডে


বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) সীমিত পরিসরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫ তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস-২০২০ পালন উপলক্ষে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মোঃ নূরউদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতীয় শোক দিবস পালন উপলক্ষে বশেমুরবিপ্রবিতে বৈশ্বিক করোনা মহামারীর কারণে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ দিবসের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- আগস্ট মাসব্যাপী কালো ব্যাচ ধারণ।

আগামী ১৫ আগস্ট শনিবার জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা, একইদিন সকাল ১০টায় টুঙ্গিপাড়ায় জাতির জনকের সমাধিসৌধে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন ও পবিত্র সূরা ফাতেহা পাঠ, বাদ যোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া মাহফিল এবং বিকাল ৫টায় কেন্দ্রীয় মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা করা হবে।

আজ থেকে সীমিত পরিসরে খুলছে বশেমুরবিপ্রবি

বশেমুরবিপ্রবি টুডে


গোপালগঞ্জ: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) আজ (৯ আগস্ট) থেকে সীমিত পরিসরে প্রায় সকল দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরু হতে চলেছে।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত পত্র স্মারক নং ৩৭.০০.০০০০.০৬১.৯৯.১০৬.১৭.৩৯২ তারিখ ২৯.০৭.২০২ এর প্রেক্ষিতে বৈশ্বিক করোনা ভাইরাসের সংক্রামণ থেকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার লক্ষে পূর্বের ধারাবাহিকতায় ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।

তবে বশেমুরবিপ্রবির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের অনুমোদনক্রমে রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. নূরউদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে
এ সব তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি প্রয়োজনে ও দাপ্তরিক কাজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর দপ্তর, প্রকৌশল দপ্তর, পরিকল্পনা উন্নয়ন ও ওয়ার্কস দপ্তর, হিসাবদপ্তর, রেজিস্টার দপ্তর, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর এবং কেন্দীয় লাইব্রেরি ০৯ আগষ্ট ২০২০ তারিখ থেকে সীমিত পরিসরে খোলা থাকবে।

এ সমস্ত দপ্তর প্রধানগন দপ্তরেরর প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারীগণকে দপ্তরে উপস্থিত রেখে প্রয়য়োজনীয় কার্যাদি পরিচালনা করবেন।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি সেবাসমূহ যেমন-পানি, বিদ্যুৎ এবং নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ড যথারীতি অব্যাহত থাকবে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, উল্লেখ্য ক্লাস, পরীক্ষা, আবাসিক হলগুলো পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।

একই নামে দুই বিশ্ববিদ্যালয়, ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক


২০০১ সালে জাতীয় সংসদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০১ পাসের মাধ্যমে গোপালগঞ্জে যাত্রা শুরু করে বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে অধ্যয়নরত রয়েছে প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থী। কিন্তু সম্প্রতি এই একই নামে পিরোজপুরেও একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনটির খসড়ার ওপর মতামত ও চাওয়া হয়েছে যার একটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। আর এই ছবি দেখেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বশেমুরবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী প্রিয়তা দে বলেন, ‘আমরা যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি তাদের কাছে বিশ্ববিদ্যালয় অনেক বড় আবেগের জায়গা। বিশ্ববিদ্যালয়ের এই নাম টাই আমাদের পরিচয় বহন করে। আর যেটা একেবারে নিজস্ব। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখলাম একই নামে পিরোজপুরে একটি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাশ করানোর কাজ চলছে। সত্যিই যদি এমন হয় তবে আমরা এইটার তীব্র প্রতিবাদ জানাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘পৃথিবীতে একই নামে দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হওয়ার নজির নেই। আমরা আশা করি দ্রুত এর সমাধান হবে।’

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ইজাজ রহমান বলেন, ‘একই নামে দুইটি বিশ্ববিদ্যালয় হবার কোন যৌক্তিকতা, প্রয়োজনীতা ও উদাহরণ কিছুই নেই ৷ তারপর ও যখন আমার বিশ্ববিদ্যালিয়ের নামে আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয় হয় তখন আমি দুইটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্যই ভবিষ্যতে আইডেন্টিটি ক্রাইসিসের শিকার হওয়ার সম্ভাবনা দেখতে পাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিশেষ করে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৯ বছর পর এমন সিদ্ধান্ত আমাদের জন্য অযাচিত ও আনজাস্টিফায়েড। এমন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বশেমুরবিপ্রবি এর শিক্ষার্থীরা সোচ্চার থাকবে।’

একই নামে দুটি বিশ্ববিদ্যালয় হলে পরবর্তীতে জাতির পিতার নামই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিতি থেকে উহ্য হয়ে যেতে পারে আশঙ্কা করে লাইভস্টক সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন বিভাগের তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর নাম ধারন করে তার জন্মস্থান গোপালগঞ্জে প্রতিষ্ঠিত বশেমুরবিপ্রবি। পিরোজপুরেও বশেমুরবিপ্রবি নামে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে চেনা বা ডাকার সুবিধার্থে কেউ বলবে গোপালগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় আর কেউ বলবে পিরোজপুর বিশ্ববিদ্যালয়। এর ফলে দিনশেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর নাম অনেকটাই উহ্য হয়ে যাবে। তাই আমি মনে করি, একই নামে আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয় কখনোই হতে পারে না।’

একই নামে দুটি বিশ্ববিদ্যালয় মজা করার শামিল উল্লেখ করে বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের শেখ মোহাম্মদ রিফাত বলেন, ‘একই নামে দুই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে মজা করার শামিল। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিক হওয়া উচিত। একে তো আমাদের দেশে প্রচুর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ফলে শিক্ষিত বেকার বাড়ছে, এখন আবার একই নামে আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রমাণ করে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে গুরুত্ব সহকারে নেই না।’

বাবার সঙ্গে অভিমান, বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

সানজিদা বিনতে শাফিন
বশেমুরবিপ্রবি


গোপালগঞ্জ: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের (২০১৮-২০১৯) শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা করেছেন। ওই শিক্ষার্থীর নাম সাদিয়া কুতুব।

শুক্রবার (১০ জুলাই) আনুমানিক দুপুর ১ টার দিকে নিজ বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়েছেন তিনি।

পরে তাকে গোপালগঞ্জের সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক ঐ শিক্ষার্থীকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই শিক্ষার্থীর বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার চাঁদমারি রোডে।

মৃত সাদিয়ার এক আত্নীয় জানান যে, সাদিয়া ও তার ছোট ভাই এর সাথে ক্যারাম বোর্ড খেলা নিয়ে এক পর্যায়ে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে তার বাবা তাকে রাগ দেখান। বাবার সাথে অভিমান করে আনুমানিক দুপুর ১ টার দিকে গলায় ফাঁস দেন। পরে তার বাবা ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতলে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক আনুমানিক দুপুর দুইটার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রাজিউর রহমান মহোদয় বলেন, ‘এই ব্যাপারে আমরা এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে জানিনা। ওই বিভাগের চেয়ারম্যান ও শিক্ষার্থীর পরিবার আমাদের সাথে এখনও যোগাযোগ করেনি।’

গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, পুলিশ সদর হাসপাতালে লাশ বুঝে পেয়েছে দুপুর ২ টার দিকে। পড়াশুনা ও সাংসারিক বিভিন্ন বিষয়ে বাবার সাথে অভিমান করে উক্ত শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন বলে জানতে পেরেছি।”

মেধাবী শিক্ষার্থী সাদিয়ার মৃত্যুতে পরিবার ও সহপাঠীদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

আমার দেখা বশেমুরবিপ্রবির সাংবাদিকতা!

মো. রায়হানুল ইসলাম সৈকত


বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি)। গোপালগঞ্জের এই বিশ্ববিদ্যালয়টির অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম চলছে গত এক দশক ধরে।

বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাংবাদিকতা যেন এক অনিবার্য নিয়ামক। প্রায় প্রতিটা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতার নজির রয়েছে বাংলাদেশে। কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি এবং রাজনৈতিক দল না থাকলেও সেখানে সাংবাদিকতা এবং তার সংগঠন দেখা যায়।

তবে ‘সাংবাদিকতা’ এবং ‘রাজনীতি’ দুটো আলাদা বিষয়। গণতন্ত্র এবং দেশকে সুষ্ঠুভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যেমন সুস্থ রাজনীতির প্রয়োজন আছে, তেমনি একটি ভালো সমাজ বিনির্মাণে একজন দক্ষ সাংবাদিক সমাজের দর্পণ হিসেবে কাজ করেন।

দেখা যায় সাংবাদিকতা সাধারণত রাজনৈতিক দলের বলয়মুক্ত থাকে। অর্থাৎ কেউ যদি সাংবাদিকতা করেন তাহলে নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশনের জন্য তাকে রাজনৈতিক দল মুক্ত থাকতে হয়। এই হচ্ছে রাজনীতি এবং সাংবাদিকতার বিষয়ে মোদ্দাকথা।

এবার মূল কথায় ফিরে আসি। বঙ্গবন্ধুর পুণ্যভূমির এই ৫৫ একরের ক্যাম্পাসে বর্তমানে সাংবাদিক সমিতি, প্রেসক্লাব, রিপোর্টার্স ইউনিটি ও সাংবাদিক ফোরাম নামের চারটি সাংবাদিক সংগঠন রয়েছে। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুধু সাংবাদিক সমিতির অনুমোদন রয়েছে। বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এতগুলো সাংবাদিক সংগঠন রয়েছে কিনা সন্দেহ আছে।

৫৫ একরের এই ছোট ক্যাম্পাসে এতগুলো সাংবাদিক সংগঠনের প্রয়োজন আছে? এই প্রশ্ন শুধু এই ক্যাম্পাসে নয়, বাংলাদেশের প্রায়শই ক্যাম্পাস থেকে করা হয়। এই প্রশ্নের উত্তরের আগে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিষয়ে কিছু কথা বলা যায়।

পার্বত্য চট্টগ্রামে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) নামের এই একটি দল ছিলো। কিন্তু পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে এই একটি দল ভেঙে প্রায় তিনটি উপদল তৈরি হয়। এছাড়া আরও কয়েকটি উপদল সেখানে রয়েছে। এতগুলো দল তৈরির পরে শুরু হয় নিজেদের মধ্যে সহিংসতা। এক দলের লোক অন্য দলের লোককে হত্যা করছে প্রতিনিয়ত।

এছাড়া বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড তো লেগেই আছে। ফলে বলা যায়, এই ভাঙন কখনই তাদের জন্য ভালো ছিলো না। এদিকে এই ভাঙনের পিছনে নিরাপত্তা বাহিনীর বড় ধরনের মদদ রয়েছে বলে অভিযোগ আছে।

ঠিক তেমনি ২০১৯ সালের অক্টোবর-নভেম্বর পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সাংবাদিক সংগঠন ছিলো। যদিও কয়েকটি সংগঠন দাবি করেন তাদের প্রতিষ্ঠা অনেক আগে হয়েছে। কিন্তু সে বিষয়ে তেমন কোন দালিলিক ভিত্তি নেই। ছোট ক্যাম্পাসে এতগুলো সাংবাদিক সংগঠন তৈরির পিছনেও কতিপয় শিক্ষকের মদদ রয়েছে বলে অভিযোগ আছে।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলের এজেন্ট হয়ে সাংবাদিকতা করার অভিযোগ আছে। অভিযোগ আছে দুর্নীতি করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে নিজের শক্ত অবস্থান তৈরি করার জন্য সাংবাদিকতা পেশাকে বেছে নেয়ার। তবে এসব অভিযোগ যদি সত্য হয় সেক্ষেত্রে অন্যান্য সাংবাদিকদের জন্য বিষয়টি বেশ চ্যালেঞ্জের। এতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের আস্থা হারিয়ে যেতে পারে সাংবাদিকতার উপরে। যদি তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো মিথ্যা হয় তাহলে সে বিষয় সম্পর্কে অভিযুক্তদের পরিস্কার বক্তব্য দেয়া উচিত।

একজন সাংবাদিক হিসেবে আমার মনে হয় কোন প্রশ্নবিদ্ধ মানুষের সাংবাদিকতা করা উচিত না। এটি একটি মহান পেশা। কতিপয় মানুষের জন্য এটি কলঙ্কিত হতে পারে না।

এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সংগঠন এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের দলগুলোর মধ্যে একটা মিল আছে। সেটি হলো নিজেদের মধ্যে কোন্দল। সহসাই দেখা যায় ৫৫ একরের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিক সংগঠনের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব হয়। এটি যেমন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট করে তেমনি সাংবাদিকতার মতো মহান পেশাটাও প্রশ্নবিদ্ধ হয়।

সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে কিছু বলা জরুরী। একজন সাংবাদিক হিসেবে আমার মনে হয় সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে একজন সাংবাদিকের উচিত সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ থাকা। কিন্তু এসমস্ত সাংবাদিক সংগঠনের মধ্যে কয়েকটি সংগঠনকে দেখা যায় একটি নির্দিষ্ট মহলের হয়ে কাজ করতে। এটি আমাদের জন্য লজ্জার।

এই ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সময়ে সত্য প্রকাশের কারণে সাংবাদিকদের বিপদের মুখে পড়তে হয়েছে। কিন্তু সেই বিপদের সময়ে বর্তমানে সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দেয়া অনেকে পাশে এসে দাঁড়ায়নি। বরং সেসময়ে অনেককে রাজনৈতিক দলের ব্যানারে সত্য প্রকাশ করে বিপদে পড়া সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সক্রিয় হতে দেখা গেছে।

সত্য প্রকাশ করার কারণে অনেক সাংবাদিককে বিভন্ন সময়ে জামাত-শিবির অপবাদসহ বহিষ্কারের দাবিতে মিছিল করা অনেকেই এখন নিজেকে সাংবাদিক বলে পরিচয় দেন বশেমুরবিপ্রবিতে।৫৫ একরের এই ছোট ক্যাম্পাসে এতগুলো সাংবাদিক সংগঠনের প্রয়োজন আছে কিনা- এই প্রশ্নের বিষয়ে এখন কিছু বলা যেতে পারে।

দুর্বৃত্তায়ন ও নিজেদের দুর্বলতা আড়াল করার জন্য যদি কেউ সাংবাদিকতা এবং সংগঠন করে থাকেন তাহলে সেটি বাদ দেয়া উচিত। সত্য প্রকাশ করে কোন সাংবাদিক বিপদে পড়লে তার পাশে সকলে দাঁড়াতে না পারলে সংগঠনের কোন প্রয়োজন নেই। নিজেদের মধ্যে কাদা ছোড়ার জন্য এসব সংগঠনের দরকার নেই।

সাংবাদিকতার চর্চা না করে শুধু সংগঠনের সংখ্যা বাড়ানো একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আশঙ্কার বিষয়। আর প্রকৃতপক্ষে সাংবাদিকতা করার ইচ্ছা থাকলে সংগঠনের সংখ্যা না বাড়িয়ে এমনকি সংগঠন না করেও সাংবাদিকতার চর্চা করা যায়। একজন সাংবাদিক যদি সত্যের পথে থাকে তাহলে তাকে আটকে রাখার সাধ্য কারো নেই এবং দিনশেষে সকলেই তার পাশে এসে দাঁড়ায়।

আমাদের উচিত সংগঠনের চর্চা ভুলে গিয়ে সাংবাদিকতার চর্চা করা। সত্যের পথে থাকা, সকলের সাথে সহযোগিতামূলক আচরণ করা। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে যদি একাধিক সংগঠন প্রয়োজন হয় তাহলে সেটি অবশ্যই করা যেতে পারে কিন্তু সকলে এক হয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা অন্যরকম।

ভিন্ন নামে নয় ‘আমি সত্যের পথের পথিক, আমি সাংবাদিক’ এই হোক আমার পরিচয়।


লেখক: শিক্ষার্থী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় করোসপন্ডেন্ট, দৈনিক ইত্তেফাক।