সারাদেশ টুডে: একজন অটোরিকশা চালক মো. আবুল কালাম আজাদ । তবে এর পেছনে আছে এক বেদনাদায়ক গল্প। কিছুদিন আগেও তিনি ছিলেন একজন শিক্ষক। শিক্ষকতা করলেও তার প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হয়নি। তাই ৬৫ বছরের জীবনে অভাব এখনও তার পিছু ছাড়েনি। অভাবের তাড়নায় তিনি এখন বাধ্য হয়ে অটোরিকশা চালাচ্ছেন।
কিছুদিন আগেই তিনি অবসর নিয়েছেন। এরপরই তার প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হয়েছে। এখানেও তিনি বঞ্চিত হয়েছেন তিনি ।লকডাউনের এই কঠিন সময়ে টেনেটুনে চলছে তার সংসার।
আবুল কালাম আজাদ জানান, যখন অবসরে যান তখন স্কুল কর্তৃপক্ষ এককালীন দুই লাখ ৮৭ হাজার দিয়েছিল। সেই টাকা খরচ হয়ে গেছে। জমানো আর কিছুই নেই। ১৯৮১ সালে ইংরেজির শিক্ষক হিসেবে জামালপুরের সরিষাবাড়ির জুলিকুড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগ দেন তিনি। ২৯ বছর শিক্ষকতা করার পর ২০১০ অবসর নিয়েছেন।
অবসর নেওয়ার পর পাঁচ ছেলে-মেয়ের পড়ালেখার সুবিধার কথা চিন্তা করে ময়মনসিংহ শহরে চলে আসেন তিনি। বাগমারা এলাকায় ভাড়া বাসায় সপরিবারে উঠেন।
পরিবার চালাতে গৃহশিক্ষকতা করতেন আবুল কালাম আজাদ, আয় হতো প্রায় ১০ হাজার টাকা। ছেলেরাও খরচ চালাতে টিউশনি করতেন। ফলে সংসার চলে যেত। কিন্তু করোনার আঘাতে সবকিছু পরিবর্তন হয়ে গেছে সব। সবার আয়ের উৎস এখন বন্ধ। ঈদের পরে তিন ছেলেসহ তাই চলে আসেন ঢাকায়, কিন্তু ভাগ্য বদলের চেষ্টায় সফল হননি। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে তিনি বাধ্য হন ৬৫ বছর বয়সে অটোরিকশা চালাতে।
আবুল কালাম আজাদ আরও জানান, জমার টাকা দেওয়ার পর দিনে ২০০ টাকার মতো থাকে। তবে বয়সের কারণে প্রতিদিন অটো চালাতে পারেন না। তিনি সন্তানদের পড়াশোনা শেষ করাতে চান। এজন্য সবার কাছে দোয়াপ্রার্থী তিনি।
উল্লেখ্য, তার এক ছেলে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। দুই মেয়ে আনন্দমোহন কলেজ থেকে মাস্টার্স শেষ করেছেন। অপর দুই ছেলে আনন্দমোহন কলেজেরই প্রথম বর্ষের ছাত্র।