আন্তর্জাতিক টুডেঃ
অনুপ্রবেশ এবং ‘প্রথমে হামলা’র অভিযোগ ঘিরে দৃশ্যত ‘অনড় অবস্থানে’ রয়েছে দু’পক্ষই। কিন্তু সেই সঙ্গেই গলওয়ানে সংঘর্ষের পরে সীমান্তে উত্তেজনা কমানোর লক্ষ্যে সক্রিয় নয়াদিল্লি ও বেজিং। চলছে কূটনৈতিক ও সেনা স্তরে আলোচনার মাধ্যমে বোঝাপড়ায় আসার তৎপরতা। বুধবার বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ইর টেলিফোনে কথা হয়েছে। পাশাপাশি, এদিন দুই সেনার ডিভিশনাল কম্যান্ডার (মেজর জেনারেল) স্তরের বৈঠক সাময়িক ভাবে স্থগিত রাখা হলেও শীঘ্রই উচ্চতর পর্যায়ের আলোচনা শুরু হতে পারে বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর।
চিনের সংবাদমাধ্যমকে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, ‘‘এদিন নিরপেক্ষ ভাবেই দুই বিদেশমন্ত্রী পূর্ব-লাদাখের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছেন। আলোচনা এবং ঐকমত্যের ভিত্তিতে সীমান্ত সমস্যা মেটানোর বিষয়ে তাঁরা সম্মত হয়েছেন।’’ রয়টার্সের দাবি, সোমবার রাতের ঘটনার যথাযথ তদন্ত করে সংঘর্ষে প্ররোচনা দেওয়া সেনাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া জন্য জয়শঙ্করকে ওয়াং প্রস্তাব দিয়েছেন। অতীতে বিদেশসচিব থাকাকালীন জয়শঙ্কর বহুবারই এলএসি’তে সঙ্ঘাত এড়াতে চিনের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসেছেন। ২০১৭ সালে অজিত ডোভালের ‘শক্তি প্রদর্শন’-এর নীতির জেরে ডোকলামে জটিলতা তৈরি হয়। পরে জয়শঙ্করের দৌত্যেই সমাধান সূত্র মিলেছিল।
শুধুমাত্র শক্তি প্রদর্শনের নীতি নিয়ে পূর্ব লাদাখের সমস্যার সমাধান যে সম্ভব নয়, মঙ্গলবারই তা স্পষ্ট করেছিলেন ভারতীয় সেনার অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল ডি এস হুডা। দীর্ঘদিন নর্দার্ন কমান্ডের (লাদাখের দায়িত্বপ্রাপ্ত ১৪ নম্বর কোর এই কমান্ডেরই নিয়ন্ত্রণাধীন) জিওসি’র দায়িত্ব পালন করা পোড় খাওয়া সেনা অফিসার বলেছিলেন, ‘‘পরিস্থিতি গুরুতর। অবিলম্বে দু’পক্ষের আলোচনার পথে হাঁটা উচিত।’’ এদিন চিনে নিযুক্ত প্রাক্তন ভারতীয় রাষ্ট্রদূত গৌতম বাম্বাওয়ালে বলেন, ‘‘গত ৩০-৪০ বছরের মধ্যে এমন গুরুতর পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। দু’পক্ষের সেনার প্রাণহানি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে দুই বাহিনী উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে মুখোমুখি মোতায়েন ছিল বলে এমনটা ঘটতে পারে। আমার মনে হয়ে ভবিষ্যতে চিনের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যার ক্ষেত্রে এমন দীর্ঘমেয়াদী নীতি বদলের প্রয়োজন রয়েছে।’’