জীবিত স্বামীকে মৃত সাজিয়ে ভাতার টাকা নিলেন স্ত্রী

সারাদেশ টুডেঃ জীবিত স্বামীকে মৃত বানিয়ে তিন বছর যাবৎ বিধবা ভাতা উত্তোলনের করেছেন মায়া রানী। এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায়।

উপজেলার ১০নং সয়দাবাদ ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের পোড়াবাড়ী সুতারপাড়া গ্রামের মায়া রানী নামের এক গৃহবধূর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠে। তার বিধবা ভাতার কার্ড নং-১৪।

ঘটনাটি ঘটেছে ২০১৭ সালে ইউপি চেয়ারম্যান নবীদুল ইসলাম ও মহিলা ইউপি সদস্য সীমা বেগম টাকার বিনিময়ে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন বলে অভিযোগ মায়া রানীর।

সমাজসেবা কার্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী , বিধবা ভাতা পাবেন বিধবা বা স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়া নারীরা। ইউনিয়ন পর্যায়ে বিধবা ভাতার সুবিধাভোগীদের তালিকা প্রণয়নে কমিটি রয়েছে। সেই তালিকা উপজেলা কমিটিতে পাঠানো হয়। উপজেলা কমিটিতে তালিকা অনুমোদনের পর ভাতা দেয়া হয়। কিন্তু স্বামী জীবিত থাকতে মায়া রানী তিন মাস পরপর ১৫০০ টাকা হিসেবে বিধবা ভাতা পাচ্ছেন। মায়া রানী পোড়াবাড়ী সুতারপাড়া গ্রামের সুজিত সুত্রধরের স্ত্রী। উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে বিধবা ভাতা প্রদান তালিকাতে লেখা মায়া রানী, স্বামী মৃত সুজিত সুত্রধর।

ভাতা গ্রহিতা মায়া রানী দ্বায় স্বীকার করে বলেন, সয়দাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য সীমা বেগম ৪ হাজার টাকার বিনিময়ে একটি বিধবা ভাতা তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করেন। প্রায় ৩ বছরে বিধবা ভাতা কার্ডের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে তিন বছরে ১০ বার ১৫০০ টাকা করে উত্তোলন করেছি। কয়েক দিন আগে ইউপি চেয়ারম্যান নবীদুল ইসলাম সেই ভাতা কার্ডটি জোড়পূর্বক ছিনিয়ে নিয়ে যায় বলে তিনি জানান।

টাকা নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে সয়দাবাদ ইউপি সদস্য সীমা বেগমা বলেন, তাকে আমি ভাতা কার্ড দেইনি, টাকাও নেইনি। তবে ভাতার বিষয়টি সম্পূর্ণ দেখভাল করেন চেয়ারম্যান। তিনি ভালো বলতে পারবেন ভাতার কার্ডের বিষয়ে।

সয়দাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নবীদুল ইসলামকে বার বার ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেনি। এ জন্য তার বক্তব্য নেয়া যায়নি।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. সোহেল রানা জানান, মায়া রানী ২০১৭ সালে তালিকাভুক্ত হয়েছেন। তবে অভিযোগটি তদন্ত করে দেখা হবে। তদন্তে অভিযোগ সঠিক প্রমাণিত হলে তাকে ভাতা প্রদান বন্ধ করা হবে।

সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরকার অসীম কুমার জানান, বিষয়টি আমি জানি না। আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম। তবে অভিযোগটি তদন্ত করে দেখা হবে। তদন্তে অভিযোগ সঠিক প্রমাণিত হলে তাকে ভাতা প্রদান বন্ধ করা হবে এবং তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন , বিষয়টি আমিও অবগত হয়েছি। তবে এ ধরনের যদি কোনো ঘটনা ঘটে, তাহলে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Scroll to Top