বইয়ের সঠিক মূল্য লিখুন

মো. সোহেল রানা: বই মানুষের জ্ঞান বৃদ্ধি করে। সমাজ আলোকিত করে ৷ সুনাগরিক গঠনেও বইয়ের অন্যতম ভূমিকা রয়েছে। এক কথায় জ্ঞান, সমৃদ্ধি ও উন্নতির অন্যতম প্রধান হাতিয়ার হলো বই

সুতরাং বই সকলের জন্য সহজলভ্য হওয়া প্রয়োজন এবং সকলের নিকট বই পৌঁছে দেওয়া কর্তব্য। নাগরিকের নিকট বই প্রাপ্তিতে বাধা মানে ভবিষ্যৎ বুদ্ধিজীবী ও সুনাগরিক গঠনে বাধা সৃষ্টি করা। সকল ধরনের বই যেমন, গবেষণামূলক বই, একাডেমিক বই, গল্পের বই, উপন্যাস, নাটক, জীবনীগ্রন্থ এবং অন্যান্য সকল বইয়ের প্রকৃত মূল্য থেকে দৃশ্যমান মূল্য অনেক বেশি। দৃশ্যমান মূল্য বেশি হওয়ার কারণে অনেকে বই ক্রয়ে নিরুৎসাহিত হয়৷

মনে করে যে, বই এর মূল্য অনেক বেশি! তাই বই ক্রয়ে আগ্রহ অনেক সময় কমে যায়। শহরের তুলনায় গ্রামের মানুষ স্বল্প শিক্ষিত বা বর্ণজ্ঞানহীন। তাঁরা কম বোঝেন। কিন্তু তাঁদের কম বোঝার ফলে ফাইদা হয় দোকানদারদের৷ যেমন, একটি বইয়ের মূল্য বইতে দেওয়া আছে চারশত বিশ টাকা কিন্তু দুইশত ত্রিশ টাকা হলো বিক্রয় মূল্য। তাহলে বইটির মূল্য চারশত বিশ টাকা দেওয়ার কোনো মানে হয় না! এক্ষেত্রে সাধারণ জনগণের ধোঁকা দেওয়ার সুযোগ পায় দোকানদার।

যদি চারশত বিশ টাকা মূল্যের বই দু’শ ত্রিশ টাকায় বিক্রি হয় তাহলে চারশত বিশ টাকা লেখা মানে দোকানদারদের সুযোগ করে দেওয়া ছাড়া কিছুই নয়! কারণ এক্ষেত্রে গ্রামের সহজ সরল মানুষের থেকে দৃশ্যমান মূল্য দেখিয়ে সেই মূল্য থেকে কিছু টাকা কমে বা সেই মূল্যে বই বিক্রি করে দিতে পারেন। এভাবে সাধারণ মানুষ ধোঁকা খায়। এর অনেক নজির রয়েছে।

লেখক মনে করতে পারেন যে, তাঁর বইয়ের মূল্য বেশি লিখলে হয়তো মানুষের কাছে মানসম্মত বই বলে বিবেচিত হবে বা তাঁর বইয়ের মানদণ্ড বৃদ্ধি পাবে। ভাল লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ হবে কিন্তু ভাল লেখক বা বইয়ের মূল্য নির্ভর করে লেখনীর মাধ্যমে, বিশ্লেষণ বা পাঠকের ভাল লাগার মাধ্যমে; উল্লেখ্য মূল্যের উপর নয়!

সব কিছুর একটি বিধিমালা বা আইনি প্রক্রিয়া থাকা প্রয়োজন। যেমন, কপিরাইট আইন জোরদার করা, বইয়ের সঠিক মূল্য লেখা ও অসামাজিক বই নিষিদ্ধ করা। এইগুলো বাস্তবায়ন করলে লেখা মানসম্মত হবে এবং পাঠকের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাবে! সেই সাথে নূতন কবি সাহিত্যিকও তৈরি হতে সহায়তা করবে এবং উৎসাহিত হবে। তাই লেখক ও প্রকাশকদের আহ্বান করছি এই বিষয়গুলো লক্ষ্য রেখে বই প্রকাশ করার জন্য!

লেখক- শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া

Scroll to Top