হাবিপ্রবির এমন দৃশ্য আগে কেউ দেখেনি!

তানভির আহমেদ, হাবিপ্রবি প্রতিনিধি


ক্লাস, শিট, নোট, বই, ল্যাব, এসাইনমেন্ট, প্র‍্যাকটিক্যাল, জিমনেসিয়াম, খেলার মাঠ, টিউশন। এসব একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর প্রতিদিন শোনা শব্দগুলোর মধ্যে অন্যতম।

যে মানুষটি সকাল নয়টায় ছুটতো ক্লাস করতে সে আজ ঘরে আবদ্ধ। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলেও বাসের জন্য হুড়োহুড়ি করতে দেখা যায়না কোন শিক্ষার্থীকে। শেখ রাসেল কিংবা তাজউদ্দীন হল মাঠে ক্রিকেট বা ফুটবল নিয়ে দাপিয়ে বেড়ানো তরুণদেরও কেউ নেই অনুশীলনে। খা খা করছে পুরো মাঠ। গিটারের সুরে যারা মাতিয়ে রাখতো শহীদ মিনার কিংবা লাইব্রেরি চত্ত্বর, তাদের আজ দেখা নেই চিরচেনা এই ক্যাম্পাসে।

টিএসসির শোরগোল ছাপিয়ে শাকিল ভাইয়ের পুরি-চটপটি কিংবা উদয়-বাধনের চায়ের দোকান সব আজ রিক্ত, ধূসর। ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের কাছে প্যাকেজ খাবার খ্যাত সাদিক বা বিকেলের নাস্তায় মুসলিম-তাজ সবই আজ তালাবদ্ধ।

এটি কোন সাধারণ ঈদ বা পূজার ছুটি নয়, নয় কোন ঋতুর ছুটি। এটি চীনের উহান প্রদেশ থেকে বিশ্বের ১৯৯টি দেশে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় বাধ্যতামূলক সাধারণ ছুটি। যার মেয়াদ ক্রমশ বেড়েই চলেছে।

অন্যান্য ক্যাম্পাসের তুলনায় ফলদ বৃক্ষের আধিক্য রয়েছে এই ক্যাম্পাসে। যা শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ সকলের মৌসুমি ফলের চাহিদা মেটায় অনেকাংশে। ১৫টির অধিক আমের জাত নিয়ে ক্যাম্পাসে থাকা দুই শতাধিক আম গাছ, বিশাল লিচু বাগান, আমলকী, কামরাঙা, জাম, কাঁঠালগাছ এর মধ্যে অন্যতম। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর মধুমাসের আগমনী বার্তা নিয়ে প্রচুর মুকুল গাছে ধরেছে। তুলনামূলকভাবে বেশি ফলন আশা করায় যায়। কিন্তু কতবড় হলো সেই আম! নাকি ঝড়ে পড়ছে লিচুর মুকুল? আজ তা বুঝবার উপায় নেই।

আজ রিমা-চত্ত্বর কিংবা ডিভিএম ভবনের পাশে কেউ প্রিয়তমার অপেক্ষা করে থাকেনা, কারণ সে আজ স্বেচ্ছায় গৃহবন্দী। অজানা কালের পর আবার দেখা মিলতে পারে প্রেমিক যুগলের।

প্রাণের প্রিয় এই ক্যাম্পাস থেকে, অসময়ে এবারই প্রথম এতোটা সময় দূরে থাকতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। মন না মানলেও থাকতে হচ্ছে ক্যাম্পাস ছেড়ে। কিছুই যে করবার নেই আমাদের, সৃষ্টিকর্তা সহায় হোন।পরিশেষে কবি গুরুর ভাষায় বলতে হয়- “যেথাই থাকি যে যেখানে বাধন আছে প্রাণে প্রাণে”।

জগত থেকে অচিরেই কেটে যাক করোনার কালো মেঘ, মুক্তি পাক ধরা মুক্তি পাক হাবিপ্রবি। চিরচেনা এই রঙিন সবুজ ক্যাম্পাস আবার কলকলিয়ে উঠুক শিক্ষার্থীদের কলতানে।

Scroll to Top