হাবিপ্রবি: অনলাইনে ক্লাস-পরীক্ষার দাবিতে মানববন্ধন

হাবিপ্রবি: অনলাইনে ক্লাস-পরীক্ষার দাবিতে মানববন্ধন

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক


অনলাইন ক্লাসের দাবিতে মানববন্ধন করেছে দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা।

সোমবার ( ৭ সেপ্টেম্বর ) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে হাবিপ্রবির ফিশারিজ অনুষদের ১৮ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা অনলাইন ক্লাস ও পরীক্ষা শুরুর দাবিতে মানববন্ধন করে।

করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘ প্রায় সাড়ে ৫ মাস থেকে অলস সময় অতিবাহিত করছে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এর ব্যতিক্রম নন দিনাজপুরে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের( হাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোদমে অনলাইন ক্লাস হলেও হাবিপ্রবিতে তেমনভাবে অনলাইন ক্লাস শুরু হয় নি।

শিক্ষার্থীরা একদিকে যেমন রয়েছে হতাশায়, অন্যদিকে সেশনজটের মতো অভিশাপের মুখে পড়েছে হাজারো শিক্ষার্থী। এরই ধারাবাহিকতায় অনলাইন ক্লাস ও পরীক্ষার জন্য মানববন্ধন করা হয়।

মানববন্ধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী মোঃ তারেক বলেন, ” কয়েকমাস আগে থেকেই দেশের সকল কার্যক্রম স্বাভাবিক নিয়মে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে, শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাদে। আর এতে করে আমাদের সেশনজট দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে। ফিসারিজ ১৮ ব্যাচের লেভেল ২ সেমিস্টার ২ এর ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিলো মার্চ মাসের শেষদিকে।

কিন্তু করোনার সাধারণ ছুটি শুরু হওয়াতে সব ভেস্তে যায়। করোনার সাধারণ ছুটি শুরু হওয়ার পূর্বেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আন্দোলন ও অন্যান্য কারণে প্রায় ৪ মাসের জট ছিলো ।বর্তমানে সে জট প্রায় ১ বছরের মতো হতে চলেছে।

এতে করে নিম্নবিত্ত কিংবা নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীরা অনিশ্চিয়তায় দিন পার করতেছে। ইউজিসি থেকে গত জুলাই মাসে অনলাইন ক্লাস শুরু করার কথা বলা হলেও হাবিপ্রবি প্রশাসন সে বিষয়ে উদ্যোগ নেয় ২০ আগস্টে।

কিন্তু দুঃখের বিষয় হাবিপ্রবি প্রশাসন শুধুমাত্র অসমাপ্ত সেমিস্টারের ক্লাসের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু যাদের ফাইনাল পরীক্ষা আটকে গেছে তাদের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। তাই একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসাবে বলতে চাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমাদের ফাইনাল পরীক্ষা গ্রহণ করুক। কিংবা পরবর্তী সেমিস্টারের অনলাইন ক্লাস শুরু করুক “।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফিসারিজ অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. এ.কে.এম রুহুল আমিন বলেন, ” গত মাসের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় যে সিদ্ধান্ত হয়েছে সেখানে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেয়া আছে অসমাপ্ত সেমিস্টারের ক্লাসগুলো সমাপ্ত করার ব্যাপারে।

কিন্তু যাদের পরীক্ষা আটকে আছে তাদের বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি। এটি শুধু একটি লেভেলের কিংবা একটি বিভাগের কিংবা একটি অনুষদের জন্য নয় বরং সকল অনুষদের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রযোজ্য।আমরা তো একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তকে অমান্য করতে পারিনা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরবর্তি কোনো সিদ্ধান্ত নিলে আমরা তখন সেভাবে একাডেমিক কার্যক্রাম পরিচালনা করবো।”

এ দিকে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধনের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মোঃ ফজলুল হক ( বীর মুক্তিযোদ্বা) বলেন, ” বর্তমান প্রেক্ষাপটে এমন মানববন্ধন অনাকাঙ্ক্ষিত। বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিলে যদি কোনো শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয় তখন সে দায়ভার কে নিবে ?

আমার অনুষদে কিছু শিক্ষার্থীর ভাইভা অনলাইনে নেয়া শুরু হয়েছে। সেখানেও আমরা নানা প্রতিবন্ধকতা লক্ষ্য করছি। অনেক শিক্ষার্থী ভাইভাতে অনুপস্থিত, আবার অনেকের ছবি দেখা যাচ্ছে না ঠিক মতো, অনেকের আবার নেট পাচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে ক্লাস করা আর অনলাইনে ক্লাস করার মাঝে অনেক পার্থক্য রয়েছে। তবে আমরা লক্ষ্য করছি ফাইনাল ইয়ারের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা নেওয়ার কথা চিন্তা করছে। এ বিষয়টি নিয়ে আমরাও চিন্তা করছি। সরকারের সিদ্ধান্তের উপর বিষয়গুলো নির্ভর করছে।

আবার অনেক শিক্ষার্থী অভিযোগ করছে যে, ফাইনাল পরীক্ষা আটকায় গেছে বিধায় পরবর্তী সেমিস্টারের ক্লাস শুরু হচ্ছে না? এ বিষয়ে প্রশাসনের বক্তব্য যদি কোনো শিক্ষার্থী আগের সেমিস্টারে অকৃতকার্য হয় তখন পরবর্তী সেমিস্টারে ক্লাস করা তার জন্য অযথা। এ ছাড়া নিয়মের বাহিরে গিয়ে তো কোনো কিছু করা সম্ভব না। তবে আশা করছি খুব দ্রুতই সব কিছুর সমাধান হয়ে যাবে ।”

প্রসঙ্গত , হাবিপ্রবিতে বিভিন্ন বিভাগের বিভিন্ন লেভেলের শিক্ষার্থীদের ফাইনাল পরীক্ষা আটকে যাওয়ার কারণে নতুন সেমিস্টারের অনলাইন ক্লাস শুরু হচ্ছে না। আর এতে করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *