অনলাইন ক্লাস রেকর্ডিং এখন সময়ের দাবি

অনলাইন ক্লাস রেকর্ডিং এখন সময়ের দাবি

বশেফমুবিপ্রবি প্রতিনিধি


বাংলাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মহামারি করোনার কারণে গত মার্চের মাঝামাঝি সময় থেকে বন্ধ ঘোষণা করে দিয়েছে সরকার।

যার ফলে নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। পড়াশুনা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় সহ সকল ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের কিছুটা ক্ষতি হলেও তা কমিয়ে আনতে ইতোমধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) পরামর্শক্রমে কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম।

আর এরই ধারাবাহিকতায় জামালপুরের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেফমুবিপ্রবি) শুরু হয়েছে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম। নতুন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ টি বিভাগেই চলছে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম।

সব মিলিয়ে অনলাইন ক্লাসে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। অনলাইন ক্লাস গুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি গড়ে ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ। বাকী ২০ থেকে ২৫ শতাংশ শিক্ষার্থীরা নানাবিধ সমস্যার কারণে উপস্থিত থাকতে পারছে না অনলাইন ক্লাস গুলোতে।

শিক্ষার্থীদের দাবি, অনলাইন ক্লাস গুলো যদি রেকর্ড করে এবং পরবর্তীতে তা যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট ভিত্তিক গ্রুপ গুলোতে পোষ্ট করা হয় তাহলে শিক্ষার্থীরা পরবর্তীতে তাদের ক্লাসগুলো পুনরায় দেখতে পারবেন। ক্লাস গুলো রেকর্ড করে গ্রুপে পোষ্ট করার বিষয়ে (বশেফমুবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা “দ্যা ক্যাম্পাস টুডে” কে তারা তাদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন ।

ইনতিসার আহমেদ সানি সমাজকর্ম বিভাগ,২য় বর্ষের শিক্ষার্থী

“আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেফমুবিপ্রবি) বর্তমানে প্রত্যেকটি বিভাগে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চলছে এবং অন্য সব বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে আমরা অনেকটাই এগিয়ে রয়েছি।আমরা অনেক ভাগ্যবান কারণ, আমাদের সর্বকালের সর্ব শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব এই নামে বিশ্ববিদ্যালয়টি করা হয়েছে।

মাননীয় ভিসি স্যারের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়টি খুব দ্রুততার সাথে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।আমাদের ক্লাসে উপস্থিতি শতকতা ৭০% এর বেশি হলেও কিছু শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসে উপস্থিত থাকতে পারছে না।

তাই আমাদের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আবেদন থাকবে-অনলাইন ক্লাস গুলো যাতে রেকর্ড করে অথবা ভিডিও রেকর্ডিং করে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল পেজ অথবা ফেসবুকে গ্রুপ অথবা সোসাল মিডিয়ার পেজ অথবা গ্রুপে ছেড়ে দেওয়া হয় তাহলে আমরা মনে করি পরবর্তীতে সবাই এর সুবিধা টি নিতে পারবে এবং পরে ক্লাস গুলো করে নিতে পারবে।

এতে করে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর ফাইনাল পরীক্ষ অনুষ্ঠিত হলে আমরা সকলেই ভালো পরীক্ষা দিতে পারব বলে আশা করছি এবং সেই ক্লাস গুলো যেন শুধু বঙ্গমাতা বিশ্ববিদ্যালয় নয়,বাংলাদেশ সহ বিশ্বের সকল দেশের শিক্ষার্থী যেন সেই ক্লাস গুলো থেকে শিক্ষা নিতে পারে। তাহলেই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একটি বিশ্ববিদ্যালয় হবে এবং মাননীয় ভিসি স্যার প্রফেসর সৈয়দ সামসুদ্দিন আহমেদ স্যারের স্বপ্নের গবেষণা ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয় হবে।”

শাহরিয়ার সৌরভ

মৎস্য বিজ্ঞান বিভাগ
২য় বর্ষ, বশেফমুবিপ্রবি

“করোনা মহামারীতে অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মত (বশেপমুবিপ্রবির) শিক্ষার্থীরাও প্রথমদিকে শিক্ষা ঝুঁকিতে পড়েছিল। কিন্তু মাননীয় ভিসি স্যারের সঠিক দিকনির্দেশনা এবং শ্রদ্ধেয় শিক্ষকগণের আগ্রহ ও পরিশ্রমের সুবাদে একেবারে প্রথম দিকেই এই প্রতিষ্ঠান অনলাইনে শিক্ষাদান শুরু করে।ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের জন্য ডিজিটাল ডিভাইস এর ব্যবস্হা করা হচ্ছে।

অনলাইন ক্লাসে শিক্ষার্থীদের রেগুলার ৭০-৭৫% উপস্হিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।অনেকে নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে রেগুলার ক্লাসে উপস্থিত হতে পারছে না।

আবার অনেক সময় ক্লাসে উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও নেটওয়ার্ক সমস্যার জন্য ক্লাসের টপিক সঠিকভাবে বুঝতে সমস্যা হচ্ছে।এমতাবস্থায় অনলাইন ক্লাসগুলো যদি রেকর্ডিং করে ছাত্রছাত্রীদের দেয়ার ব্যবস্থা করা হয় তাহলে আমরা পরবর্তী সময়ে ভাল নেটওয়ার্কের সহায়তায় পুনরায় ক্লাসটি নিজেরা করে নিতে পারব এবং অনলাইন ক্লাস আমাদের জন্য অধিক ফলপ্রসূ হবে।এই ব্যবস্থা করা হলে করোনাকালীন সময়ে শ্রদ্ধেয় শিক্ষকদের পরিশ্রম সার্থক হবে।”

আসলিমা আক্তার তয়
সমাজ কর্ম বিভাগ
১ম বর্ষের শিক্ষার্থী
বশেফমুবিপ্রবি

“বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৭ সালে অনুমোদিত ৪০তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ৬টি ডিপার্টমেন্টের প্রায় অর্ধ সহস্র ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে।

অনাকাঙ্খিত করোনা মহামারির ভয়াল থাবায় পুরো পৃথিবীর গতি শিথিল হলেও থেমে নেই শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন।এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই বশেফমুবিপ্রবি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এবং মাননীয় ভিসি স্যার এর নিবিড় তত্ত্বাবধানে এগিয়ে চলছে আমাদের অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম।ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের জন্য ডিজিটাল ডিভাইস এর ব্যবস্হা করা হয়েছে।

অনলাইন ক্লাসে শিক্ষার্থীদের প্রশংসনীয় উপস্হিতি থাকলেও নেটওয়ার্ক সিস্টেমের সমস্যার কারণে অনেক সময় সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় অথবা সঠিক সংযোগ পায় না।

আরও পড়ুন

ডুয়েট: নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশে শিক্ষক সমিতির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ

দুই সেমিস্টার এক করে বছরে একটি পরীক্ষা নেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে: ঢাবি উপ-উপাচার্য

যেহেতু নেটওয়ার্ক সিস্টেম সমস্যার সমাধান একটি সময়সাপেক্ষ বিষয়,তাই অনলাইন ক্লাসগুলো যদি অডিও অথবা ভিডিও রেকর্ডিং করে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল পেজ অথবা ফেসবুকে গ্রুপ অথবা সোশ্যাল মিডিয়ার পেজ অথবা গ্রুপে দেয়া হয় তাহলে শিক্ষার্থীরা অধিক উপকৃত হবে এবং করোনাকালীন সময়েও আমাদের জন্য স্যারদের যে নিরলস পরিশ্রম ও প্রচেষ্টা তা সার্থক হবে।”

শিক্ষার্থীদের দাবি , বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেন অনলাইন ক্লাস গুলো রেকর্ডিং এবং পোষ্ট করার বিষয়টি তাঁদের দৃষ্টিতে নেন এবং শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে পরবর্তীতে ক্লাস গুলো পুনরায় ভিডিও রেকর্ডিং এর মাধ্যমে দেখার সুযোগ তৈরি করে দেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *