অনলাইন পরীক্ষা নিয়ে কুবি শিক্ষার্থীদের ভাবনা
কুবি টুডে
করোনা মহামারীর কারণে দেশের সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইন ক্লাসের পর এবার হাঁটছে অনলাইন পরীক্ষার পথে। দুর্বল নেটওয়ার্ক, অধিকমূল্যের ডাটাপ্যাকসহ নানা প্রতিবন্ধকতায় অনলাইন ক্লাস চললেও পরীক্ষা নেয়া আদৌ সম্ভব কি না তা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংশয় দেখা দিয়েছে।
কেউ কেউ সেশনজট কমানোর জন্য অনলাইনে পরীক্ষা দিতে রাজী থাকলেও বিভিন্ন সীমাবদ্ধতায় অধিকাংশের মত অনলাইনে পরীক্ষার বিপক্ষে। অনলাইন পরীক্ষার নিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের মতামত তুলে ধরছেন ”দ্যা ক্যাম্পাস টুডে ” এর কুবি প্রতিনিধি চৌধুরী মাসাবী।
ছবি:অর্ক
অর্ক গোস্বামী
নৃ – বিজ্ঞান বিভাগ,
শিক্ষাবর্ষঃ ২০১৫-১৬
বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে হয়তো এ ধরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যেখানে বলা হচ্ছে অনলাইনে সকল চূড়ান্ত পরীক্ষা গ্রহণের। আপাতঃদৃষ্টিতে এর চেয়ে বিকল্প কোনো রাস্তাও হয়তো আমাদের সামনে খোলা নেই। তবে এমন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে কতটুকু যুক্তিসম্মত সেই বিষয়ে একটা প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
আমরা আধুনিকতার ছোঁয়া পেলেও সেই সক্ষমতা এখনোও অর্জন করতে পারিনি, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের সকল চূড়ান্ত পরীক্ষা অনলাইন মাধ্যমে নেওয়া সম্ভব। আর অচিরেই এই সক্ষমতা অর্জন হবে বলেও মনে হচ্ছেনা।
যদি যান্ত্রিক কোনো গোলযোগের কারণে একজন শিক্ষার্থীও পরীক্ষা না দিতে পারেন, তাহলে সেই দায় কে নিবে! আর বাংলাদেশে বর্তমানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বা মেনে চলার নাম করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া সবকিছুই চলমান। তাহলে শিক্ষার্থীরা কেনো স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্ব স্ব ক্যাম্পাসে পরীক্ষা দিতে পারবেনা। আমি চাই, স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্যাম্পাসগুলোতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হোক।
ছবি: তারিকুল
মোঃ তারিকুল ইসলাম
আইন বিভাগ
সেশনঃ ২০১৬-১৭
বিশ্ববিদ্যালয় এক্সাম কোনো গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নয় যে অধিকাংশ শিক্ষার্থী পক্ষে মতামত দিলেই অনলাইন এক্সাম নেওয়াটা ঠিক হবে। অনলাইন এক্সামের জন্য যদি একজন শিক্ষার্থীও ক্ষতিগ্রস্থ হয় তাহলে সেটা হবে চরম অন্যায় এবং অবিচার।
ধরুন, একজন শিক্ষার্থী রুরাল এরিয়াতে অবস্থান করছে তাহলে সে পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করতে সমস্যা হতে পারে, এতে করে মেধাবী হওয়া সত্যেও তার রেজাল্ট পিছিয়ে যাবে। এছাড়া সচ্ছতার বিষয়েও একটা প্রশ্ন থেকেই যায়। যেহেতু করোনা মহামারীতে আক্রান্তের হার কিংবা ডেথ কেইস নিম্নমুখী, তাই ঈদের পর যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে অফলাইনে এক্সাম নেওয়া হোক।
ছবি: সিগমা
ফারিয়া জাহান সিগমা
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিক বিভাগ
শিক্ষাবর্ষঃ ২০১৬-১৭
অনলাইন পরীক্ষার বিপক্ষে আমি। কারণ দেখা যাচ্ছে সব জায়গায় নেটওয়ার্ক ঠিকভাবে থাকে না। তাছাড়া ক্লাস সব ঠিক ভাবে করতে পারিনি আমরা। অনলাইনে এক্সাম হলে নেটের সমস্যা হতে পারে। তাই আমি স্বশরীরে উপস্থিত থেকে এক্সাম দেয়ার পক্ষে।
ছবিঃ ইয়াসমিন
ইয়াসমিন আক্তার
গনিত বিভাগ
শিক্ষাবর্ষঃ ২০১৮-১৯
জীবনের ভয়ংকর এক চ্যাপ্টারের নাম করোনা। নীরবে আঘাত করে নিস্তব্ধ করে দিয়েছে বিশ্বকে। প্রভাব পড়েছে জনজীবনে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ছাত্রছাত্রীরা। থমকে যাওয়ার চেয়ে ধীরগতিতে এগিয়ে যাওয়াও ভালো।
সরকার নানা উদ্যোগ এর মাধ্যমে শিক্ষাব্যবস্থা চালিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে অনলাইনে নানা প্রতিবন্ধকতার মাঝেই। মূল্যায়নের ব্যাপারটিও অনলাইনেই চালিয়ে নিতে চাচ্ছে।
সবকিছু স্বাভাবিক হওয়ার আগ পর্যন্ত আমাদের এই অনলাইন কার্যক্রমের মধ্য দিয়েই এগিয়ে যাওয়া উচিত। করোনা যে খুব দ্রুত চলে যাবে তা মোটামুটি নিশ্চিত। তার ভবিষ্যৎ কেমন সেটা ও আমরা কেউ জানিনা।করোনার লাগাম টানার অপেক্ষা করলে আমাদের কঠিন বাস্তবতার শিকার হতে হবে। তাই স্বাভাবিক হওয়ার আগ পর্যন্ত অনলাইনেই চালু হোক শিক্ষা কার্যক্রম