আজ হাবিপ্রবি দিবস

আজ হাবিপ্রবি দিবস

মোঃ রুবাইয়াদ ইসলাম, হাবিপ্রবি


উত্তরাঞ্চলে উচ্চ শিক্ষা কার্যক্রম চালুর উদ্দেশ্যে তৎকালীন এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ এর অধিভুক্ত এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন ইনস্টিটিউট (AETI) যা ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং কৃষিতে ডিপ্লোমা প্রদান করত ।

যা ১১ ই সেপ্টেম্বর ১৯৯৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয় করার জন্য ঘোষণা দেন এবং এর নাম দেয়া হয় দাতা হাতেম তাই হিসেবে খ্যাত হাজী মোহাম্মদ দানেশের নামে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় দিনাজপুর। পরবর্তীতে এই দিনটিই হাবিপ্রবি দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

বিশ্ববিদ্যালয়টি দিনাজপুর শহর হতে ৯ কিলোমিটার উত্তরে এবং ঢাকা-দিনাজপুর মহাসড়কের পশ্চিমে ১৩৫ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত আছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ১১ হাজার শিক্ষার্থী , ৫৫০ জন প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গ, ২৯৩ জন শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গ এবং ৯ জন ডিন রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়টিতে নয়টি অনুষদের অধীন দশটি স্নাতক ডিগ্রী এবং পোস্ট গ্রাজুয়েট অনুষদের অধীনে বত্রিশটি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত একটি কলেজ এবং একটি ইনস্টিটিউট রয়েছে। অবকাঠামোর মধ্যে রয়েছে বৃহৎ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, ৫টি অ্যাকাডেমিক ভবন, একটি প্রশাসনিক ভবন, ৫টি ছাত্র হোস্টেল(একটি বিদেশী শিক্ষার্থীদের), ৩টি ছাত্রী হোস্টেল, আধুনিক সাজসজ্জা বিশিষ্ট ১০০ আসনের একটি ভিআইপি সেমিনার কক্ষ, ৬০০ ও ২৫০ আসন বিশিষ্ট আরও দুটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অডিটরিয়াম।

এছাড়াও একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে পূর্ণাঙ্গ করতে রয়েছে শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ক্লাব,২টি মসজিদ, ১৩৬টি আবাসিক ইউনিট/ভবন,১টি শিশুপার্ক, পোষ্ট অফিস, রূপালী ব্যাংক শাখা, মেঘনা ব্যাংক শাখা, শ্রমিক ব্যারাক, সার্বাক্ষণিক ইন্টারনেট সুবিধা, নিজস্ব বৈদ্যুতিক লাইন,বৃহৎ খেলার মাঠ, ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ এবং ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থা।
গবেষণা ও প্রশিক্ষণের সমন্বয় ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য ইনস্টিটিউট অব রিসার্চ এন্ড ট্রেনিং (আই.আর.টি.)। আছে একটি ভি. আই. পি গেস্ট হাউস, হাবিপ্রবি স্কুল, ডাক্তার ও এ্যাম্বুলেন্সসহ ১২ শয্যার একটি মেডিক্যাল সেন্টারও। গবেষণালব্ধ থিসিস, রিপোর্ট, জার্নালের পাশাপাশি রয়েছে ২৫ হাজার বইয়ের সমৃদ্ধ লাইব্রেরি। দুষ্প্রাপ্য গাছ-গাছালির আকর্ষণীয় সংগ্রহ নিয়ে গড়ে উঠেছে একটি সমৃদ্ধ বোটানিক্যাল গার্ডেন এবং বিভিন্ন বিভাগের তত্ত্বাবধানে গবেষণার জন্য জামপর্স্নাজম সেন্টার।

উত্তরাঞ্চলের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ হাবিপ্রবিতে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন লাল-সাদা ইটের সুবিশাল ভবন। সবুজ গাছপালার সমারোহ আর পাখির কিচিরমিচির শব্দে সবারই মন ভরে যায়। ক্যাম্পাসের ঢোকার আগ মুহূর্তেই মানুষের চোখে ধরা পড়ে যায় হাবিপ্রবির সৌন্দর্য।

হাবিপ্রবিতে এসে ঘুরে গেছে অথচ সৌন্দর্যের প্রেমে পড়েনি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। এখানে শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা বলে খ্যাত টিএসসিতে পড়ালেখা, সাংস্কৃতিক প্রোগ্রাম সহ আড্ডাবাজিতে সারাদিন মুখর হয়ে থাকে। এটি হাবিপ্রবির সৌন্দর্যকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে ক্যান্টিন এবং জিমনেসিয়াম। জিমনেসিয়ামে ছেলেদের এবং মেয়েদের জন্য আলাদা আলাদা সময় নির্ধারণ করে দেওয়ায় তারা দুদলই সমান সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছে।

হাবিপ্রবি দিবস উপলক্ষে শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রাণোচ্ছলতা দেখা দিয়েছে। যদিওবা করোনা ভাইরাসের কারণে তারা ক্যাম্পাসে হাবিপ্রবি দিবস পালন করতে পারছেনা। শিক্ষার্থীরা নিজেদের টাইমলাইনে হাবিপ্রবি দিবসের লোগো সংযুক্ত নিজেদের প্রোফাইল পিক আপলোড দিচ্ছে। আবার অনেক শিক্ষার্থী ফেসবুকে আবেগঘন পোস্ট দিয়ে নিজেদের ভালোবাসা জানান দিচ্ছে। এসবই তাদের প্রিয় ক্যাম্পাসকে নিয়ে ভালোবাসার আবেগ।

প্রিয় ক্যাম্পাস যেন প্রতিটি শিক্ষার্থীর হৃদয়ের মাঝে স্থান করে নিয়েছে। যেখানে রয়েছে শুধুই ভালোবাসা। বিশেষ করে প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী এবং শিক্ষকদের পোস্টে দেখা যায় হাবিপ্রবিকে নিয়ে তাদের আবেগঘন স্বপ্নের কথা। আসলে এগুলো সব এক একটি ভালোবাসার প্রতীক। বিশ্ববিদ্যালয়টি একদিন বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠে পরিণত হবে এই প্রত্যাশা সবার।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *