আমার তো সব শেষ! বেঁচে থেকে কী লাভ?: মায়ের সাথে তিন্নীর শেষ কথা

আমার তো সব শেষ! বেঁচে থেকে কী লাভ?: মায়ের সাথে তিন্নীর শেষ কথা

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক


‘বাইরের লোক কেন আসবে আমার রুমে? আমারতো সব শেষ, বেঁচে থেকে কী লাভ?’ বোনের সাবেক স্বামীর হাতে লাঞ্চিত হওয়ার পর মায়ের সঙ্গে শেষ কথা ছিল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) থেকে সদ্য পাস করা উলফাত আরা তিন্নীর। পরে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় নারী নির্যাতন আইনে মামলা হয়েছে।

সেই রাতে ইবি ছাত্রী তিন্নীর সঙ্গে যা ঘটেছিল তা তার মা হালিমা বেগম এবং মেজো বোন মিন্নীর বর্ণনায় উঠে এসেছে। হালিমা বেগম বলেন, বৃহম্পতিবার তিন্নী এক বান্ধবীর বিয়ের অনুষ্ঠানে কুষ্টিয়া গিয়েছিল। অনুষ্ঠান শেষে বাড়ি ফেরে রাত ৮টার দিকে। এর কিছু সময় পর মেজো মেয়ে মিন্নীর তালাকপ্রাপ্ত স্বামী জামিরুল গোপনে তিন্নীর রুমে ঢোকে এবং খাটের নিচে লুকিয়ে থাকে।

তিনি বলেন, তিন্নী বাইরে থেকে এসে পোশাক বদল করে বাসার নিচ তলায় তার সঙ্গে দেখা করে, একটু বসে। এরপর ঘুমাতে তার রুমে যায়। এরপর তিন্নী বুঝতে পারে তার খাটের নিচে কেউ লুকিয়ে আছে। লোকটি খাটের নিচ থেকে বের হয়ে এক পর্যায়ে তিন্নীকে জাপটে ধরে। শুরু হয় ধস্তাধস্তি, এসময় চিৎকার দেয় তিন্নী। লোকটি ছিল জামিরুল।

ভয় ভয় কণ্ঠে হালিমা বেগম বলেন, আমরা তখন বুঝতে পারি বাসার চারপাশে জামিরুলের অনেক সহযোগী এবং তারা আমাদের বলতে থাকে- কোনও হৈ চৈ করবি না। আজ সবাইকে মেরে ফেলবো।

পরের ঘটনার বর্ণনা দেন তিন্নীর মেজো বোন জানান, বোনের চিৎকারে তিনি ছুটে যান তিন্নীর রুমের সামনে। কিন্তু রুম ছিল ভেতর থেকে আটকানো। অনেক চেষ্টা করে দরজার লক ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখি সেখানে জামিরুল। তখনো তারা ধস্তাধাস্তি করছে। বাধা দিতে গেলে সে আমাকে মারতে আসে। আমি অন্য রুমে গিয়ে আত্মরক্ষা করি।

‘এরপর অনেক সময় চলে তিন্নীর রুমে তাণ্ডব। পরে রুম থেকে বের হয়ে আমাকে ও আমার মাকে খুঁজতে থাকে সে। এক পর্যায়ে প্রতিবেশীদের উপস্থিতি টের পেয়ে রাত ১১টার দিকে জামিরুল পালিয়ে যায়।

হালিমা বেগম বলেন, জামিরুল বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার পর তিন্নী নিচে তার রুমে আসে। আমাকে সে প্রশ্ন করে- ‘‘বাইরের লোক কেন আমার রুমে প্রবেশ করল মা? আমার তো সব শেষ! আমার আর বেঁচে থেকে কী লাভ? এই বলে সে নিজের রুমে চলে যায়। এরপর পর রাত ১২টার দিকে টের পাই তিন্নী রুমে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছে’’।

এদিকে তিন্নীর মৃত্যুর ঘটনার বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষর্থীরা। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় প্রধান ফটকের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় শিক্ষার্থীরা মুখে কালো কাপড় বেধে নেক্কার জনক ঘটনার প্রতিবাদ জানায়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *