ইউএনও ওয়াহিদা খানমের শরীরের ডান অংশ প্যারালাইজড

ইউএনও ওয়াহিদা খানমের শরীরের ডান অংশ প্যারালাইজড

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক


গভীর রাতে দুর্বৃত্তের হামলায় গুরুতর আহত দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের শরীরের ডান অংশ প্যারালাইজড হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালের যুগ্ম পরিচালক অধ্যাপক ডা. বদরুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ইউএনওর আঘাত অত্যন্ত গুরুতর। মাথার খুলির হাড় ভেঙে মস্তিষ্কে ঢুকে গেছে। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে। উনার শরীরের ডান অংশ প্যারালাইজড হয়ে গেছে।’

ওয়াহিদার সর্বশেষ অবস্থার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মাথার ভেতরে বাইরে দুদিকেই রক্তক্ষরণ হয়েছে। যখন তাকে আমরা পাই তখন অবস্থা আরও গুরুতর ছিল। প্রয়োজনীয় স্যালাইন দেওয়া যাচ্ছিল না। তার গলার শিরায় স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। উনার অবস্থা আশঙ্কাজনক। কোনো অবস্থাতেই তাকে আশঙ্কামুক্ত বলার সুযোগ নেই। এ ধরনের রোগীদের ক্ষেত্রে ৭২ ঘণ্টা বা ৯৬ ঘণ্টা না যাওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত করে কিছু বলা যায় না। যেকোনো পরিস্থিতির জন্য সবসময় প্রস্তুত থাকতে হয়।’

‘আমাদের হাসপাতালের যে বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা আছেন তারা তো চিকিৎসায় নিয়োজিত আছেনই। এর বাইরে বাংলাদেশে এক্ষেত্রে যত প্রখ্যাত বিশেষজ্ঞরা আছেন তারা হাসপাতালে তাকে দেখছেন।

বিএসএমএমইউ এর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া, ঢাকা মেডিকেলের অধ্যাপক ডা. রাজিউল হক এখনো হাসপাতালে আছেন। রাত ৯টায় আমরা আবার তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেবো। তখন চিকিৎসকরা সিদ্ধান্ত নেবেন অস্ত্রোপচার হবে কি না। তবে আগে থেকে কিছু বলা যাচ্ছে না।’

গতরাতে একদল দুর্বৃত্ত ওয়াহিদা খানমের সরকারি বাসভবনে ঢ়ুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে। গুরুতর অবস্থায় তাকে রংপুরে একটি ক্লিনিকে আইসিইউতে রাখা হয়। আইএসপিআর জানায়, অবস্থার অবনতি হলে ওয়াহিদাকে আজ জরুরি ভিত্তিতে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি এমআই-১৭১এসএইচ হেলিকপ্টারে ঢাকায় আনা হয়।

এর আগে, ঘোড়াঘাট থানা পুলিশ দ্য ডেইলি স্টারকে বলে, ‘রাত ৩টার দিকে উপজেলা পরিষদ ক্যাম্পাসে ইউএনওর বাসার টয়লেটের ভেল্টিলেটর ভেঙে দুর্বৃত্তরা ঢুকে। ইউএনও তা টের পেলে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়।’

‘সে সময় তার বাবা এগিয়ে আসলে তাকেও আঘাত করে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।’

ভোরেই রক্তাক্ত অবস্থায় ওয়াহিদাকে উদ্ধার করে প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে রংপুর কমিউনিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
খবর পেয়ে সকালে দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক মাহমুদুল আলম ও পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেনসহ পুলিশের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান।

পরিকল্পিত হামলা মন্তব্য করেজেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল আলম বলেন, ‘আমি মনে করি এটি একটি পরিকল্পিত হামলা।’

এদিকে ঘোড়াঘাট ইউএনও ওয়াহিদা খানমের স্বামী রংপুর জেলার পীরগঞ্জ ইউএনও হিসেবে কর্মরত আছেন। ওয়াহিদা খানমের সঙ্গে তার বাবা ওমর আলী থাকতেন।

সৌজন্যে: দ্য ডেইলি স্টার।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *