ইবির শেখ রাসেল হলে চুরি

ইবির শেখ রাসেল হলে চুরি

ইমানুল সোহান, ইবি প্রতিনিধি


ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শেখ রাসেল হলে সাবমারসিবল পাম্প চুরির ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) হলের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা চুরির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। চুরি হয়ে যাওয়া সাবমারসিবল পাম্পটি প্রায় একলক্ষ টাকারও বেশি। তবে চুরির ঘটনাটি কবে নাগাদ ঘটেছে এ ব্যাপারে নির্দিষ্টভাবে জানাতে পারেনি তারা।

হলের পরিচ্ছনতা কর্মী বিষ্ণু কুমার জানান, গতকাল (২২ সেপ্টেম্বর) আনুমানিক এগারোটার দিকে হলের পিয়ন কামরুল হলের দক্ষিণ পাশে যান। এসময় দেখেন ভবনের বাইরে থাকা পাম্পটি নেই। পরে বিষয়টি হলের কর্মকর্তা ও হাউজ টিউটদের জানান তিনি।

বিষ্ণু কুমার আরও জানান, কামরুল লালনশাহ হলের পকেট গেটের দিকে আসার সময় গেটের সামনে একটা নাট পরে থাকতে দেখে। হলের কর্মকর্তাদের নির্দেশে নাটটি নিয়ে এসে মিলিয়ে দেখা যায় নাটটি চুরি হয়ে যাওয়া পাম্পের। তাই প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পামম্পটি লালন শাহ হলের পকেট গেট দিয়েই চুরি হতে পারে। লালন শাহ হলের আশেপাশের সিসি ক্যামেরা চেক করলে হয়তো বিষয়টি স্পষ্ট হওয়া যেতে পারে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক কর্মচারী বলেন, হলের আশেপাশে বেশ কয়েকটি সিসি ক্যামেরা থাকলেও সেগুলো হলের সামনের দিকেই (পশ্চিম পাশে) মুভ করা থাকে। হলের দুই পাশে মুল্যবান জিনিসপত্র থাকলেও ক্যামেরা সেদিকে মুভ করা থাকেনা। চুরির ঘটনাটি সামনে আসলে এখন সিসি ক্যামেরার দিক পরিবর্তন করা হয়েছে। তবে দক্ষিণ পাশে এখনো কোনো সিসি ক্যামেরা বসানো হয়নি।

এদিকে হলে চুরির বিষয়টি দায়িত্বে থাকা আনসারদের ব্যর্থতা বলে দাবি করেন হলের কর্মচারীরা। তারা জানান, প্রতিদিন দুই শিফটে একজন করে আনসার হলের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকেন। করোনাকালীন সময়ে সকাল নয়টা থেকে দুইটা পর্যন্ত হল প্রশাসনের কার্যক্রম চলে। এসময় হলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হলে অবস্থান করেন।

দুপুর দুইটা থেকে প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেলে দুইটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত একজন ও রাত আটটা থেকে সকাল পর্যন্ত দুইজন আনসার হলের নিরাপত্তায় থাকেন। রাতের বেলায় নিরাপত্তায় থাকা আনসারের গাফিলতির কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানান।

চুরির সন্ধান পাওয়ার আগেরদিন রাতে দায়িত্বরত আনসার সদস্য মামুন বলেন, ‘একা সারা রাত ডিউটি করি। রাত দুইটা পর্যন্ত জেগে থাকি। হলের গেস্ট রুমে বসে থাকি সাথে টহল দেই। কারণ ডিউটি অফিসাররা হঠাৎ চলে আসে দেখতে না পেলে রিপোর্ট করে। পাম্পটা নাকি ৫০ ফিট মাটির নিচে। ওখানে যে পাম্প আছে তা এর আগে কেউ আমাকে বলেনি। সেই রাতে চুরি হয়েছে নাকি আরো আগে তা বলাও মুশকিল।’

হলের আবাসিক শিক্ষক লিটন বরুন শিকদার বলেন, ‘পাম্পটি ভবনের বাহিরে হওয়ায় এ ঘটনা ঘটেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মীদের সঠিক দায়িত্ব পালন করলে এ ঘটনাটি ঘটতো না। আমরা হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে রেজিস্ট্রার বরাবর বিষয়টি অবহিত করেছি। পাশাপাশি ইবি থানায় ও অভিযোগ দিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও থানা এর সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্ম্মন বলেন, ‘এটার জন্য থানায় জিডি করা হয়েছে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *