ইবি ক্যাম্পাসে শির উঁচু করে দাঁড়িয়ে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’

ইবি ক্যাম্পাসে শির উঁচু করে দাঁড়িয়ে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’

আজাহার ইসলাম, ইবি


দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুজিব মুর‌্যাল ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’। এই অনন্য স্থাপনাটি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) অবস্থিত। ইবি ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক থেকে সামনে তাকালেই চোঁখে পড়ে শির উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি স্মরণে নির্মিত মুর‌্যালটি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াদ গর্বের সাথে জানান,‘দেশের কোন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর এরকম কোন ম্যূরাল নেই। এরকম একটি মুর‌্যাল আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে এজন্য আমরা গর্বিত।’

এদিকে দেশপ্রেমকে স্মরণ করে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আর কে রাজু বলেন,‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিবের পাশে যখন দাঁড়াই, তখন মুজিবের চেতনায় দেশপ্রেমে আত্মবিআশ্বসী হয়ে উঠি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে এটি একটি অনন্য স্থাপনা।’ এধরনের বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারো শিক্ষার্থী তাদের অভিব্যক্তি জানান।

২০১৮ সালের ৭ জানুয়ারী মুর‌্যালটির উদ্বোধন করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। মুর‌্যালটির পরিকল্পনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের সাবেক ছাত্র জালাল উদ্দীন তুহিনের যৌথ অর্থায়নে এটি স্থাপন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) আলিমুজ্জামান টুটুল নকশা করেন মুর‌্যালটির। শৈল্পিক কারুকার্যের রূপ দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃৎশিল্প ও ভাস্কর্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কনক কুমার পাঠক।

মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব নামে মুর‌্যালটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সৌন্দর্যকে হাজার গুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। যা দর্শনার্থীদের নজড় কাড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক মহাসড়কের পাশে হওয়ায় দেখা যায় যাতায়াতকারীরাও যাওয়ার সময় মুর‌্যালটির সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্যে তাকিয়ে থাকে। অনেক সময় বিভিন্ন পিকনিক স্পটে যাওয়ার সময় মূল ফটকে গাড়ি থামিয়ে মুর‌্যালটির সৌন্দর্য উপভোগ করে পর্যটকরা।

কংক্রিটের তৈরি মুর‌্যালটির মূল স্থাপনার দৈর্ঘ্য সিঁড়িসহ ৫০ ফুট এবং প্রস্থ ৩৮ ফুট। বেদির উচ্চতা ৫ ফুট। বেদির ওপর নির্মিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির দৈর্ঘ্য ২৬ ফুট এবং প্রস্থ ১৭ ফুট। এর ৩টি সিঁড়ি রয়েছে। স্থাপনার তিন দিকে দর্শনার্থীদের চলাফেরার জন্য দুই স্তরের ১৫ ফুট চওড়া জায়গা রয়েছে। মূল বেদির ওপর আড়াই ফুট উচ্চতা এবং ২০ ফুট চওড়া একটি দেয়াল স্থাপন করা হয়েছে, যেটার ওপর যে কেউ শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করতে পারবে। শ্রদ্ধা নিবেদন ছাড়াও মুর‌্যালটি সিঁড়িতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের আড্ডা। দেখা যায় ব্যাচ ডে/র‌্যাগ ডেতে অনেকের ফটোসেশন।

‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’ মুর‌্যালটির ডান পাশে ৪ ফুট চওড়া এবং ২০ ফুট উচ্চতার একটি ওয়াল স্থাপন করা হয়েছে যাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহ্মানের স্বাক্ষর করা একটি ইংরেজী বাণী লিপিবদ্ধ আছে। তার ঠিক নিচেই রয়েছে তার বাংলা অনুবাদ। বাণীতে লেখা আছে- ‘একজন মানুষ হিসেবে সমগ্র মানব জাতি নিয়ে আমি ভাবি। একজন বাঙালি হিসেবে যা কিছু বাঙালিদের সাথে সম্পর্কিত তা আমপাকে গভীরভাবে ভাবায়। এই নিরন্তন সম্পত্তির উৎস ভালোবাসা। অক্ষয় ভালোবাসা, যে ভালোবাসা আমার রাজনীতি এবং অস্তিত্বকে অর্থবহ করে তোলে।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *