ইলন মাস্কের বিশ্ব জয়, কে ইলন মাস্ক, কত টাকার মালিক

ইলন মাস্কের বিশ্ব জয়, কে ইলন মাস্ক, কত টাকার মালিক

আমাজনের মালিক জেফ বেজোসকে পেছনে ফেলে এখন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি টেসলার প্রধান ইলন মাস্ক। বৃহস্পতিবার অনেকটা বেড়েছে টেসলার শেয়ারের দাম। যার জেরে জেফ বেজোসকে টপকে গেলেন ইলন মাস্ক। বর্তমানে মাস্কের মোট ধনসম্পদের মূল্য হলো ১৮৮.৫ বিলিয়ন, বেজোসের চেয়ে দেড় মিলিয়ন বেশি।

গত বছর প্রায় আট গুণ বেড়েছে টেসলার শেয়ারের দাম। ফলে ফুলে ফেঁপে উঠেছে ইলন মাস্ক এর ব্যক্তিগত সম্পদ। টেসলায় ২০ শতাংশ শেয়ার আছে মাস্কের। একই সঙ্গে তার কাছে ৪২ বিলিয়ন ডলারের শেয়ার আছে টেসলার

বর্তমান প্রযুক্তি বিশ্ব কিংবা কর্পোরেট জগত- যেটাই বলেন, ইলন মাস্ক এর মতো প্রতিভাধর ব্যক্তিত্ব খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তিনি শুধু সফল ব্যবসায়ীই নন, বরং হালের তরুণদের আইকনে পরিণত হয়েছেন। অনেকে হয়তো টেসলা ও স্পেসএক্স এর কল্যাণে ইলন মাস্কের নাম জেনে থাকবেন। কিন্তু টেসলা এবং স্পেসএক্স এর বাইরেও তার আরও অসাধারণ কিছু উদ্যোগ রয়েছে।

প্রযুক্তি বিশ্বের এ রাজপুত্র সম্পর্কে আরও কিছু চমকপ্রদ তথ্য জেনে নেওয়া যাক:

১। টেসলা কিংবা স্পেসএক্স এর প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে খ্যাতি পেলেও তিনি যে জনপ্রিয় পেমেন্ট মেথড পেপ্যালের একজন সহ-প্রতিষ্ঠাতা সেটা অনেকেই জানেন না!

২। আমাদের বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠিয়েছে কিন্তু ইলন মাস্কের কোম্পানি স্পেসএক্স।

৩। টনি স্টার্ক সিনেমার আয়রনম্যান হলেও রিয়েল লাইফ এর আয়রনম্যান যে ইলন মাস্ক তাতে কারো সন্দেহ নেই। মজার ব্যাপার হচ্ছে আয়রন ম্যান ২ ছবির শুটিং স্পট হিসেবে তার স্পেসএক্স কোম্পানি ব্যবহৃত হয়। একই সঙ্গে ছবিটিতে তিনি ক্যামিও হিসেবে অল্প সময়ের জন্য পর্দায় আসেন।

৪। বিশ্বের শীর্ষ এ ধনী ব্যক্তিটি নিজের কোম্পানির সিইও হিসেবে বছরে মাত্র এক ডলার করে বেতন নেন! কখনো আবার তাও নেন না! তাহলে তিনি টাকাপয়সা কোথায় পান? অবাক হচ্ছেন? নিজের অংশীদারিত্ব থাকা বিভিন্ন কোম্পানি থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশ সহ আরও কিছু সুবিধা পান ইলন মাস্ক, যার বেশিরভাগই আসে টেসলা থেকে। বছরে ১ ডলার বেতন নেওয়াটা আসলে সিলিকন ভ্যালির একটা ট্রেন্ড, যেখানে কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতারা সরাসরি বেতন না নিয়ে স্টক ও অন্যান খাত থেকে সুযোগসুবিধা নিয়ে থাকেন। স্টিভ জবস ও মার্ক জাকারবার্গেরও এমন রেকর্ড আছে।

৫। মাত্র ১২ বছর বয়সে এলন মাস্ক প্রোগ্রামিং শেখেন এবং সে জ্ঞান কাজে লাগিয়ে তখন একটি ভিডিও গেম তৈরি করেন। মজার ব্যাপার হলো তিনি সেটি ৫০০ ডলারে বিক্রি করতেও সমর্থ হয়েছিলেন।

৬। ১৭ বছর বয়সে মাস্ক তার জন্মস্থান দক্ষিণ আফ্রিকা ছেড়ে কানাডায় চলে আসেন এবং তারপর যুক্তরাষ্ট্রে ইউনিভার্সিটি অব পেনসিল্ভানিয়ায় ভর্তি হন।

৭। বর্তমানে ইলন মাস্ক দক্ষিণ আফ্রিকা, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ধারণ করেন।

৮। গ্রাজুয়েশনের পর স্ট্যানফোর্ড এর মতো নামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যায় মাস্টার্স করার জন্য ভর্তি হয়েও মাত্র দুই দিন পরেই ছেড়ে চলে আসেন উদ্যোক্তা হওয়ার নেশায়।

৯। তার প্রতিষ্ঠিত প্রথম কোম্পানি জিপ২- যেটি ১৯৯৯ সালে তিনি ৩০৭ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি করেন।

১০। ইলন মাস্ক তার নিজের ইলেকট্রিক ভেহিকেল কোম্পানি টেসলাতে একই সঙ্গে সিইও এবং চিফ প্রোডাক্ট আর্কিটেক্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

১১। টেসলার জনপ্রিয় গাড়ি টেসলা মডেল এস আমেরিকান ন্যাশনাল হাইওয়ে সেফটি এডমিনিস্ট্রেশন এর কাছ থেকে সেফটি রেটিং ৫ স্কেলে ৫.৪ স্কোর অর্জন করে! এটা একটা রেকর্ড ব্রেকিং রেটিং।

১৩। মাস্ক এর স্পেসএক্স এর কল্যাণে ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে যাওয়ার খরচ ৯০ % কমানো সম্ভব হয়েছে।

১৪। নিজের সম্পদ ব্যবহার করে কল্পনাকে বাস্তব করার চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে মাস্ক কে মজা করে ‘থ্রিলিয়নেয়ার’ বলা হয়ে থাকে।

১৫। সৌরশক্তি নিয়ে গবেষণাকারী সোলারসিটি নামক প্রতিষ্ঠানটি মাস্ক এর কাজিনরা প্রতিষ্ঠা করলেও সেটির পেছনের বেশিরভাগ অর্থও এলন মাস্কেরই।

১৬। হাইপারলুপ হলো তার এমন একটি প্রজেক্ট যার লক্ষ্য মানুষের ভ্রমণকে আরও দ্রুত করার জন্য দ্রুতগতির প্রেসারাইজড টিউব ক্যাপসুল তৈরি করা।

১৭। হাইপারলুপ এর জন্য সুরঙ্গ খুঁড়তে তিনি ‘দ্যা বোরিং কোম্পানি’ নামে একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছেন।

১৮। ইলন মাস্ক এর আরেকটি কোম্পানি হলো নিউরালিঙ্ক। ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এ কোম্পানিটি সম্প্রতি একটি ব্রেইন-মেশিন ইন্টারফেস প্রকাশ করেছে যা মানুষের মস্তিষ্কের সঙ্গে কম্পিউটার ও মোবাইল ফোন যুক্ত করবে। নিউরালিংক সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের এই পোস্টটি পড়তে পারেন।

সূত্র: হিন্দুস্থান টাইমস

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *