এসো মিলি প্রাণের উৎসবে

এসো মিলি প্রাণের উৎসবে

কামরুল হাসানঃ প্রত্যেক গ্র্যাজুয়েটের কাছে সমাবর্তন থাকে লালিত স্বপ্নের মতো। কালো গাউন মুড়িয়ে টুপিটা আকাশপানে ছুড়ে দেয়ার সেই দৃশ্যগুলো চোখে ভাসে সবারই। সব গ্র্যাজুয়েটের কাছে এই দিনটি হলো স্পেশাল। সহপাঠি, জুনিয়র, সিনিয়র সবাই ফিরে যায় পুরোনো সেই দিনগুলোতে।

প্রাণের উৎসবে মেতে উঠে সবাই। গল্প আড্ডা আর গানে ফিরে দাপিয়ে বেড়ানো ক্যাম্পাস জীবনের দুরন্তপনা দিনগুলোতে। এক দুই দিনের জন্য গ্র্যাজুয়েটরা হয়ে উঠে ডানাছাড়া বিহঙ্গের মতো।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৩ বছর পর ১ম সমাবর্তন আয়োজন হচ্ছে ২৭ জানুয়ারি ২০২০। প্রথম ৮টি ব্যাচের প্রায় ৬হাজারের মতো গ্র্যাজুয়েট সমাবর্তন পাচ্ছে। মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং বিশ্ববিদ্যালয় আচার্য এডভোকেট আবদুল হামিদ গ্র্যাজুয়েটদের সনদ প্রদান করবেন।


আসুন সব অভিমান ভুলে লালমাটির ক্যাম্পাসটা দেখে আসি। গল্প আড্ডা চায়ের চুমুকে উষ্ণতা ছড়াই। আর বের হওয়ার পর কত কত জুনিয়রদের সাথে দেখাও হয়নি। নতুন পুরোনোতে মিলেমিশে একাকার হোক লালমাটির সবুজ চত্ত্বর। চলো বন্ধু ফিরে যাই আরেকবার ৫০ একরের এক টুকরো ভালোবাসার মাঝে।


সমাবর্তন আয়োজন এক প্রকার চ্যালেঞ্জই বটে। বিগত সময়ে কোন উপাচার্য এ চ্যালেঞ্জ নিতে পারেনি। বর্তমান উপাচার্য দায়িত্ব গ্রহনের পরই বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন আযোজনের আশ্বাষ দেন। এরই প্রেক্ষিতে আগামী ২৭ জানুয়ারি ২০২০ হতে চলছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় প্রাণের উৎসব।

প্রতিষ্ঠার এত বছর পর সমাবর্তন আয়োজনে শিক্ষার্থীদের মাঝে বেশ রোমাঞ্চ কাজ করছে। চলছে পুরোদমে রেজিষ্ট্রেশন এর কাজ। ১ নভেম্বর থেকে রেজিষ্ট্রেশন শুরু হয়ে চলবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। সমাবর্তন ফি এবং সমাবর্তনে অংশ না নিলেও মূল সনদ উত্তোলনে সমাবর্তনের সমপরিমাণ ফি দিতে হবে প্রশাসনের এমন শর্তে সাবেক শিক্ষার্থীদের অনেকেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে অনেকেই আপত্তি জানিয়েছেন। এ নিয়ে কতিপয় সাবেক শিক্ষার্থীদের নিয়ে উপাচার্য আলোচনায় বসেছেন। অংশ না নিলেও সমান ফি দিতে হবে এ শর্ত থেকে বিশ্বববিদ্যালয় প্রশাসন শিগগিরই সরে আসবেন বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ।

এমন দু একটি বিষয় ছাড়া সমাবর্তন নিয়ে সকল শিক্ষার্থীদের মাঝে একপ্রকার উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। যারা বর্তমান শিক্ষার্থী সমাবর্তন পাচ্ছে না, তাদের মাঝেও উৎসবের অন্ত নেই। বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেছে, ১ম থেকে ১৪ তম ব্যাচ একসাথে ক্যাম্পাসে আসবে সেটাই রোমাঞ্চকর। এ যেনো হবে পুরোনো নতুদের এক মিলনমেলা।

সমস্যা, সম্ভাবনা, সীমাবদ্ধতা অনেক কিছুই আছে। সবকিছুর সমাধান হয়তো সম্ভব না। আশা করছি কিছু বিষয় সমাধান করতে কর্তৃপক্ষ সচেষ্ট হবেন। কিছু সীমাবদ্ধতা মেনে নিতে হবে। দল মত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আমরা কুবিয়ান। সমাবর্তনই কেবল পারে সকলের মেলবন্ধন করতে।

আসুন সব অভিমান ভুলে লালমাটির ক্যাম্পাসটা দেখে আসি। গল্প আড্ডা চায়ের চুমুকে উষ্ণতা ছড়াই। আর বের হওয়ার পর কত কত জুনিয়রদের সাথে দেখাও হয়নি। নতুন পুরোনোতে মিলেমিশে একাকার হোক লালমাটির সবুজ চত্ত্বর। চলো বন্ধু ফিরে যাই আরেকবার ৫০ একরের এক টুকরো ভালোবাসার মাঝে।

সব ভেদাভেদ ভুলে…….
আসুন মেতে উঠি প্রাণের উৎসবে।
রাঙ্গিয়ে দেই সবুজ আঙ্গিনা।
জয়তু কুবি।
১ম সমাবর্তন সফল হোক।

লেখকঃ ১ম ব্যাচের শিক্ষার্থী, ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগ,কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *