করোনাঃ বদলাচ্ছে জীবন, বদলাচ্ছে জীবিকা

করোনাঃ বদলাচ্ছে জীবন, বদলাচ্ছে জীবিকা

মো মিনহাজুল ইসলাম


টিউশনের কথা যেহেতু উঠলো আমার মতো বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াদের কথাও বলি! বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া প্রতিটি শিক্ষার্থীই টিউশনির সাথে যুক্ত ছিল করোনা পূর্ববর্তী সময়ে, সে যত ধনীর দুলালই হোক না কেন। (এক-দুই জন আলাদা, যারা টিউশন করত না) অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন, তাদের টিউশন নেই, তো কী হয়েছে?

উত্তর টা সোজা- এতদিন তারা কিছু উপার্জন করতো, আর তাতে নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি, চলার খরচ, ইন্টারনেট বিল বাদেও পরিবারের জন্যেও কিছু দিত। আর তাদের সেই আয় বন্ধ হওয়াতে, তারাও এখন রীতিমতো পরিবারের কাছে বাড়তি বোঝা। আর সেই বাড়তি বোঝাটা এখন পরিবারের প্রধান কর্তাব্যক্তির মাথায়।
তাই এদের অনেকেই নেমেছেন অন্য কোনো কাজে। তবে যে অবস্থা, তাতে শ্রম বিক্রি করা ছাড়া আর উপায়ও নেই।

আবার বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে চিকিৎসা পেশায় অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, বেড়েছে মৃত্যু ঝুঁকি। এ কারণে মেডিকেল পড়ুয়ারাও চিকিৎসা পেশায় থাকতে উৎসাহী নন, উৎসাহ দেখাচ্ছে না তাদের পরিবারও। এমন অনেক সংবাদ আমরা প্রতিদিনই দেখছি, যা কিনা আমাদের দেশের ভবিষ্যতের জন্য হুমকি স্বরূপ। আমাদের দেশে যেখানে জনসংখ্যা ও রোগীর সংখ্যা বিবেচনায় কমপক্ষে দুই লাখ চিকিৎসক প্রয়োজন, সেখানে আমাদের দেশে চিকিৎসক আছেন ( সরকারি ও বেসরকারি) মাত্র ৬০-৭০ হাজার!

দেশের মানুষ যেভাবে তাদের কর্ম হারাচ্ছে, তাতে সরকারের উচিত নির্দিষ্ট কিছু গোষ্ঠীকে প্রণোদনা না দিয়ে সব মানুষের জন্যেই কিছু প্রণোদনা দেওয়ার ব্যবস্থা করা, এবং তা যথাযথ ভাবে কার্যকর করা।
বিশ্বের উন্নত দেশের সাথে যখন নিজেদের তুলনা করা হয়, তখন সে সব দেশের নাগরিকদের মতো আমরাও আমাদের সরকার থেকে দূর্যোগের সময় বা অন্য সময়েও কিছু সুযোগ সুবিধা আশা করতেই পারি।

অনেকে পেশা বদলেছেন বটে, কিন্তু অনেকেরই পরিকল্পনা আছে- এ করোনার সময় পার হলে আবারও আগের পেশায় ফিরবেন তারা। তাই সবার একটাই প্রার্থনা- সুস্থ হয়ে উঠুক পৃথিবী। সবাই ফিরে যাক নিজ নিজ পুরাতন কর্মে। আর যদি করোনা একেবারেই না যায়, তাহলেও যাতে নিজ নিজ কর্ম পরিবেশ সবাই ফিরে পায়, সেই দিকেই নজর দেওয়া উচিত সরকারের, উদ্যোগ নেওয়া উচিত যথাযথ কর্ম পরিবেশ তৈরি করার।

লেখক-   মো মিনহাজুল ইসলাম

১৪ তম আবর্তন, 

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, জগন্নাথ

বিশ্ববিদ্যালয়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *