করোনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে চায় কারা?

করোনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে চায় কারা?

এক নজরে দেখে আসি যারা অক্টোবরেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফেরত যেতে চায়:

১) প্রথম তালিকায় আছেন যারা ক্যাম্পাসে অসমাপ্ত প্রেম রেখে এসেছেন। অনেকদিন দেখা সাক্ষাত না হওয়ায় সম্পর্কচ্ছেদ হওয়ার সম্ভাবনা এখন তুমুল। প্রেমিকার হাতের নরম স্পর্শ থেকেও তারা বঞ্চিত। তাই তারা চান অতিসত্ত্বর ভার্সিটি খুলুক।

২) ভার্সিটির কিছু বড়ভাই ফার্স্ট ইয়ারের নিব্বিদের হাফ পটিয়ে এখন ছয় মাস ধরে বাসায় হাপিতেশ করছেন। এরমাঝে অনেক নিব্বি পাড়াতো ভাইয়ের সাথে প্রেম করে ঘন্টায় ঘন্টায় “ফলো মি” ক্যাপশনে স্টোরি দিচ্ছে। দাদাদের নতুন নিব্বি খুঁজতে ক্যাম্পাসে যাওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন৷

(৩) সিগারেট এবং অন্যান্য খোরেরা বাইরে থেকে “খেয়ে” আসার পর বাবা-মা মুখে গন্ধ পেয়ে প্রচুর মার দিয়েছে। গোপন সূত্রে জানা গেছে, তাদের নিতম্ব আজ হুমকির মুখে। উত্তম মধ্যমের কারণে ছাল চামড়া উঠে যাওয়ায় সেখানে ব্যান্ডেজ ও লাগিয়েছেন কেউ কেউ। শান্তিপূর্ণভাবে “খাওয়া দাওয়া”র জন্য দ্রুত ক্যাম্পাসে ফেরত যাওয়া জরুরি।

(৪) অনেক আপুরা ক্যাম্পাসে যেতে চাইছেন কারণ বাসায় তাদের কোনো ফটোগ্রাফার নেই। ক্যাম্পাসে থাকলে বন্ধুরাই ছবি তুলে দেয়। ফেসবুকে নতুন প্রোফাইল পিকচার আপলোড করতে পারছেন না অনেকদিন ধরে, তাই তারা ক্যাম্পাসে ফেরার অপেক্ষায় আছে।

(৫) প্রেমিক প্রেমিকার সাথে রাতে ফোনে কথা বলার সময় ছোট ভাইবোনের কারণে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। নিয়ম করে তারা আব্বা-আম্মার কানে পৌঁছে দিচ্ছে ফোনের ওপাশে বাবুদের খবর। এর থেকে মুক্তি পেতে ক্যাম্পাসে ফেরার আশা নিয়ে আছেন কেউকেউ।

(৬) বাসায় ওয়াইফাই নাই, কিন্তু হলে আছে। শুধুমাত্র একারণেই ক্যাম্পাসে যেতে চান অনেকেই।

(৭) করোনাকালীন সময়ে গৃহকর্মীদের ছুটি থাকায় বাসায় ভাতের মাড় গালা থেকে শুরু করে শৌচাগার পরিষ্কার —সবকিছুর ভার কিছু আপুর উপর এসেছে। এ দাসীবৃত্তি থেকে তারা মুক্তি পেতেই ক্যাম্পাসে ফিরতে চান।

(৮) যারা একমাসে বাসায় না জানিয়ে অন্তত দুই তিনটা ট্যুর দেন, অথচ এই লম্বা সময় ধরে এখন গৃহবন্দী তারাও ক্যাম্পাসে যেতে চান।

(৯) অনলাইন ক্লাসে স্যারদেরকে মন খুলে প্রশ্ন করার নামে তেলবাজি করা যায় না। এতে কিছু শিক্ষার্থীর মন ভেঙে সাতানব্বই টুকরো হয়ে আছে! তাছাড়া ক্লাসের পর শিক্ষকদের ডিপার্টমেন্টে যেয়ে আলাদাভাবে সাক্ষাত না করতে পারায়ও অনেকে ব্যথিত। তাই এরা এক পায়ে দাঁড়িয়ে আছে ক্যাম্পাসে ফেরার জন্য।

(১০) এই ছয় মাসে অনেকে শুধু পড়া গিলেছেন, এখন বসে বসে পরীক্ষার খাতার জন্য অপেক্ষা করছেন যেনো তা উগড়ে দিতে পারেন। ভালো সিজিপিএ ছাড়া তাদের আর কিছুই চাওয়ার নেই।

(১১) ভোর পাঁচটায় ঘুমিয়ে দুপুর দুইটায় ওঠার নিয়ম মেনে চলতে পারছেন না৷ এই দুঃখে অনেকে যেতে চান।

(১২) অনেকের উপরের কোনো সমস্যা নেই, কিন্তু এদের একজায়গায় বেশিদিন মন টিকে না। বাসায় থাকলে মনে হয় ক্যাম্পাসে যাই, ক্যাম্পাসে গেলে মনে হয় বাসায় যাই। এরাও এখন ফেরত যেতে চাইছেন৷

[পুনশ্চঃ ফানপোস্ট। সেশন জট, অনেকেরই টিউশনি ছাড়া জীবিকা নির্বাহনে কষ্ট ইত্যাদি বিষয়ে সবাই আমরা জ্ঞাত এবং সমব্যথী (আমার অর্ধেক মনও চায় অক্টোবরে সব খুলে দিক)।

লেখা- Zarin Tasnim

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *