কৃষি প্রযুক্তিগুলো তরুণদের উদ্যেক্তা হওয়ার পথে অন্যতম হাতিয়ার
মাজেদুল ইসলাম
কৃষিই সমৃদ্ধি, কৃষিই হলো বাঙালিকে দারিদ্র্যের কষাঘাত থেকে মুক্তির অন্যতম হাতিয়ার।পৃথিবীর সূচনালগ্ন থেকে মানুষের জীবিকার প্রধান মাধ্যম কৃষিজ পণ্য।
আদিমযুগের পশু শিকার,মাছ শিকার ও বনজঙ্গলের ফলফলাদি প্রাকৃতিকভাবে সংগ্রহের পরিবর্তে সভ্যতার বদৌলতে আজ এসবকিছুই বানিজ্যিক ভাবে চাষ করে জীবন ও জীবিকার প্রধান উপজীব্যে রুপান্তরিত হয়েছে কৃষি।
কৃষি বলতে আমরা খাদ্যশস্য,প্রানীসম্পদ ও মাৎস্যসম্পদের সমন্বয়কে বুঝে থাকি।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি কৃষি।কৃষিকাজের সাথে শতকরা ৭৫ ভাগ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত।একসময় কৃষি ছিল হালআমলের।অনেকটা দেশীয় উপকরণ দিয়ে কৃষকভাইদের চালাতে হতো কৃষি কাজ ও ফসল ফলানো এবং কোটি কোটি মানুষের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার মতো গুরুদায়িত্ব।
তবে,সভ্যতার বদৌলতে এবং কৃষির যান্ত্রিকতার প্রভাবে বদলে গেছে কৃষির স্বভাবজাতচিত্র।এখন হাতের নাগালে আধুনিক কৃষি উপকরণ-সার,বীজ,যন্ত্রপাতি, কীটনাশক।
সরকারের কৃষিভিত্তিক ঋণদানের প্রণোদনা ও দেশের ৫ টি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ডিপ্লোমা কৃষি ইনস্টিটিউট থেকে বের হওয়া কৃষিবিদদের সহায়তায় কৃষকরা আজ শিখে গেছে কৃষির অভিনব কৌশল।
এক্ষেত্রে তরুণেরা কৃষির প্রযুক্তিগত কৌশলগুলো প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আয়ত্ব করে ঘুচাচ্ছে তাদের বেকারত্ব। এছাড়াও কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা ও পড়াশোনার পাশাপাশি উদ্যোক্তা হওয়ার দৌড়ে নেমে পড়েছে এসব প্রযুক্তিগুলো নিয়ে। উদ্যোক্তামুখি কর্মকান্ড হিসেবে সবার এখন চোখ কৃষিমুখী প্রযুক্তিগুলোর দিকে।
মাছ চাষ (বায়োফ্লক, রাশ কালচার ইত্যাদি) রেশম চাষ, মৌমাছি চাষ, ছাদ কৃষি, ফুল ও ফল চাষ, শাক-সবজি চাষ,সমন্বিত চাষ পদ্ধতি (ধান+ মাছ+ হাস), ভার্মি কম্পোস্ট, গরু মোটাতাজাকরণ, হাস-মুরগী পালন সহ নানামুখি প্রযুক্তিগুলো আজ বানিজ্যিক ভাবে চাষ করতেছে শহুরে ও গ্রামীণ তরুণেরা।অনেকে আবার ইন্টারনেট কে কাজে লাগিয়ে অনলাইন বাজার সৃষ্টির মাধ্যমে কুরিয়ারযোগে সারাদেশে তাদের পণ্য বাজারজাত করছে।
কৃষির এ অপার সম্ভাবনাকে তরুণরা কাজে লাগানোর দরুণ চাকরিমুখী হওয়ার প্রবণতা কমছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে। যা তাদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটাবে এবং দেশের উন্নতিতে সুদূরপ্রসারী ভূমিকা পালন করবে।
বাংলাদেশ সরকার এর প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাও তরুণদের উদ্যোক্তা হওয়ার মাধ্যমে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তির জন্য উদাত্ত আহ্বান করেন।
কৃষির প্রযুক্তিগুলোই হতে পারে আজকের বাংলাদেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার অন্যতম হাতিয়ার।তরুণরা এসব হাতিয়ারের উপর ভর করে আগামীর বাংলাদেশকে দারিদ্র্যমুক্ত ও বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি দিবে ইনশাআল্লাহ।