ঘূর্ণিঝড়ে পরিবারের আয়ের উৎস ভঙ্গুর, বাসা ভাড়া দিব সেই সম্বলটুকু নাই

ঘূর্ণিঝড়ে পরিবারের আয়ের উৎস ভঙ্গুর, বাসা ভাড়া দিব সেই সম্বলটুকু নাই

বশেমুরবিপ্রবি টুডে : করোনা দূর্যোগের মধ্যে সবচেয়ে বিপাকে মধ্যবৃত্ত ও নিম্ন আয়ের পরিবার থেকে উঠে আসা শিক্ষার্থীরা। আবার এই পরিবারের অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা পড়াশুনা করে সরকারি তথা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে। দেশের প্রতিটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) রয়েছে হাজারো শিক্ষার্থী। এই মধ্যবৃত্ত শিক্ষার্থীরা বিশেষ করে মেস ভাড়া মওকুফ নিয়ে শিক্ষার্থীরা যখন চরম বিপাকে তখন ঘূর্ণিঝড় আম্পানে বিশেষ করে উপকূল অঞ্চলে শিক্ষার্থীদের বেঁচে থাকার শেষ সম্বল টুকু ও কেড়ে নিয়েছেন।

ঘূর্ণিঝড় আম্পানে অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বশেমুরবিপ্রবি ‘র শিক্ষার্থীরা। অনেক শিক্ষার্থীদের পরিবার আছে দিনে আনে দিনে খায় তাদের ভিটে বাড়ি ছিল শেষ সম্বল সেই সম্বল টুকু ও রাখেনি। পানি বন্দী বাড়ি, বাঁধ ভেঙে মাছের ঘের ভেস গেছে অনেকের আবার ঝড়ে উড়ানো টিনের চাল খোলা আকাশের নিচে বসবাস, আবার কারও পড়ে যাওয়া ঘর এখনো মেরামত হয়নি এধরণের কথা বলছিলেন বশেমুরবিপ্রবি র কয়েকজম ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষার্থী।

ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এমন রাস্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের ঘরবাড়ির কোন ক্ষতি না হলেও আমাদের পরিবারের আয়ের একমাত্র উৎস মাছের ঘের সেই মাছের ঘের জলোচ্ছ্বাসে ছুটে যাওয়ায়(বেড়িবাঁধ ভেঙে) ঘের এখনো পানির তলে, এজন্য আমাদের আয়ের উৎস এখন ভঙ্গুর দশা থাকায় আমার পক্ষে মেসভাড়া দেওয়া অসম্ভব।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন,বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে ও ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত আমাদের পরিবার।কোন আয় উপার্জন করতে পারছে না আমার পরিবার, এমতাবস্থায় আমার পক্ষে অসম্ভব মেস ভাড়া পরিশোধ করা। আমাদের পরিবার অনেক কষ্টে আছে।

মেসভাড়া প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের মেস ভাড়া শতভাগ পরিশোধ করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি।

এদিকে মেসভাড়া মওকুফ প্রসঙ্গে মেস সংক্রান্ত কমিটির মিটিং এ সিদ্ধান্ত হয় গোবরাবাসী(বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশে) ৪০ শতাংশ মওকুফ এবং নবীনবাগ এলাকার (নবীনবাগ ও তার পাশের এলাকা সমূহ) ২৫ শতাংশ মওকুফ করেছেন।

কিন্তু ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষার্থীদের বাকি টাকা পরিশোধ করা ও তাদের পক্ষে দুঃসাধ্য ব্যাপার এ বিষয়ে মেস সংক্রান্ত কমিটির সভাপতি সাথে যোগাযোগ করা হলে এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন “ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সহায়তা করবে কিনা সেটা প্রশাসনের ব্যাপার, আমি প্রশাসনের কোন কর্মকর্তা নয় তবে মেস সংক্রান্ত কমিটির পক্ষ থেকে তাদের পাশে থাকার জন্য সবার সাথে আলোচনা করে ছাত্রদের পক্ষে একটা ভালো রিপোর্টে দিব ”

এবিষয়ে উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ শাহাজাহান (রুটিন দায়িত্ব ) বলেন, ”উপকূল অঞ্চলের যেসব শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্থ তাদের মেস ভাড়া মওকুফ এর পরিমান বাড়িওয়ালারা বাড়িয়ে দিবেন।”
তবে অনেক বাড়িওয়ালা মওকুফ এর পরিমান না বাড়ালে বা শতভাগ মওকুফ না করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন কতৃপক্ষ তাদের সহায়তা করবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন,” যাদের অবস্থা শোচনীয় তারা বাসা ভাড়া না দিতে পারলে প্রশাসনের কাছে দরখাস্ত(আবেদন) করলে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হলে তাদের বিষয়টি আলোচনা করে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। “

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *