এমন চিত্র চোখে পড়বে তখনই, যখন চোখে হাত দিয়ে একটু চুলকিয়ে আবার নতুন করে চাহনি দেবেন। কালো গ্লাস পরিধান করে এইসব মানুষকে খুঁজলে কোনদিন ও খুঁজে পাবেন না। কারণ নিজের আত্মসম্মানের ভয়ে আপনাদের প্রচারণার কাছে এরা হার মেনে যায়। হাত গুটিয়ে বসে থাকে ঘরের এক কোন। আপনাদের কাছে সাহায্যের হাত পাততে লজ্জা বোধ করে।
আর যদিও আপনারা সাহায্য নিয়ে যান, আপনাদের সাহায্যের তালিকায় থাকে মাস্ক, সাবান বা স্যানিটাইজার। তাদের পেটে তো ক্ষুধা, হাত পরিষ্কার করে কী হবে পেটে যদি খাবার না থাকে? মানুষ তখনই হাত পরিষ্কার করে যখন খাবার খাওয়ার প্রয়োজন হয়। খারাপ কিছু যাতে খাবার সময় পেটে না যায় সে জন্যই সাবান দিয়ে হাত ধোঁয়ার প্রয়োজন পড়ে।
আর পেটের উপর ইট। আসলেই এটা কী ক্ষুধা নিবারণের একটা পাথেয় হতে পারে? হ্যা সম্ভব। ছোট সময়ে গরিবের মুখে শুনেছি ঘরে খাবার নেই ক্ষুধা লাগছে পেটে নিচে বালিশ দিয়ে শুয়ে থাক। যখন খাবার রান্না হবে তখন ডাক দিব। ব্যাপারটা ঘোলাষা মনে হলেও সত্য কথা। যখন ক্ষুধার জ্বালা প্রকট আকার ধারণ করে, মোটেও সহ্য করবার মত না তখন পেটের নিচে বালিশ রেখে শুয়ে থাকলে নাকি ক্ষুধার জ্বালাটা সামান্য হলেও নিবারণ হয়। বিশ্বাস না হলে আশেপাশের কোন অসহায়ের দিনযাপন করা লোকের কাছে জিজ্ঞেস করতে পারেন।
চিত্রের লোকটা তার ব্যতিক্রম নয়। ক্ষুধার জ্বালা সহ্য করতে না পেরে হয়তো পেটের উপর ইটের ভার দিয়ে রাখছেন।যাতে কিছু সময়ের জন্য ক্ষুধার জ্বালাটা নিবারিত থাকে।
পরিশেষে একটা কথা, সাহায্যের আগে একবার হলেও চিন্তা করা উচিৎ এই লোকের কি প্রয়োজন? খাবার নাকি মাস্ক ও সাবান? যদি খাবারের প্রয়োজন হয় তাহলে মাস্ক ও সাবানের পরিবর্তে আগে খাবার সরবরাহ করেন। এরপর যদি সম্ভব হয় খাবারের সাথে আপনি মাস্ক ও সাবান দিতে পারেন। ফলে এমনিতে খাবারের আগে তারা আপনার দেওয়া সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার করে খাবার খাবে।
একটা মাস্ক ও একটা সাবান হাতে ধরিয়ে দিয়ে তখন বারবার বলতে হবে না বাহিরে যাবার সময় মুখে মাস্ক ব্যবহার করেন এবং বাহির থেকে ফিরে আগে সাবান দিয়ে বারবার হাত ধৌত করেন। কারণ ক্ষুধার জ্বালার কাছে বারবার সাবান দিয়ে হাত ধৌত করা এক ধরনের বিলাসিতাই মনে হয়।
লেখকঃ শিক্ষার্থী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ।