ছাত্রীর কাছে স্বর্গীয় সুখ চাওয়া সেই রেজিস্ট্রারকে অব্যাহতি
নিজস্ব প্রতিবেদক
ছাত্রীর সাথে ফোনালাপে স্বর্গীয় সুখ চাওয়া কথোপকথন ফাঁস হওয়া সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) রেজিস্ট্রার মো. দেলোয়ার হোসেনকে অব্যাহতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ।
ধানমন্ডিস্থ গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল ভবনের মেজর এটিএম হায়দার বীরউত্তম মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের জরুরি সভায় সকল সদস্যের সম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
আজ (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘এটা সত্য। বেশকিছু অভিযোগে উনাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। সভায় আলোচনার ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। মিডিয়ার কাছেও উনার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল।’
এর আগে, গত মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) রেজিস্ট্রারের সাথে এক ছাত্রীর অশ্লীল, কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা সম্বলিত ২৬ মিনিট ৩২ সেকেন্ডের একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়। এ ঘটনার পর থেকে ক্যাম্পাসে তোলপাড় শুরু হয়। অবস্থার প্রেক্ষিতে জরুরী সভা আহ্বান করে ট্রাস্টি বোর্ড।
এ ঘটনায় ৩ দিনের মাঝে রেজিস্ট্রারকে বরখাস্তের দাবি জানিয়ে পরদিন ট্রাস্টি বোর্ডকে লিখিত বিবৃতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ। এছাড়া উনাকে বরখাস্ত এবং ঘটনার তদন্তের দাবি জানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সাংস্কৃতিক সংগঠন অগ্নিসেতু, সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট সেন্টার ও ডিবেটিং সোসাইটি।
সার্বিক বিষয়ে ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘উনি অব্যাহতি চেয়েছেন, তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।’ অভিযোগের বিষয়ে কি ব্যবস্থা নেয়া হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। এ ব্যাপারে কেউ প্রমাণ নিয়ে আমাদের কাছে কমপ্লেইন করেনি।’ এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত রেজিস্ট্রার মো. দেলোয়ার হোসেনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন কেটে দেন।
সভায় অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ড. আমিরুল ইসলাম চৌধুরী, অধ্যাপক হোসনে আরা শাহেদ, অধ্যাপক আলতাফুন্নেসা, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, ডা. জাফরুল্লাহ্ চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ডা. লায়লা পারভীন বানু উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া জুমের মাধ্যমে সভায় যোগ দেন ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য বিচারপতি মোহাম্মদ আব্দুর রউফ, ড. সালেহ্ উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদ্দাচ্ছের আলী, ওয়ালিউল ইসলাম এবং শিরীন পারভীন হক ।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালেও রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে একই প্রতিষ্ঠানের একজন ছাত্রী যৌন নিপীড়ন সংক্রান্ত অভিযোগ ইউজিসিতে দাখিল করেন। এর প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করে তখন রেজিস্ট্রারের কাছে জবাব চাওয়া হয়। কিন্তু তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি বলে ইউজিসি জানায়। এছাড়াও উনার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় নানা অভিযোগ উঠে এবং বিভিন্ন পত্রিকায় সেগুলো প্রকাশিত হয়।