ঢাবিতে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ সত্ত্বেও স্বায়ত্তশাসিত হওয়ায় ব্যবস্থা নিতে পারে না সরকার

ঢাবিতে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ সত্ত্বেও স্বায়ত্তশাসিত হওয়ায় ব্যবস্থা নিতে পারে না সরকার

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সরকারকে প্রতিদ্বন্দী না ভেবে সরকারকে সহযোগী মনে করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে সরকার সকল প্রকার সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে। জ্ঞান অর্জন ও এগিয়ে যাওয়ার জন্য স্বায়ত্তশাসন থাকবে। জ্ঞানের ক্ষেত্রে ও এগিয়ে যাওয়ার জন্য স্বায়ত্তশাসন, তবে সরকারের সহযোগিতা ও হস্তক্ষেপটা যেন অবৈধ ও অন্যায্য না হয়।

তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়মের অভিযোগ আসলেও স্বায়ত্তশাসিত হওয়ার কারণে সরকার কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে পারে না।

শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) লন্ডন সময় দুপুর ২টায় ‘শতবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জন ও সংকট’ শীর্ষক গ্লোবাল ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। যুক্তরাজ্যে বসবাসরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ্যালামনাইদের সংগঠন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের উদ্যোগে এটি অনুষ্ঠিত হয়।

শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো টিউশন ফি কেন্দ্রিক নয়, সেখানে জনগণের অর্থে শিক্ষা দেওয়া হয়। তাই পাশ্চাত্যের উচ্চমানের টিউশন ফি নির্ভর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনা চলে না। এমআইটি, হার্ভার্ড, অক্সফোর্ড, কেইমব্রিজ যদি উচ্চ মাধ্যমিকের ফল ও জিআরটি, স্যাট, আইইইএলটিস, টোফেল এসেসমেন্টের উপর ভিত্তি করে শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারে, তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন পারবে না? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীদের বাড়তি চাপ তৈরী করা হচ্ছে? কোভিডকালীন সময়ে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সময় ও অর্থ অপচয় করতে হয।

উপমন্ত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যালামনাইদের ৫ হাজার ডলার করে ১ লক্ষ এ্যালামনাইকে এন্ডালমেন্ট ফান্ডে অনুদান দেওয়ার আহবান জানান। সরকার সেই অনুদান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়কে গবেষণায় বাজেট বরাদ্দ দিতে পারবে। উন্নত দেশের শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণায় বরাদ্দের অনুদান আসে কর্পোরেট ফান্ডিং এবং এ্যালামনাইদের অনুদান থেকে। বাংলাদেশে যেহেতু কর্পোরেট ফান্ডিং এর কালচার গড়ে উঠেনি তাই বিদেশে বসবাসরত এ্যালামনাইরা সেই উদ্যোগ নিতে পারে।

ওয়েবিনারে সভাপতির ব্ক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো আখতারুজ্জামান বলেন, বিদেশে অবস্থানরত এ্যালামনাইরা যেন তাদের মেধা ও দক্ষতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কাজে লাগাতে পারেন সেজন্য প্রয়োজন হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে রিসার্চ প্রফেসর পদ সৃষ্টি করে তাদেরকে স্বাগত জানানো হবে। এ ধরনের কোলাবোরেশন বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাংকিং উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলেও মনে করেন উপচার্য।

ওয়েবিনারে সম্মানিত অতিথি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যালামনাই বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি এন্ডালমেন্ট ফান্ড তৈরীর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অনুরোধ করেন। সেই প্রক্রিয়াটি এখনো বাস্তবায়ন করা যায়নি, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এ্যালামনাইরা সহযোগিতা করলে সেটি বাস্তবায়ন সম্ভব।

ওয়েবিনারে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানউল্লাহ, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক বিশ্বদেব চৌধুরী, ইংরেজী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নীলিমা আক্তার, কমিউনিকেশন্স ও ডিসঅর্ডার বিভাগের চেয়ারপার্সন শান্তা তাওহিদা প্রমুখ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *