ঢাবিতে শিক্ষার্থীদের জন্য করোনাত্তর আবাসিক নির্দেশনা খসড়া

ঢাবিতে শিক্ষার্থীদের জন্য করোনাত্তর আবাসিক নির্দেশনা খসড়া 

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক

কোভিড-১৯ ভাইরাস সংক্রমণের কারণে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও বন্ধ রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তবে শিক্ষার্থীদের পাঠের সঙ্গে সংযোগ রাখতে বর্তমানে চালু রয়েছে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম।

মার্চে করোনা রোগী শনাক্তের পর বাংলাদেশ সরকার কঠোর লকডাউনের ঘোষণা দেয়। যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলও বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে জুন মাসে সরকার লকডাউন শিথিল করে সীমিত পর্যায়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অফিস, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং পরবর্তীতে গণপরিবহণ চালু করে।

ফলশ্রুতিতে করোনা সুরক্ষা ব্যবহার করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস কার্যক্রম চালু রয়েছে। করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু হলে বিশ্ববিদ্যালয় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য কাজ করছে ঢাবি কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, বিভাগের চেয়ারম্যান, অনুষদের ডিন, হলের প্রাধ্যক্ষ, প্রক্টরিয়াল টিম, পরিবেশ পরিষদভুক্ত ছাত্র-সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সভা করছেন। সর্বশেষ অনুষ্ঠিত প্রভোস্ট কমিটির সভায় ক্যাম্পাস খোলার প্রক্রিয়া নিয়ে বেশকিছু সিদ্ধান্ত হয়। সে মোতাবেক একটি নির্দেশনা খসড়া করে প্রভোস্ট কমিটির সভাপতি বিজয় একাত্তর হলের প্রাধ্যক্ষ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও প্রভোস্ট কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী স্বাক্ষরিত একটি চিঠি সংশ্লিষ্টদের দেওয়া হয়েছে। এসব নির্দেশনা অমান্য শৃঙ্খলা-পরিপন্থী কাজ হিসেবে গণ্য করা হবে বলে জানা গেছে।

আবাসন সংক্রান্ত নির্দেশনায় প্রস্তাব করা হয়েছে-

কোন কক্ষের মেঝেতে শোয়া যাবে না; ২ সিটের কক্ষে সর্বোচ্চ ৪ জন এবং ৪ সিটের কক্ষে সর্বোচ্চ ৮ জনের বেশি শিক্ষার্থী থাকতে পারবে না। কোনো বহিরাগত বা বাহির থেকে আসা কাউকে কক্ষে অবস্থান করতে দেওয়া যাবে না। কক্ষের বাহিরে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। নিজ কক্ষ এবং কক্ষের বাহিরের আশপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

হল ডাইনিং, ক্যান্টিন, মেস, দোকান, সেলুন, রিডিংরুম, অডিটোরিয়াম, টিভি রুম, অতিথি কক্ষ, পাঠাগার, মসজিদ ও উপসনালয়ে ভিড় করা যাবে না এবং সামাজিক-দূরত্ব নীতিমালা অনুসরণ এবং মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। দলবেধেঁ বা একা বেড়াতে ও ঘুরতে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে এবং সভা-সমাবেশ, রেস্তোরা, পার্টি ও গণপরিবহন যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে।

স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত খসড়া নির্দেশনায় যা থাকছে-

প্রতিটি কাজের পূর্বে ও পরে সাবান দিয়ে হাত-মুখ ভালোভাবে ধুতে হবে, হাত না ধুয়ে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করা যাবে না। হ্যান্ডশেক ও আলিঙ্গন করা থেকে বিরত থাকতে হবে। যেখানে-সেখানে কফ থুথু ফেলা থেকে বিরত থাকতে হবে; হাঁচি কাশি দেওয়ার সময় হাতের কনুই এর ভাঁজে বা টিস্যু দিয়ে মুখ ও নাক ঢাকতে হবে।

সুষম খাবার খেতে হবে এবং পরিমাণ মতো পানি পান করতে হবে; কৃত্রিমজাত খাবার যথাসম্ভব পরিহার করতে হবে। নিয়মতান্ত্রিক ও সুশৃঙ্খল জীবন-যাপন করতে সচেষ্ট থাকতে হবে; অধিক রাত পর্যন্ত জেগে থাকা যাবে না; পরিমিত সময় পর্যন্ত বিশ্রাম নিতে হবে। খেলাধুলায় ও সহশিক্ষামূলক কাজে অধিকতর মনোনিবেশ করতে হবে; প্রত্যহ অন্তত ৩০ মিনিট শরীরচর্চা করতে হবে; স্বেচ্ছা সেবামূলক কাজে যুক্ত থাকতে হবে।

চিকিৎসা সংক্রান্ত-

কোনো শিক্ষার্থীর অসুখ-বিসুখ থাকলে পূর্বেই হল প্রশাসনকে জানাতে হবে। শিক্ষার্থী অসুস্থ হলে অতিসত্ত্বর চিকিৎসা কেন্দ্রের ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। কোনো শিক্ষার্থীর করোনা উপসর্গ দেখা দিলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দ্রুত সেল্‌ফ কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থা অবলম্বন করতে হবে।

নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রভোস্ট কমিটির সভাপতি বিজয় একাত্তর হলের প্রাধ্যক্ষ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির বলেন, এই নির্দেশনাগুলো খসড়া করা হয়েছে। এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি, যখন চূড়ান্ত হবে তখন উপাচার্য মহোদয় সংবাদ সম্মেলন করে প্রকাশ করবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও প্রভোস্ট কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, পুরোবিশ্ব কোভিড-১৯ ভাইরাস’র ফলে বিশেষ পরিস্থিতি পার করছে। করোনা সংক্রমণের ঝুকি থাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের জীবনের নিরাপত্তাকে অবশ্যই প্রাধান্য দিতে হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ক্যাম্পাস খোলা শিক্ষার্থীদের এসব নির্দেশনা মেনে সব কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *