ঢাবির বাজেট শিক্ষার্থীবান্ধব নয়, অগ্নি ঝরা মতামত শিক্ষার্থীদের
ঢাবি প্রতিনিধি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের মুলতবিকৃত বার্ষিক অধিবেশন গত বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাজেট ৮৬৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকার বাজেট অনুমোদন করা হয়েছে নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে।
ঢাবির বাজেট নিয়ে ঢাবি শিক্ষার্থীদের মনের জানা অজানা নানা ভাবনা নিয়ে দ্য ক্যাম্পাস টুডের মুখোমুখি ঢাবি শিক্ষার্থীরা।
ইমতিয়াজ আলম, দ্য ক্যাম্পাস টুডেকে জানিয়েছেন ঢাবির এবারের বাজেট নিয়ে তার মতামত: ‘বাজেট বিষয়ে বলতে গেলে একটা বিশাল প্রবন্ধ উপস্থাপন করতে হয়। এতো গভীরে না গিয়ে একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে ২০২০-২১ বাজেট বিষয়ে যা বলার আমার তা হলো’-
‘গবেষণা খাত ও বাজেট ঘাটতি- ২০১৬-১৭ সালে বাজেটের আকার ছিলো ৬৬৭ কোটি টাকা। সেখানে মোট বাজেটের ৯.১৬ শতাংশ গবেষণা খাতে বরাদ্দ রাখা হয় তবে ২০২০-২১ সালে ৮৭০ কোটি টাকার বাজেটে কেন কমে ১.০৯ শতাংশ গবেষণা খাতে বরাদ্দ হলো বোধগম্য হলোনা। যেখানে গবেষণা খাতে বৃদ্ধি পাবার কথা সেখানে এই অবনতি দুঃখজনক। পাশাপাশি এবারের বাজেট ঘাটতি দেখানো হয়েছে ৫০ কোটি টাকা যা বিগত বছরগুলোর তুলনায় বেশ বৃহৎ ও চ্যালেঞ্জিং। ‘
‘শিক্ষার্থীবান্ধব বাজেট হলো কিনা বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাবে ঢাবির বাজেট সর্ববৃহৎ। আর সেজন্যই বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে এই বিশ্ব মহামারীর সময়ে এই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের কোন স্বাস্থ্যবীমা বা স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন উদ্যোগ বা ব্যবস্থা না থাকার প্রশ্নটা আবারো সামনে খুবই নগ্নভাবে উপস্থিত হয় যা খুবই হতাশাজনক। একটি দেশের প্রথম সারীর বিশ্ববিদ্যালয় তার শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে এতোটা ঔদাসিন্যে আমরা একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমি শুধু হতাশই নই বরং ক্ষুব্ধ। তাই বাজেটে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসুরক্ষায় বরাদ্দ প্রয়োজন। ‘
‘দুর্যোগকালীন মুহুর্তে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষাঃ একইসাথে অতিমারি ও ভয়াবহ বন্যায় অনেক ঢাবিয়ানদের অবস্থা নিতান্ত শোচনীয়। তাই একজন ঢাবি শিক্ষার্থী হিসেবে দুর্যোগের সাথে স্ট্রাগল করা শিক্ষার্থীরা সহায়তার জন্য ঢাবিকে পাশে পেলে তা নিঃসন্দেহে বৃহৎভাবে উপকৃত হতো। তাই দুর্গত ও পীড়িত এলাকার শিক্ষার্থীরা যাতে করে দুর্যোগকালিন সময়ে দুর্যোগ মোকাবেলায় কোন অনুদান বা সহজে ঋন সুবিধা পেতে পারে তার কথা বিবেচনা করে বাজেটে একটি বরাদ্দ রাখা জরুরী বলে মনে করি। কারণ একজন ঢাবি শিক্ষার্থী হিসেবেও অনেক সময় আত্মমর্যাদা বা আলাদা একটি সামাজিক পরিচিতি কারণে সংকোচবশত শিক্ষার্থীটি কারো কাছে হাত পাততে পারে না।’
‘শিক্ষার্থীদের আবাসন খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে ঢাবিকে পূর্নাঙ্গ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তর করা: শিক্ষক বা কর্মচারির আগে একজন শিক্ষার্থীর আবাসন নিশ্চিত করাটা অধিক প্রাধান্য দেয়া উচিত। কেননা একজন শিক্ষক বা কর্মকর্তা-কর্মচারীর ঢাকা শহরে সারভাইব করাটা যতোটা না কঠিন তার চাইতে ঢের কঠিন একটা শত শত কিলোমিটার দূরের গ্রাম বা মফস্বল থেকে একা একা ঢাকা আসা একজন শিক্ষার্থীর ঢাকা শহরে টিকে থাকাটা। তাই বাজেটে আবাসন খাতে বরাদ্দ উল্লেখযোগ্য হারে বর্ধন করে নতুন হল বা পুরাতন হল গুলো সম্প্রসারণ করে নতুন আবাসন সৃষ্টি ঢাবির আবাসন সংকটে দূর করতে পারে যা হবে সত্যিকারের শিক্ষার্থীবান্ধব বাজেট।’
মোঃ সালেহ্ মাহমুদ দ্য ক্যাম্পাস টুডেকে জানিয়েছেন ঢাবির বাজেট নিয়ে তার মনের যত কথা: ‘২০২০-২০২১ অর্থবছরের জন্য ৮৬৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকার বাজেট অনুমোদন হয়। এই খবর সত্য।
তবে নতুন অর্থবছরে বন্ধ থাকা প্রতিষ্ঠানের নিয়মিত ৪০,০০০ ছাত্রকে ২০,০০০ করে মোট ৮ কোটি দেওয়া টাকার খবরটা মিথ্যা! যা হোক, আমিও বিধবা হলাম, বাজারেও রঙিন শাড়ি উঠলো।’
‘বাজেট নিয়ে শিক্ষার্থীরা আর ভাবে না, সিন্ডিকেটকে বলে দিয়েন।বরং আমাদের কাছ থেকে স্মার্ট কার্ডের জন্য প্রতিবছর ৬০০ করে হুদাই টাকা নিচ্ছে, এগুলো কী করে তা সিনেটে উত্তর চাই।’
সে আরো বলেন, ‘জনগণের টাকায় পড়ি, আবার ঘর থেকেও এনে দিই, তাও লোভ দেখানো সেবাটা পাই না। এটা সন্তানসম ছাত্রদের সাথে অন্যায়-বঞ্চনা বলবো আমি।’