নিয়োগ পরীক্ষায় ভুল তারিখ, স্বপ্নভঙ্গ জান্নাতুলের

নিয়োগ পরীক্ষায় ভুল তারিখ, স্বপ্নভঙ্গ জান্নাতুলের

ডেস্ক রিপোর্ট


রোববার সকাল সাড়ে ৮টা। জান্নাতুল ফেরদৌস নামের এক প্রার্থী অফিস সহায়ক পদে মৌখিক পরীক্ষা দিতে এসেছেন। কিন্তু কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের দোতালায় উঠতে গেলে তাকে আটকে দেন নিরাপত্তা প্রহরীরা। পরীক্ষা আছে বলতেই তারা রেগে গিয়ে বলেন তিনদিন আগেই পরীক্ষা হয়ে গেছে। আজ এসেছেন কেন? এ সময় জান্নাতুল প্রবেশপত্র বের করে দেখান ২৩ আগস্ট সকাল ৯টায় তার পরীক্ষার সময় দেয়া আছে। এ নিয়ে প্রহরীদের সঙ্গে তার বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। অনেক চেষ্টা করে দোতলায় উঠে জানতে পারেন তিনদিন আগে নিয়োগ পরীক্ষা শেষ হয়ে ফলাফলও প্রকাশ হয়ে গেছে। শুধু তাই নয় কর্মকর্তা কর্মচারীরাও তার সাথে ঔদ্ধত্য পূর্ণ আচরণ করেছেন ।এমন খবর প্রকাশ করেছে দেশের একটি জাতীয় দৈনিক।

ঘটনাটি স্বীকার করে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও নিয়োগ কমিটির আহ্বায়ক মুহাম্মদ ওবাইদুর রহমান বলেন, হয়ত লেখায় ভুলের কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের রাজস্ব প্রশাসন শাখায় ১৫ জন অফিস সহায়ক ও ১ জন নিরাপত্তা প্রহরী পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। আবেদনকারীদের ১৭ আগস্ট থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হয়। ২১ আগস্ট বিকেলে পরীক্ষার ফলাফলও প্রকাশ করা হয়েছে এবং ২৩ আগস্ট উত্তীর্ণ প্রার্থীদের যোগদান করতে বলা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের রাজস্ব প্রশাসন শাখায় অফিস সহায়ক পদে আবেদন করেন কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার সেনগ্রাম দক্ষিণ আমবাড়িয়া গ্রামের তাজেম আলী বিশ্বাসের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস। আবেদনের প্রেক্ষিতে তাকে জেলা প্রশাসন কার্যালয় থেকে প্রবেশপত্র পাঠানো হয়। প্রবেশপত্রে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে ২৩ আগস্ট সকাল ৯টায় কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে আসতে বলা হয়।

এ প্রসঙ্গে জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, সকাল ৮টায় এখানে এসেছি। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পরীক্ষা দিতে উপরে উঠতে চাইলে নিরাপত্তা প্রহরীরা আমার সঙ্গে খুব খারাপ আচরণ করেন। তারা আমাকে ওখান থেকে বের করে দিয়ে বলেন, তিনদিন আগেই পরীক্ষা হয়ে গেছে। আজ এসেছেন কেন? আমি তখন প্রবেশপত্র বের করে তাদের দেখাই যে আমাকে ২৩ আগস্ট সকাল ৯টায় সময় দেয়া হয়েছে।

এক পর্যায়ে কোনো একজনের সঙ্গে কথা বলে তারা আমাকে উপর তলায় উঠতে দেন। আমি দোতলার প্রত্যেকটি রুমে রুমে গিয়ে আমার বিষয়টি বলেছি। সবাই আমার সঙ্গে খুব খারাপ ব্যবহার করে বের করে দিয়েছেন। তারা বলেছেন এখন তাদের কিছুই করার নেই।

জান্নাতুল বলেন, অনেক স্বপ্ন নিয়ে ২৫ কিলোমিটার পথ পাঁড়ি দিয়ে এসেছিলাম। এখন মনে হচ্ছে এসব চাকরি আমাদের মতো দরিদ্র পরিবারের মেয়েদের মানায় না। শুনতে পারলাম আগে থেকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হয়ে গেছে।

কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও নিয়োগ কমিটির আহ্বায়ক মুহাম্মদ ওবাইদুর রহমান বলেন, একাধিক প্রার্থীর এমন ঘটনা ঘটেছে বলে আমার জানা নেই। আমার কাছে একজন এসে প্রবেশপত্র দেখিয়েছেন। এটা হয়ত মিস হয়ে যেতে পারে, ভুলও হয়ে যেতে পারে। হয়ত লেখায় ভুলের কারণে ২০ তারিখের জায়গায় ২৩ তারিখ হয়ে গেছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *