নুসরাত হত্যার এক বছর আজ, দ্রুত রায় কার্যকর চায় পরিবার

নুসরাত হত্যার এক বছর আজ, দ্রুত রায় কার্যকর চায় পরিবার

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক


ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যার এক বছর আজ। ২০১৯ সালের ৬ এপ্রিল এইচ এস সি পরীক্ষা দিতে গেলে হল থেকে ডেকে পাশের ভবনের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা তুলে নিতে বললে, রাজি না হওয়ায় তাকে গায়ে কেরোসিন ঢেলে হত্যার চেষ্টা চালায় আসামিরা।

এতে তার শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে যায়। ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় নুসরাত।

মৃত্যুর এক বছর হয়ে গেলেও তার পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তায় তিনজন পুলিশ পাহারায় রয়েছেন। নুসরাতের মা বলেন, করোনা রোগে মারা গেলে মনকে সান্তনা দেয়া যেতো। কিন্তু খুনিরা কত নির্মমভাবে হাত বেধে জীবিত অবস্থায় হত্যা করেছে। তাদের ফাঁসির দণ্ড দ্রুত কার্যকর করা হোক।

মামলার বাদি নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান জানান, আমরা বিচারিক আদালতে ন্যায় বিচার পেয়েছি। উচ্চ আদালতেও আমরা ন্যায় বিচার প্রত্যাশী।

গত বছরের ২৪ অক্টোবরের রায়ে ১৬ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ। পাশাপাশি প্রত্যেক আসামিকে একলাখ টাকা করে জরিমানাও করেন।

আসামিরা হলেন- সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ-দৌলা (৫৭), নুর উদ্দিন (২০), শাহাদাত হোসেন শামীম (২০), কাউন্সিলর ও সোনাগাজী পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম (৫০), সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের (২১), জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন (১৯),হাফেজ আব্দুল কাদের (২৫), আবছার উদ্দিন (৩৩), কামরুন নাহার মনি (১৯), উম্মে সুলতানা পপি (১৯), আব্দুর রহিম শরীফ (২০), ইফতেখার উদ্দিন রানা (২২), ইমরান হোসেন মামুন (২২), সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাদরাসার সাবেক সহ-সভাপতি রুহুল আমিন (৫৫), মহিউদ্দিন শাকিল (২০) ও মোহাম্মদ শামীম (২০)।

২৯ অক্টোবর আসামিদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য (ডেথ রেফারেন্স) মামলার যাবতীয় কার্যক্রম হাইকোর্টে পৌঁছে। ফৌজদারি কার্যবিধি অনুসারে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডাদেশ হলে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য মামলার যাবতীয় কার্যক্রম উচ্চ আদালতে পাঠাতে হয়। সে অনুসারে ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে।

অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পেপারবুক (মামলার যাবতীয় নথি) ছাপানো শেষ করা হয়েছিলো। পরে প্রয়োজনীয় কাজ শেষে শুনানির জন্য মামলাটি প্রধান বিচারপতি বরাবর উপস্থাপন করা হয়।

বাদীপক্ষের আইনজীবী শাহজাহান সাজু বলেন, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুনানির জন্য বেঞ্চ গঠন করেছেন প্রধান বিচারপতি। করোনা ভাইরাসের সংকটময় পরিস্থিতি কেটে গেলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুনানি হবে। করোনা সংক্রমণে রাষ্ট্র কিছু আসামীদের সাধারণ ক্ষমা করলোও নুসরাত মামলার আসামিরা সে ক্ষমার আওতায় আসবে না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

মামলায় ২৮ মে অভিযোগপত্র দাখিলের পর ২০ জুন অভিযোগ গঠন করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। মামলাটি মাত্র ৬১ কার্যদিবসে ৮৭ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্ততর্ক গ্রহণ করা হয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *