নোবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির অফিস ভাঙচুর, তদন্তে ধীরগতি

নোবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির অফিস ভাঙচুর, তদন্তে ধীরগতি

নোবিপ্রবি প্রতিনিধি


অজ্ঞাত দুর্বৃত্তদের দ্বারা গত ১৬ জুলাই নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) সাংবাদিক সমিতির কার্যালয় ভাঙচুর দেখতে পায় সমিতির সদস্যরা। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সামাজিক সংগঠন এবং দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে নিন্দার ঝড় উঠে।

এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবহিত করলে প্রশাসন দুঃখ প্রকাশ করে এবং দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের খুঁজে বের করার আশ্বাস দেয়। কিন্তু সাংবাদিক সমিতির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, ভাংচুরের ঘটনার প্রায় দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনো কোনো সদুত্তর দেয়নি প্রশাসন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়,গত ২১ জুলাই (মঙ্গলবার) এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সহকারী প্রক্টর মজনুর রহমানকে এ ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। তদন্ত কাজের অগ্রগতির বিষয়ে তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, গতকাল রবিবার শেষ কর্ম দিবসে আমি তদন্ত কমিটির অফিস কপি হাতে পেয়েছি এবং প্রক্টরিয়াল বডির পক্ষে তদন্ত শুরু করেছি। আসলে এক সদস্য বিশিষ্ট কোনো তদন্ত কমিটি হয় না। ঈদের পর ক্যাম্পাস খুললে তদন্ত কমিটি বর্ধিত করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর আবেদন করবো। আশা করছি পরবর্তী ৪/৫ কর্মদিবসের মধ্যে আমরা তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে পারবো।

অফিস আদেশ প্রদানের বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. আবুল হোসেন বলেন, অফিস আদেশ তৈরির পরের দিনই তা রেজিস্ট্রার অফিস থেকে পাঠানো হয়েছে৷ দেরি হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে এই ব্যাপারে তিনি অবগত নন বলে জানান। তিনি বলেন, এটি মঙ্গলবারেই রেজিস্ট্রার অফিস দিয়ে দিয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার (২১ জুলাই) তদন্ত শুরুর বিষয়ে জানতে চাইলে মজনুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার বিকেলে অফিস আদেশ তৈরি হওয়ার কথা, তবে এখনো হাতে পাইনি। এসময় তিনি পরদিন প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য হিসেবে বুধবার থেকে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন।

এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রহিম বলেন, সাংবাদিক সমিতি প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জন এবং শিক্ষক,শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী সকলের অধিকার নিয়ে সর্বদা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচার করে আসছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস এবং ছাত্র পরামর্শ নির্দেশনা বিভাগের সন্নিকটে সাংবাদিক সমিতির অফিসে হামলার ঘটনাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এই ধরনের হামলা হয়তো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দুর্বলতা অথবা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মৌনসম্মতিতে এই ঘটনা হয়েছে বলে আমি মনে করি। হামলার প্রায় দুই সপ্তাহ হলেও এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা নেয় নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তদন্ত কমিটি গঠন করলেও তার কোন অগ্রগতি নেই যেটা তদন্ত কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত ওনার বক্তব্যেই সুস্পষ্ট। সাংবাদিক সমিতির হামলার ঘটনায় অতিদ্রুত জড়িতদের বের করে যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন। অন্যথায় সারা বাংলাদেশের সাংবাদিকদের সাথে নিয়ে নোবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতি কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে। বিচারহীনতার নোবিপ্রবি শুর হলে এর পরিণাম কিন্তু প্রশাসনের জন্য ভয়াবহ হবে।

নোবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সবুজ বলেন, সাংবাদিক সমিতির অফিস ভাংচুরের দুই সপ্তাহ পার হলেও এখন পর্যন্ত প্রশাসনের নেয়া পদক্ষেপ হতাশাজনক। ঈদের আগে শেষ কর্মদিবসে দায়সাড়া ভাবে এক সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ঘটনায় দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি এখনো আমরা দেখতে পাচ্ছি না। সাংবাদিক সমিতির অফিস ভাংচুরের ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিয়ে সংশয় প্রকাশেরই সুযোগ করে দেয়। তাই প্রশাসন কে অনুরোধ করছি বিষয়টি কে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে অতিদ্রুত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করুন এবং দোষীদের শাস্তির আওতায় আনার ব্যবস্থা করুন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *