পরিচ্ছন্নতার অনন্য ‘দৃষ্টান্ত স্থাপন’ করল তিতুমীরের রাজ্জাক-নুর
![পরিচ্ছন্নতার অনন্য ‘দৃষ্টান্ত স্থাপন’ করল তিতুমীরের রাজ্জাক-নুর](https://thecampustoday.com/wp-content/uploads/2019/12/razzak-nur-the-campus-toda.jpg)
আরাফাত হোসেন, জিটিসি- রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজ (জিটিসি) সংলগ্ন ফুটওভার ব্রিজের নিচে প্রস্রাবের গন্ধে নাক সিঁটকে হাটতে দেখা যায় শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের জনসাধারণের। হাটতে হাটতে জুতার নিচে কর্দমাক্ত কিছু লেপ্টে যায়। নিয়মিত প্রস্রাব করার ফলে আর পানি বের হতে না পেরে জমাট বেধে যায়।
প্রত্যহ এই দৃশ্য দেখা যেত তিতুমীর কলেজ সংলগ্ন ফুটওভার ব্রিজের নিচে। ব্রিজের উপরে চলে শিক্ষার্থীদের আড্ডা আর নিচে চলে প্রস্রাব! চোখে এই দৃশ্য দেখা যতটা বিশ্রী তার থেকেও বেশি বিব্রতকর।
প্রসাবের দুর্গন্ধে এখন আর আগের মত আড্ডা জমে ওঠে না। নাকে মুখে মাস্ক পরে ওই স্থান ত্যাগ করতে হয়। পথচারীরা রাস্তা পারাপারে ব্যবহার করবে এই ওভারব্রীজ সেখানে উল্টো এটাকে এড়িয়ে যেতেই পথচারীরা নেমে পড়ে মধ্য রাস্তায়!
কিছু অসচেতন লোকের ফুটওভার ব্রীজের নিচে মুত্রত্যাগের কারণে প্রকট দুর্গন্ধে প্রায় ব্যবহারের অনুপযোগী ওভারব্রীজটি। যা দিন দিন আরো অসহনীয় হয়ে উঠছে। একসময় পথচারী চলাচলের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের আড্ডা জমে উঠতো ওভারব্রীজে। কিন্তু এই অসহনীয় দুর্গন্ধে এখন প্রায় নির্জীব থাকে ওভারব্রীজটি।
সবাই শুধু নাক সিঁটকে মূত্র ত্যাগকারীদের ধিক্কার ও নিন্দা জানিয়েই ক্ষ্যান্ত হয়। কেউ দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসে না জায়গাটাকে পরিচ্ছন্ন করতে। অথচ কবি বলেছেন, “আমরা যদি না জাগি মা কেমনে সকাল হবে, তোমার ছেলে জাগলে মাগো সকাল হবে তবে।”
আমরা জাগলে, আমরা সচেতন হলে, আমরা দায়িত্ব নিলে তবেই পরিচ্ছন্ন হবে দেশ। পরিচ্ছন্ন হবে আমাদের আশপাশ। কারণ, ‘এই দেশ আমার, এই শহর আমার। এই পথ আমার, পরিস্কার রাখার দায়িত্বও আমার।’
এই কথাই যেন প্রমাণ করে দিল তিতুমীরের দুই শিক্ষার্থী আব্দুর রাজ্জাক এবং নুর মোহাম্মদ সুমন। দুইজনে মিলেই পানি দিয়ে ধুয়ে, সোডা ছিটিয়ে পরিচ্ছন্ন করলো ওভারব্রীজের নিচের জায়গাটি। শুধু এতটুকুই নয় তারা সেখানে টানিয়ে দিয়েছে বোর্ড ও লিফলেট, যাতে বড় করে লেখা “পরিচ্ছনতার স্বার্থে এখানে প্রসাব করা নিষেধ”। এখন সেখানে প্রায় দুর্গন্ধ নেই বললেই চলে। পথচারীরা পারাপার হচ্ছে নির্বিঘ্নে।
এই ব্যাপারে জানতে চাইলে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “তিতুমীর কলেজ সংলগ্ন ফুটওভার ব্রীজের নিচে প্রচন্ড প্রসাবের দুর্গন্ধের ব্যাপারে কমবেশি সবাই জানে। এই অসহনীয় দুর্গন্ধের কারণে ফুটওভার ব্রীজ ব্যাবহারে প্রতিদিন হয়রানির শিকার হয় হাজারো শিক্ষার্থী এবং সাধারণ পথচারীবৃন্দ। আমরা দায়িত্ব নিয়ে ওভারব্রীজের নিচের ফুটপাত পানি দিয়ে পরিস্কার করে পাউডার দিলাম এবং লিফলেট লাগালাম। আশা করি আর কেউ এখানে প্রসাব করবে না। দেশটাতো আমাদেরই, তাই এর পরিচ্ছন্নতার দায়িত্বও আমাদের।”
তাদের এমন উদ্যোগকে সকলে স্বাগত জানিয়েছেন। মাহমুদুল হাসান আবিদ নামে অনার্স প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, শ্রদ্ধা জানাই এসব মহৎ চিন্তার অধিকারীদের। আমাদের দায়িত্বে, আমাদের হাত ধরে এগিয়ে যাক সমাজ, এগিয়ে যাক বাংলাদেশ।