ফুটবল খেলোয়াড়| সাহিত্য

আমাদের সাবুপুরার উজ্জ্বল হোসেন ফুটবল খেলোয়াড়,
হাতে পায়ে মুখে শত আঘাতের ক্ষতে খ্যাতি লেখা তার।
সন্ধ্যা বেলায় দেখিবে তাহারে পটি বাঁধি পায়ে হাতে,
মালিশ মাখিছে প্রতি গিঠে গিঠে কাত হয়ে বিছানাতে।
বাসার সবাই হয় লবেজান সেঁক দিতে ভাঙ্গা হাড়ে,
সারা রাত শুধু ছটফট করে কেঁদে কেঁদে ডাক ছাড়ে।
আমরা তো ভাবি ছ’মাসের তরে পঙ্গু সে হল হায়,
ফুটবল-টিমে বল লয়ে কভু দেখিতে পাব না তায়।

প্রভাত বেলায় খবর লইতে ছুটে যাই তার ঘরে,
বিছানা তাহার শূন্য পড়িয়া ভাঙা খাটিয়ার পরে।
টেবিলের পরে ছোট বড় যত মালিশের শিশিগুলি,
উপহাস যেন করিতেছে মোরে ছিপি- পরা দাঁত তুলি।
সন্ধ্যা বেলায় খেলার মাঠেতে চেয়ে দেখি বিস্ময়ে,
মোদের সাবুপুরার উজ্জ্বল হোসেন আগে ছোটে বল লয়ে!
বাম পায়ে বল ড্রিবলিং করে ডান পায়ে মারে ঠেলা,
ভাঙা কয়খানা হাতে পায়ে তার বজ্র করিছে খেলা।
চালাও চালাও আরও আগে যাও বাতাসের মত ধাও,
মারো জোরে মারো- গোলের ভেতরে বলেরে ছুঁড়িয়া মারো।
গোল-গোল-গোল, চারিদিক হতে ওঠে কোলাহলকল,
জীবনের পণ, মরণের পণ, সব বাঁধা, পায়ে দল।
গোল-গোল-গোল-মোদের সাবুপুরার উজ্জ্বল হোসেন জয়,
ভাঙা দুটি পায়ে জয়ের ভাগ্য লুটিয়া আনিল আজি।
দর্শকদল ফিরিয়া চলেছে মহা-কলবর করে,
উজ্জ্বল হোসেন খোড়াতে খোড়াতে আসে যে নিজের ঘরে।
ঘরের সবাই হয়রান হয় পায়েতে মালিশ মাখি,
বে-ঘুম রাত্র কেটে যায় তার চীৎকার করি ডাকি।
সকালে সকালে দৈনিক খুলি মহা-আনন্দে পড়ে,
উজ্জ্বল হোসেন জয় কাল যা খেলেছে কমই তা নজরে পড়ে।

লেখকঃ তাসফীর ইসলাম (ইমরান)
শিক্ষার্থীঃ বাংলাদেশ সার্ভে প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন