বিচ্যুতি

বিচ্যুতি

বিচ্যুত
মোঃ আলমগীর হোসেন



যখন আমি জন্মেছিলাম,
গা ছিল উলঙ্গ!
ধীরে ধীরে বীর পালোয়ান,
আসে নানা রঙ্গ!

হাপুর পেরে আপন ঘরে
সারাটা দিন চলা,
ভাঙ্গা ভাঙ্গা শব্দযোগে
কতো কথা বলা!

মায়ের কোলে হেলে দুলে
আরামে ঘুম যাওয়া,
ক্ষুধা লাগলে মাতৃদুগ্ধে
দারুণ খাদ্য পাওয়া!

মায়ের কাছে পড়া শুরু,
দারুণ বিদ্যালয়!
অসৎ সঙ্গ ত্যাগ করিও,
মা জননী কয়।

মিথ্যাটাকে দূরে রেখে
চলিও জীবন পথে,
হিংসা বিদ্বেষ ত্যাগ করিও
সকল লোকের সাথে।

অহমিকা, মরিচিকা!
বেঁচে থাকতে নয়;
পাপের পথে যারা চলে,
তারা ই ধ্বংস হয়।

বড় হতে পিতার কাঁধে
গ্রামটা জুড়ে ঘোরা,
কতো সুন্দর ছিল তখন
দারুণ বসুন্ধরা!

বিদ্যালয়ে দিয়ে পিতায়
চলে যেতো কাজে;
পিতার কন্ঠে মায়াবী ডাক
আজো কানে বাজে!

বড়ো হয়ে ফেলি হারিয়ে
মাতা পিতার সঙ্গ,
আনন্দ আর হৈ হুল্লোড়ে
নিরবতা ভঙ্গ।

ঘরের বাইরে দেশটা জুড়ে
নানান রকম সঙ্গী
প্যান্ট পড়া শিখেছি তাইতো
ভালো লাগে না লুঙ্গি।

ভালো লাগে না খাঁটি সোনা,
চকচক করে তামা!
দেশী পোশাকে মন ভরে না,
পড়ি বিদেশী জামা।

দেশী ভাষায় কথা বলায়
মিশ্রণ করি কিছু,
সবাই চলছে সামনের দিকে,
আমি ছুটছি পিছু।

চাল চলনে কাজে কর্মে
আদর্শ আর নাই;
স্বদেশী গান ত্যাগ করেছি,
ভিন দেশী গান গাই।

মোহে আছি, ভুলেই গেছি
নৈতিকতার পথ;
অধিক পাওয়ার ধান্দা থেকে
ভেঙ্গেছি শপথ।

মায়ের শিক্ষা, পিতার দীক্ষা
সব হয়েছে সাঙ্গ;
যখন আমি জন্মেছিলাম,
গা ছিল উলঙ্গ!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *