‘বিদায় টিএসসি’: জাতিসংঘের ‘রিয়েল লাইফ হিরো’ সৈকতের স্ট্যাটাস

‘বিদায় টিএসসি’: জাতিসংঘের ‘রিয়েল লাইফ হিরো’ সৈকতের স্ট্যাটাস

ঢাবি টুডে


মানবতার ফেরিওয়ালা তানভীর হাসান সৈকত। ‘বিদায় টিএসসি’ শিরোনামে নিজের ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে টিএসসিকে বিদায় জানালেন তিনি।
মানবিক কার্যক্রমের মাধ্যমে জাতিসংঘের ‘বাস্তব জীবনের নায়ক’(রিয়েল লাইফ হিরো) হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন তানভীর।

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হলে গত ১৮ মার্চ বন্ধ হয়ে যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। বন্ধের পর শিক্ষার্থীরা যখন বাড়ি চলে যায়, তখন ক্যাম্পাসের ছিন্নমূল ও ভাসমান মানুষের কথা চিন্তা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) থেকে যান ডাকসু এই সদস্য।
টিএসসিতে অবস্থান নিয়ে তিনি তার দীর্ঘদিনের কার্যক্রম শেষ করে আজ শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে এ স্থল ত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছেন।

এদিকে তিনি ‘বিদায় টিএসসি’ শিরোনামে নিজের ফেসবুকে দেয়া স্ট্যাটাসে তানভীর জানান, দেশের প্রয়োজনে নৈতিক, মানবিক দায়বোধ থেকে সঙ্কটাপন্ন সময়ে টিএসসিতে অবস্থান করে আমরা আমাদের কার্যক্রম চালিয়েছি। এখন আমাদের কার্যক্রম সমাপ্ত হয়ে গেছে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তিতে অবস্থান করাটা নৈতিকভাবে সমীচীন মনে করছি না।

মানবতার ফেরিওয়ালা তানভীর বলেন, করোনা দুর্যোগের শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে কথা বলে আমরা টিএসসিতে অবস্থান করে অসহায়, ছিন্নমূল, ভাসমান মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিয়ে পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। একটানা ১২১ দিন এই প্রয়াস অব্যাহত রাখার পর সময়ের প্রয়োজনে বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে সুনামগঞ্জ ছুটে যাই আমাদের দল নিয়ে। সুনামগঞ্জ থেকে ফেরার পর আমাদের কয়েকজন সদস্য শারীরিকভাবে অসুস্থ বোধ করায় টিএসসির গেস্ট হাউজে কোয়ারান্টিনে থাকে।

তিনি আরো বলেন, গত কয়েক মাস একটা পরিবার হয়ে আমরা টিএসসিতে ছিলাম। প্রান্তিক মানুষের জীবন সংগ্রামটাকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে। আমার জীবনে এই কয়েক মাস একটি অনন্য এবং বিশাল অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিশেষত টিএসসির সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদার সহযোগিতার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। এই সময়টাকে এবং এই মানুষগুলোকে আমি খুব মিস করবো। আমাকে এবং আমার সাথে যারা স্বেচ্ছাশ্রম দিয়েছেন তাদেরকে আপনাদের শুভাশিস-প্রার্থনায় রাখবেন।

তানভীর সম্পর্কে ইউএনওসিএইচএর ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, গত মার্চে বাংলাদেশে করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস ছেড়ে নিজেদের বাড়িতে চলে যান। কিন্তু তানভীর ও তাঁর সঙ্গের কয়েকজন ক্যাম্পাসে থেকে প্রান্তিক মানুষকে সহায়তা করেন। গত এপ্রিলের শুরু থেকে টানা ১১৬ দিন মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনার পর তিনি সুনামগঞ্জের বন্যাকবলিত মানুষকে সহায়তা করতে সেখানে যান। বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছ থেকে অর্থসহায়তা নিয়ে তিনি মানবিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *