বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে কবে?

বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে কবে?

প্রফেসর ড. আনন্দ কুমার সাহা


অনেক শিক্ষার্থী ফোন করে জানতে চায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে কবে? সেটা আমার অজানা। তাই সঠিক উত্তর দিতে পারি না। ২৫ আগস্টের আগে মনে হচ্ছিল- শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে একটা ঘোষণা আসতে পারে।

কয়েকদিনের মধ্যে আশা-নিরাশার ব্যাপারটি লক্ষ্য করলাম। পত্রিকায় যেভাবে লেখা তাতে মনে হচ্ছিলো সেপ্টেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে পারে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছিলো ২৫ আগস্ট মন্ত্রণালয় বা সরকারের পক্ষ থেকে খোলার বিষয়ে কিছু একটা জানানো হবে। ২৫ আগস্ট জানতে পারলাম আপাতত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলছে না। বিশেষজ্ঞমহল খোলার বিষয়ে আরও ধৈর্য্য ধরতে বলেছেন।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি কিছুটা ভিন্নতর। অনেকে অতীত অভিজ্ঞতায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলি খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিতে কিছুটা ইতস্তত বোধ করেন। যুব সম্প্রদায়, টগবগে রক্ত করোনার কারণে- কিছু ঘটে গেলে সামাল দেয়া যাবে কি-না এ ব্যাপারে পিছুটান থাকে।

বাংলাদেশে করোনার পরিস্থিতি দেখে শিক্ষার্থীরা বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এ মুহুর্তে খোলা যেতে পারে বলে তারা মনে করে। তবে প্রাথমিক-মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি খোলার বিষয়ে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার জন্য একটা পরীক্ষামূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যেতে পারে :

(১) মাস্টার্স পরীক্ষার্থী যাদের শুধুমাত্র পরীক্ষা বাকি আছে- তাদের পরীক্ষা শেষ করতে হবে। যেসব বিভাগে ব্যবহারিক কিংবা মৌখিক পরীক্ষা অথবা থিসিস কিংবা প্রজেক্ট বাকি-তাদের কাজগুলি শেষ করতে পারলে মাস্টার্স পর্ব শেষ হয়ে যাবে। এতে হলগুলির উপর বিশেষ কোন চাপ পড়বে না।

(২) মাস্টার্স শেষ হওয়ার পর স্নাতক বিশেষ করে যাদের টার্মিনাল পরীক্ষা শেষ করতে পারলে- মাস্টার্স এবং স্নাতক ডিগ্রি পেতে পারতো। এতে করে ক্যাম্পাসে সীমিতসংখ্যক শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সহজ হতো।

এই পরীক্ষা দু’টি শেষ করতে কমপক্ষে তিন মাস সময় লাগবে। এরই মধ্যে বোঝা যাবে করোনা পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে। সীমিত পরিসরে বিশ্ববিদ্যালয় খুললে পরিস্থিতি বা পরিবেশ অনুমান করা যাবে এবং সরকার কিংবা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া সহজ হবে বলে মনে করি।

কোন কারণে করোনা সংক্রমণ অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আবারও বন্ধ করা যাবে তাতে কেউ আপত্তি করবে না। ডঐঙ বলেছে, আগামী দু’বছর এভাবেই করোনাকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের চলতে হবে। তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সীমিত পরিসরে খোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া যেতে পারে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৮ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। সকল শিক্ষার্থী একসাথে ক্যাম্পাসে আসলে সামাজিক দূরুত্ব বা করোনা সংক্রামণ নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হতে পারে। সেকারণে পর্যায়ক্রমে (মাস্টার্স, স্নাতক) ক্লাস খুললে ভাল হবে বলে অনেকের ধারণা। শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ এ প্রসঙ্গ বিবেচনা করে দেখতে পারেন।

লেখক: উপ-উপাচার্য
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *