বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বিজয় ভাবনা

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বিজয় ভাবনা

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্কঃ রাত পেরুলেই শুরু হবে বাংলাদেশের এক গৌরবজ্জ্বল দিবস যে দিবসে বাঙালি জাতি পেয়েছে বিজয়। বিজয় দিবস নিয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিজয় ভাবনা তুলে ধরেছেন ক্যাম্পাস টুডে কুবি প্রতিনিধির ইকবাল মুনাওয়ার


বাংলাদেশ আজ খেলাধুলা, শিক্ষা, সংস্কৃতি সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশ্বের খাতায় নাম লেখাচ্ছে। এসবের অবদানে বিনম্র শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি সে সব শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের, যাদের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ নামের উৎপত্তি।

পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর নিপীড়ন, শোষণ আর দুঃশাসনের বেড়াজাল অতিক্রম করে ১৯৭১ সালের এই দিনে বিজয়ের প্রভাতী সূযের্র আলোয় আলোকিত হয়েছিল বাংলার মাটি। অবসান হয়েছিল পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর নিবির্চার, শোষণ আর নিযার্তনের কালো অধ্যায়। তাই ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস, মুক্তির দিবস। বিজয় দিবস আসলে আমাদের ভাবনা মনের হৃদয়ে উঁকি দিতে থাকে। তাই এ দিন আমাদের সবার অতি প্রিয়, অতি আনন্দের দিন। এই দিনটির মাধ্যমে আমরা নতুন প্রজন্ম ও বিশ্বকে বারবার মনে করিয়ে দিই আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও শহীদদের কথা। মনে করিয়ে দিই বাংলাদেশ নামে একটি দেশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের কথা।

বর্তমান বাংলাদেশের অর্থ ও সম্পদ নির্দিষ্ট একটা শ্রেণি ও পেশার মানুষের কাছে সীমাবদ্ধ। বিজয় দিবসে আমার ভাবনা হলো অর্থনৈতিক বৈষম্য মুক্ত দেশ গড়া।


হেলাল উদ্দিন
৪র্থ বর্ষ, অর্থনীতি বিভাগ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।



১৬ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস।১৯৭১ সালের এই দিনে আমাদের এই ভূমি মুক্ত হয়,আমরা লাভ করি মুক্তি।৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে এই ভুমিতে থাকা সবাই লাভ করে স্বাধীনতা। শহীদেরা তাঁদের শেষ রক্ত বিন্দু দিয়েছে শুধু মাত্র পশ্চিম পাকিস্তানের শাসন ও শোষণ হতে মুক্ত হতে।

জানতে হবে পশ্চিম পাকিস্থানের শাসন ও শোষণ কেমন ছিলো। দেখতে হবে শহীদগণ যে লক্ষ্যে দেশকে পরাধীন হতে মুক্ত করেছে তাদের লক্ষ্য বাস্তবায়ন হয়েছে কিনা। ১৯৭১ হতে ২০১৯ সাল অবধি এই ৪৮ বছরে মুক্তিকে কীভাবে দেখেছি বা কতটুকু মুক্তির স্বাধ গ্রহন করেছি? এর উওর আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। কিসের মুক্তির জন্য পশ্চিম পাকিস্থান হতে শহীদেরা মুক্তি এনে দিয়েছে তা জানতে ও বুঝতে হবে।

৭১ সালের মুক্তির পর এখন অবধি দেশের উন্নতি কী পরিমাণ হয়েছে,তা দেখতে হবে এমন দেশের সাথে মিল রেখে যেসব দেশ স্বাধীন হয়েছে এর সমসাময়িক। তরুন সমাজ এই মুক্তিকে কিভাবে ব্যবহার করছে তাও দেখতে হবে।আশাকরি তরুন প্রজন্ম শুধু মাত্র দিবসেই এই বিজয় উদযাপন সীমাবদ্ধ না রেখে সবার মাঝে সর্বদা এই বিজয়ের স্বাধ পৌঁছে দিতে নিরন্তর কাজ করে যাবে।


সাইফুল ইসলাম
নৃবিজ্ঞান বিভাগ, ৩য় বর্ষ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।



১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর গৌরবময় বিজয়ের মাধ্যমে স্বাধীন জাতি হিসেবে বাঙালির জয়যাত্রার শুরু । এ দিনে নিজ পরিচয়ে আমরা বিশ্বের দরবারে মাথা তুলে দাঁড়াবার সুযােগ পাই । এ দিনটির জন্যই সারা বিশ্বে বাঙালি জাতি ও বাংলাদেশের মর্যাদা আজ সুপ্রতিষ্ঠিত । বিজয় শব্দটির অন্তর্নিহিত তাৎপর্য অনেক,শব্দটা যেন এক মুক্ত খাঁচার পাখির মত কোনো পরাধীনতা নেই,নেই কোনো সীমানা, শুধুই মুক্তভাবে স্বপ্ন দেখা।

এ মহান দিবসকে উৎসর্গ করে আমরা স্বপ্ন দেখি বড় হওয়ার, ছড়িয়ে দেয় ভালোবাসা। এ ভালোবাসা ব্যাপ্ত হলে দুর্নীত,নৈরাজ্য, হানাহানি,খুনাখুনি সব হয়ে যাবে আনত ঘরে ঘরে ঘটবে বিজয়ের প্রসরাতা। জয় হোক বাঙালির। জয় হোক মানবতার।


আরমান সাজ্জাদ
মার্কেটিং বিভাগ, ২য় বর্ষ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।



আমরা বর্তমান তরুণরা ৭১ এর বিজয় দিবস দেখিনি, তবে গ্রামে গেলে মুক্তিযোদ্ধা দের সাথে আড্ডায় যুদ্ধের ইতিহাস শুনি, তাদের ইতিহাস শুনলে মনে হয় তাদের দেশপ্রেম আর আমাদের দেশপ্রেমের মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য, তারা দেশের জন্য জীবন বাজী রেখেছিল আর আমরা তো সামান্য টাকার লোভ সামলাতে পারিনা। এই বিজয় দিবসে তরুণদের প্রত্যাশা এটাই থাকবে, যে স্বপ্ন দেখে তারা দেশ রক্ষার জন্য নেমেছিল আমাদের ঘুমেও যেনো সে স্বপ্নটি আসে।


তাহমিদুর রহমান ফাহিম
ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস, ২য় বর্ষ
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।



৩০ লক্ষ শহীদ আর ২ লক্ষ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের ফসল আমাদের এই স্বাধীন বাংলাদেশ। ১৬’ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস যে সকল বীরযোদ্ধার রক্তের বিনিময়ে পেয়েছি তাদের প্রতি জানায় বিনম্র শ্রদ্ধা।

আজ স্বাধীনতার ৪৮ বছর পর ও বিজয়ের চেতনা থেকে আমরা অনেক দূরে। বিজয় দিবসের চেতনা শুধু এই নয় যে, এই দিনে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া, শ্রদ্ধা জানানো আর সারা বছর ভুলে থাকা।

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সঠিকভাবে জানার মধ্য দিয়ে শহীদদের ঋণকে সারাবছর হৃদয়ে লালিত করে কর্মের যে কোন স্তর থেকে দেশের জন্য কাজ করে অসাম্প্রদায়িক উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রত্যয়ই একমাত্র বিজয়ের চেতনা বাস্তবায়ন করা।


হুমায়রা জামান মম
২য় বর্ষ, ইংরেজি বিভাগ,
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।



সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *