ভিক্ষুক নাজিমউদ্দীনের দৃষ্টান্ত বিশ্বে অনন্য:প্রধানমন্ত্রী

| ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক | Avatar

ক্যাটাগরি : ,

জাতীয় টুডেঃ ভিক্ষুক নাজিম উদ্দীন নিজের সঞ্চিত সব অর্থ করোনাদুর্গতদের জন্য করোনা তহবিলে দান করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজর কেড়েছেন । নিজের ভাঙা ঘরটি মেরামতের জন্য বহুবছর ধরে টাকা জমিয়েছিলেন শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার এই বাসিন্দা। সেই অর্থই দান করে দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী অনেক খুশি হয়েছেন বলে তার দপ্তর থেকে জানানো হয়েছিল এবং পুরস্কৃত ও করেন। আর আজকে তিনি নিজের মুখেই তার প্রশংসায় ভাসালেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেখানে সমাজের উচ্চবৃত্ত বা মধ্যেবৃত্ত ও আগায় নাই,বরং তাদের কটাক্ষ করে বলেন উল্টো তাদের দিলে ভালো হয় সেখানে নিজের তিলে তিলে জমানো টাকা তুলে দেন এই সংকট অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য। অথচ তিনি নিজেই ক্ষতিগ্রস্ত সে চিন্তা না করে তিনি দেশের চিন্তা করেছেন। এটি শুধু বাংলাদেশ নয় সারা বিশ্বের কাছে এটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে মনে করেন তিনি।

আজ করোনা পরিস্থিতি নিয়ে রাজশাহী বিভাগের সকল জেলার সাথে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে এসব বলেন।

এর আগে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলায় গত মঙ্গলবার ভিক্ষুক নাজিম উদ্দীন ইউএনওর করোনা তহবিলে ১০ হাজার টাকা দান করেন। উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের গান্ধীগাঁও গ্রামের মৃত ইয়ার উদ্দিনের ছেলে হতদরিদ্র ভিক্ষুক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন (৮০)। তার তিন ছেলে তিন মেয়ে। কিন্তু ভিক্ষে করেই জীবন চলে তার। তিনি যে শোবার ঘরে থাকেন সেটির খুব খারাপ অবস্থা। ভেন্নাপাতার ছাউনির মত ওই ঘরে বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে। গত দুই বছর ধরে তিনি ৫-১০ টাকা করে জমিয়ে ১০ হাজার টাকা সঞ্চয় করেন। ইচ্ছে ছিল এবার বর্ষাকালের আগেই ঘর ঠিক করবেন। কিন্তু দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর মানুষের দুঃখকষ্ট দেখে ওই বৃদ্ধ ঠিক থাকতে পারলেন না। তাদের কষ্ট দেখে তিনি সিদ্ধান্ত নেন ওই টাকা করোনা তহবিলে দান করবেন। যাতে গরিব মানুষের কাজে লাগে।
সেই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন ঝিনাইগাতীর ইউএনও রুবেল মাহমুদের হাতে টাকা দিলে গরিব মানুষ যথাযথভাবে পাবেন। মঙ্গলবার তিনি জানতে পারেন ইউএনও মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের খাটুয়াপাড়া গেছেন চুরি করা চাল উদ্ধার করতে। সেখানেই ছুটলেন তিনি। পরে ইউএনওকে পেয়ে তার হাতে ১০ হাজার টাকা তুলে দেন।
মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘ভাঙ্গা ঘর ঠিক করবার জন্য ভিক্ষা কইরা ১০ হাজার ট্যাহা জমাইছিলাম। কিন্তু দেশের অহন খুব বিপদ। দেশের মানুষ কষ্ট করতাছে। আমি ইউএনও সাহেবের হাতে ট্যাহা দিলাম। তিনি দশেরে দেক। তারা খাইয়া বাঁচুক। তাইলেই আমি শান্তি পামু। আমার আর কিছু চাওয়ার নাই।’

উল্লেখ্য দাতা ভিক্ষুক নাজিমের জন্য নতুন ঘর তৈরির ব্যবস্থা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে। ঝিনাইগাতীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল মাহমুদ জানান, উপজেলার গান্ধীগাঁও গ্রামের ভিক্ষুক নাজিম উদ্দীন (৮০) তার বাড়ি বানানোর জন্য সঞ্চিত সব অর্থ দান করেছেন। এ সংবাদ নজরে আসে প্রধানমন্ত্রীর। পরে তাকে ফোন দেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিব ফোন দিয়ে আশ্বস্ত করেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন
fb-share-icon
Tweet