ভিসিকে অবগত করেই শিক্ষার্থীদের ‘পতিতা-কুলাঙ্গার’ বলেছি: খোরশেদ

ভিসিকে অবগত করেই শিক্ষার্থীদের ‘পতিতা-কুলাঙ্গার’ বলেছি: খোরশেদ

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক


বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ( বেরোবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর সম্মতিতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের চাটুকার, কুলাঙ্গার, হকার ও পতিতা বলে মন্তব্য করেছেন করোনাকালীন সময়ে নিয়োগ পাওয়া কর্মচারী খোরশেদ আলম।

আজ সন্ধ্যায় তিনি নিজেই মুঠোফোনে এসব কথা অকপটেই স্বীকার করেছেন।

মুঠোফোনে খোরশেদ আলম বলেন, আমি যা কিছু করেছি (ফেসবুক স্ট্যাটাসে শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের আপত্তিকর মন্তব্য) অফিসিয়াল প্রসিডিউর মেইনটেইন করেই করেছি।

কোন ধরনের অফিসিয়াল প্রসিডিউর তিনি পালন করেন- এমন প্রশ্নের জবাবে খোরশেদ জানান, আমার কলাম, নিউজ লেখালেখি সবকিছু সম্পর্কে ভাইস চ্যান্সেলর স্যার অবগত। আমি তাকে জানিয়ে সবকিছু করেছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ পেয়েছেন কবে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা হওয়ার পর ১৯ মার্চ নিয়োগ পেয়েছি।

উল্লেখ্য এর আগে গত শুক্রবার রাতে নবপ্রজন্ম শিক্ষক পরিষদ চার সাংবাদিকের নাম উল্লেখ করে অসাংবিধানিক ও আপত্তিকর এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।

এরপরই এ কর্মচারী বিশ্ববিদ্যালয়ের চার সাংবাদিককে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। এতে শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের “পতিতা, চাটুকার, কুলাঙ্গার, হকার ” বলে উল্লেখ করেছেন।

এদিকে কর্মরত সাংবাদিকদের নিয়ে ‘নবপ্রজন্ম শিক্ষক পরিষদ’র অসাংবিধানিক ও অনৈতিক বিবৃতি এবং শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের নিয়ে ফেসবুকে ‘পতিতা, হকার, চাটুকার, কুলাঙ্গার’ উল্লেখ করে সেই কর্মচারীর দেয়া মানহানীকর মন্তব্যের বিষয়ে ক্যাম্পাসসহ দেশের বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীরব ভূমিকায় রয়েছেন।

সেদিন রাতে নব প্রজন্ম শিক্ষক পরিষদের আহবায়ক সুমাইয়া তাহসিন হামিদা এবং সদস্য সচিব খালিদ হাসান রিয়েল স্বাক্ষরিত একটি বিবৃতি ফেসবুকে শেয়ার করে অভিযোগ করা হয়েছে, সম্প্রতি দুদকের মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন কর্মকর্তাকে বহিষ্কার সংক্রান্ত একটি সংবাদ, বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত চারজন সাংবাদিক (বাংলানিউজ২৪.কমের মাহফুজুল ইসলাম বকুল, যুগান্তরের রাব্বী হাসান সবুজ, মানবজমিন ও ঢাকা টাইমসের ইভান চৌধুরী ও ইত্তেফাকের মোবাশ্বের আহমেদ) তাঁদের পেশাগত প্রধান কার্যালয়ের (কেন্দ্রীয় অফিসের) দৃষ্টি গোচরে আনেননি এবং এ ব্যাপারে তাদের কোন ভ্রুক্ষেপও নেই।

বিবৃতিতে বলা হয়, এই বিষয়টি দায়িত্বরত সাংবাদিকবৃন্দের কাছ থেকে গঠনমূলক কোন প্রতিবেদন পরিলক্ষিত হয়নি। তারা দায়িত্বের অপব্যবহার করছেন তাই উল্লিখিত সাংবাদিকদের সাংবাদিকতা থেকে বিরত রাখার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে প্রশাসন থেকে ব্যবস্থা গ্রহণের দৃষ্টি আকর্ষন করা হয়েছে।

এই প্রেস বিজ্ঞপ্তির সূত্র ধরে সেদিন রাতে বর্তমান উপাচার্যের আমলে করোনাকালীয় সময়ে নিয়োগ পাওয়া পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের ব্যক্তিগত সহকারি (পিএ) সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে ফেসবুকে ‘পতিতা, হকার, চাটুকার, কুলাঙ্গার’ উল্লেখ করে স্ট্যাটাস দেয়। এতে করে এই কর্মচারী ও নবপ্রজন্ম শিক্ষক পরিষদ তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে।

এ ঘটনায় পরদিন তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদসহ শিক্ষক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও কর্মচারীসহ প্রশাসনের সকল সংবাদ বয়কট করে ওই কর্মচারীর শাস্তির দাবিতে ভিসিকে স্মারকলিপি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি। পাশাপাশি দেশের ৩০টি সাংবাদিক সংগঠন থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *