ভুয়া এমবিবিএস ডাক্তার লংকেশ্বর সুমনকে ৬ মাসের কারাদন্ড

ভুয়া এমবিবিএস ডাক্তার লংকেশ্বর সুমনকে ৬ মাসের কারাদন্ড

মো: ইকবাল হোসেন, খুলনা (কয়রা)


করোনা ভাইরাসের অবরুদ্ধ সময়ে জনজীবনে নেমে এসেছে চরম ভোগান্তি। সে ভোগান্তির সুযোগ নিচ্ছে কিছু অসাধু চিকিৎসক, জনপ্রতিনিধি সহ দূর্নীতিগ্রস্থ ব্যক্তিরা। তেমনি এক ভুয়া এমবিবিএস চিকিৎসক লংকেশ্বর ওরফে এ এল সুমন। যিনি হিন্দু হয়েও মুসলিম পরিচয়ে জনসাধারণকে সর্বময় রোগের হাতুড়ে চিকিৎসায় অর্থ হাসিল করছে দিনের পর দিন।

খুলনা জেলার দক্ষিণাঞ্চল সুন্দরবন কোল ঘেঁষা আম্পান ক্ষতিগ্রস্ত কয়রা উপজেলা। এ উপজেলা সদরের ফুলতলা বাজার শান্তি ক্লিনিকে চিকিৎসা দিতেন লংকেশ্বর সুমন। গত সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকালে লংকেশ্বর ওরফে এ এল সুমন নামে ওই ভূয়া এমবিবিএস চিকিৎসকে গ্রেফতার ও ৬ মাসের কারাদন্ড দেন উপজেলা ভ্রাম্যমান আদালত।

কয়রা উপজেলা প্রসাশন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে, ফুলতলা শান্তি ক্লিনিকে ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নূরে-ই আলম সিদ্দিকি (উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি) অভিযান চালান। অভিযানে ভূয়া চিকিৎসক লংকেশ্বর সুমনকে গ্রেফতার ও ছয় (০৬) মাসের কারাদণ্ড শেষে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। সাজাপ্রাপ্ত আসামি লংকেশ্বর সুমন সাতক্ষীরার আশাশুনি থানার শান্তিপদের ছেলে।

তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, হিন্দু ধর্মাবলম্বী লংকেশ্বর ওরফে এ এল সুমন যশোরে ভুয়া চিকিৎসক সেজে চিকিৎসা দিতেন। কিন্তু ভুয়া চিকিৎসার দায়ে জেল খাটতে হয় তাকে। পরে দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়লে পালিয়ে কয়রায় চলে আসেন। নতুন কৌশল অবলম্বন করে মুসলিম নাম ধারণ করেন এবং ভুয়া সনদ দেখিয়ে নিজেকে এমবিবিএস চিকিৎসক হিসেবে পরিচিত গড়ে তোলেন। পাশাপাশি নিজের ছলচাতুরীকে আরো পাকাপোক্ত করতে বিয়ে করেন এক মুসলিম নারীকে। এভাবে শান্তি ক্লিনিক সহ কয়রায় সর্বত্র চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন ওই চিকিৎসক।

কিন্তু পাপ কখনো বাপকে ছাড়ে না। এদিকে কয়রা উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব অনিমেষ বিশ্বাসের নিকট অভিযোগ করেন যশোরের এক মানবাধিকার সংগঠন। তথ্য যাচাই-বাছাই শেষে পরিচালনা করা হয় ভ্রাম্যমান আদালত এবং নানা জল্পনা কল্পনা শেষে অপরাধীকে পাঠানো হয় জেলে।

প্রসঙ্গত, ওই ভুয়া চিকিৎসক দীর্ঘদিন নিজ নাম পরিবর্তন এবং মুসলিম নামে প্রত্যন্ত গ্রাম-গঞ্জের মানুষের কাছ থেকে চিকিৎসার নামে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিলেন। বিভিন্ন জটিল ও দুরারোগ্য রোগের চিকিৎসায় দিশেহারা হয়ে পড়ে রোগীরা। অবশেষে জীবন বাঁচাতে তাদেরকে আশ্রয় নিয়ে হয় খুমেক, ঢামেক সহ দেশের অন্যান্য সরকারি- বেসরকারি হাসপাতালে। যা সিডর, আইলা এবং আম্পান ক্ষতিগ্রস্ত কয়রাবাসীর জন্য চরম ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলো।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *