মা-বাবা ছাড়া জীবনের প্রথম ঈদ

মা-বাবা ছাড়া জীবনের প্রথম ঈদ

ফিরোজ কবির


বিশ্বজুড়ে মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে বিপর্যস্ত জনজীবন। যা থেকে বাদ যায়নি বাংলাদেশও। এই ভয়ঙ্কর অধ্যায় কতটা বিস্তৃত, বিধ্বংসী অস্থায়ী হবে তা খুবই অনিশ্চিত এখনো। একমাত্র মহান আল্লাহ হেফাজতের মালিক।

জীবনে এই প্রথম মা-বাবা ছাড়া ঈদ উদযাপন করছি। কখনো কল্পনাও করেনি তাঁরা বেঁচে থাকতে তাঁদের ছাড়া ঈদ উদযাপন করতে হবে। জীবনে এই প্রথম ঢাকায় ঈদ করলাম। আসলে এবার ই সঠিক ভাবে অনুধাবন করতে পারছি ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি কাকে বলে? ঢাকার ঈদে এর কিছুই পেলাম না।

খুব মনে পড়ছে গ্রামে পার করে আসা দিন গুলো। মনে পড়ছে পরিবার থেকে শুরু করে প্রতিটি আত্মীয় স্বজনের কথা, প্রতিটি বড় ভাইয়াদের কথা, প্রতিটি বন্ধুর কথা, প্রতিটি শুভাকাঙ্ক্ষীর কথা, মনে পড়ছে আমার ছোট্ট সুখের গ্রামের কথা, গ্রামের প্রতিটি সহজ সরল মানুষের কথা। মনে পড়ছে রোজা শুরু হওয়ার পর থেকে ঈদের পরের দিন গুলোর কথা। মনে পড়ছে ঈদগাহ রঙ্গিন করে সাজানোর কথা।

মনে পড়ছে চাঁদ রাতে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে শেষ রাতে বাড়ি ফিরে মা বাবার বকাবকি শুনা। মা-বাবার পরে মিষ্টি করে বলা তোকে নিয়ে আর পারা যাবেনা, যা তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়, সকাল এ নামাজ পড়তে যেতে হবে। নামাজ শেষে সবার সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়ের কথা।

বাড়ি ফিরে আম্মার হাতের সেমাই, আর বিভিন্ন রকমের পিঠার কথা। বন্ধুদের বাড়ি ঘুরে বেড়ানোর কথা। খুব মনে পড়ছে বিকাল বেলা স্কুল মাঠে সব বন্ধুরা মিলে আড্ডা আর রাতে পিকনিক এর কথা। কতটা মিস করছি গ্রামকে, গ্রামের ঈদ কে, টাইপ করে টা কখনো বোঝান যাবে না। আর সবচেয়ে বেশি মনে পড়ছে মাগো তোমার কথা!

মহান রাব্বুল আলামীনের নিকট একটাই চাওয়া এই পৃথিবী কে আবার সুস্থ, স্বাভাবিক, সুন্দর একটি দিন উপহার দিন। ঈদের চাঁদ যেমন ধীরে ধীরে বড় হয়ে রাতের অন্ধকার দূর করে সমস্ত পৃথিবী আলোকিত করে, তেমনি সেই আলোর মতো আলোকিত হোক আমাদের সবার জীবন।

সবাইকে ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা। ঈদ মোবারক! ঘরে থাকুন, নিরাপদে থাকুন।


লেখকঃ ফিরোজ কবির, প্রাইম ব্যাংক, উত্তরা ব্রাঞ্চ, ঢাকা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *