মেয়াদোত্তীর্ণ নেতৃত্বে চলছে রাবি শিক্ষক সমিতি
![মেয়াদোত্তীর্ণ নেতৃত্বে চলছে রাবি শিক্ষক সমিতি](https://thecampustoday.com/wp-content/uploads/2019/10/ru-campus-today.jpg)
রাবি প্রতিনিধি: মেয়াদোত্তীর্ণ নেতৃত্ব দিয়েই চলছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শিক্ষক সমিতি। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এক বছর পর পর নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও মেয়াদ শেষ হওয়ার আট মাস পরও নির্বাচনের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষকের অভিযোগ করেছেন, করোনা পরিস্থিতির অজুহাত দিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ এই কমিটি ক্ষমতা আকড়ে ধরে রেখেছে।
শিক্ষক সমিতি সূত্রে জানা যায়, শিক্ষক সমিতির সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৯ সালের ১৮ এপ্রিল। নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের হলুদ প্যানেল সাধারণ সম্পাদকসহ ১০টি পদে এবং বিএনপি ও জামায়াত সমর্থিত জাতীয়তাবাদ ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী শিক্ষকদের সাদা প্যানেল সভাপতিসহ ৫টি পদে জয়লাভ করে। এক বছর মেয়াদি এ কমিটি ২০১৯ সালের ৫ মে দায়িত্ব গ্রহণের পর মেয়াদ শেষ হয় ২০২০ সালের ৫ মে।
জানতে চাইলে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম ফারুকী বলেন, কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পরই আমরা অনলাইনে ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে সাধারণ সভা করেছি। সভায় সাধারণ সদস্যদের অধিকাংশই বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচন দেওয়ার পক্ষে ছিলেন না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত তারা আমাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার বৈধতা প্রদান করেন।
যদিও সম্মিলিতভাবে এ ধরনের কোনো বৈধতা দেয়া হয়নি বলে দাবি করছেন ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক সুলতানুল ইসলাম টিপু। তিনি বলেন, আমরা সাধারণ সদস্যরা মৌখিকভাবে বেশ কয়েকবার শিক্ষক সমিতিকে বলেছি এবং কিছুদিন আগে ৭৪ জন শিক্ষক স্বাক্ষরিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষকদের পক্ষে একটি লিখিত বিবৃতি দিয়েছি। সেখানে জানতে চেয়েছি শিক্ষক সমিতির মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি আর কতকাল ক্ষমতায় থাকবে। যেখানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন দিচ্ছে সেখানে রাবিতে শিক্ষক সমিতির নির্বাচন দিতে সমস্যা কোথায়?
অধ্যাপক টিপু আরো বলেন, ‘এছাড়া তারা যে কমিটির বৈধতা নিয়েছেন এমন কোনো লিখিত ডকুমেন্টসও নেই। বর্তমানে এই কমিটি পুরোপুরি ‘অবৈধ’।’
কবে নাগাদ নির্বাচন এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আশরাফুল ইসলাম খান বলেন, সমিতির অধিকাংশ সাধারণ শিক্ষকরা বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচন না দেওয়ার পক্ষে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নির্বাচন দিলেও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যেহেতু এর পক্ষে না তাই আমরা দেইনি। তবে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিলে আমরা এক মাসের মধ্যে নির্বাচন দেবো।
করোনার অজুহাত দেখিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ক্ষমতা আকড়ে ধরে রেখেছে বলে মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শহীদ ইকবাল। তিনি বলেন, সাংবিধানিকভাবে রাবি শিক্ষক সমিতি মেয়াদ শেষ করে ক্ষমতা ধরে রাখতে পারে না। আসলে তারা করোনার অজুহাত দেখাচ্ছে। কিন্তু অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে তো নির্বাচন হচ্ছে। এর মানে এরা ক্ষমতা আকড়ে ধরে থাকতে এমনটা করছে। এটা অনৈতিক এবং সংবিধান বিরোধী।