রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে উত্ত্যক্তের অভিযোগ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে উত্ত্যক্তের অভিযোগ

ওয়াসিফ রিয়াদ, রাবি প্রতিনিধি


রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ফোকলোর বিভাগের এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ উঠেছে ইতিহাস বিভাগের আরেক ছাত্রের বিরুদ্ধে। আজ রবিবার দুপুরে ফোকলোর বিভাগের সামনে এই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী ও প্রত্যক্ষদর্শী সহপাঠীরা।

ভুক্তভোগী ফোকলোর বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের ছাত্রী। এদিকে অভিযুক্ত ওই শিক্ষার্থী ইতিহাস বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের সাকিব আহমেদ শিশির। ড্রপ আউট হওয়ার কারনে এখন তিনি দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছেন।

উত্ত্যক্তের বিষয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেন, ‘আমাদের বিভাগের অনুষ্ঠান হওয়ায় গান অনুশীলন করছিলাম। এমন সময় একটি ছেলে আমায় ডেকে নেয়। কেন ডেকেছে জানতে চাইলে তিনি আমাকে উদ্দেশ্য করে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করে এবং সজোরে চিৎকার করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এমতাবস্থায় আমি তার শার্টের কলার ধরি। পরে বিভাগের বন্ধু এবং শিক্ষকরা আসলে ছেড়ে দেই।’

এদিকে অভিযুক্ত সাকিব আহমেদ শিশিরের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে প্রথমে তিনি বিষয়টি স্বীকার করে বলেন বিভাগের বড় ভাই তাকে এই কাজটি করতে বলেছেন। বড় ভাইয়ের নাম জানতে চাইলে তিনি কিছুক্ষণ পরে জানাবেন বলে ফোন কেটে দেন। কিছুক্ষণ পরে ফোন দিলে তিনি বলেন, এর আগে তিনি যা করেছেন এবং যা বলেছেন সব ভয়ে এবং নার্ভাস হয়েই বলেছেন।

অভিযোগ পাওয়া গেছে, এর আগেও ফোকলোর বিভাগের ছাত্রীসহ শিক্ষিকাকেও উত্ত্যক্তের শিকার হয়েছেন। এছাড়া ফোকলোর বিভাগের গ্যালারী কক্ষটি ইতিহাস বিভাগের হওয়ায় প্রতিদিনই একই প্লাটফর্মে দুটি বিভগের চলাফেরা হয়।

জানতে চাইলে ফোকলোর বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফারজানা রহমান বলেন, “আজকের শিক্ষার্থীকে উত্ত্যক্তের ঘটনাটি অত্যন্ত নিন্দনীয়। এর আগেও বুঝে হোক বা না বুঝেই হোক শিক্ষিকাদেরও তারা উত্ত্যক্ত করার চেষ্টা করেছিল। হয়ত তারা নিজ বিভাগ থেকে একটু দুরে এসে ক্লাস করছে তাই এমন ঘটনা ঘটছে। একজন বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর কাছ থেকে এমন আচরণ আশা করা যায় না।”

ফোকলোর বিভাগের দুই শিক্ষার্থী শামীমা নাসরিন ও সনজিদা রহমান জানান, প্রায়ই ইতিহাস বিভাগের শিক্ষর্থীরা আমাদের সাথে এমন আচরণ করে। গ্যালারী কক্ষের সামন দিয়ে যাবার সময় নানা ধরনের অঙ্গভঙ্গি ও বাজে শব্দ করে। তাদের ব্যবহারে আমরা প্রতিনিয়তই বিরক্ত হই।

বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রওশন জাহিদ বলেন, “এই সম্পূর্ণ অনাকাঙ্খিত ঘটনা। আমি ছাত্রীর চিৎকার শুনে বের হই। এরপর পরিবেশ শান্ত করে উভয়কেই নিজ বিভাগে পাঠিয়ে দেই। একই প্লাটফর্মে দুটি বিভাগের ক্লাস হওয়ায় মূলত এই সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।”

এবিষয়ে ফোকলোর বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মোস্তফা তারিকুল হাসান বলেন, “ইতিহাস বিভাগের একটি কক্ষ ফোকলোর বিভাগে হওয়ায় প্রায়ই এ ধরনের অবিযোগ পাওয়া যায়। আজ বিভাগে অনুষ্ঠান থাকায় আমি মেয়েটির সঙ্গে কথা বলতে পারি নি, আমি মেয়েটির সাথে কথা বলে অভিযোগ সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষকে জানাবো।”

জানতে চাইলে ইতিহাস বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মর্ত্তুজা খালেদ বলেন,” বিষয়টি আমি শুনেছি। আমরা শিক্ষকদের নিয়ে একটি মিটিং করে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *