রাবি উপাচার্যের বাসভবনের পর প্রশাসন ও সিনেট ভবনে তালা!

রাবি উপাচার্যের বাসভবনের পর প্রশাসন ও সিনেট ভবনে তালা!

রাবি প্রতিনিধি:রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের বাসভবনে তালা লাগানোর পর প্রশাসন ও সিনেট ভবনে তালা লাগিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান কমিটির চাকরিপ্রত্যাশী নেতা-কর্মীরা। আজ (রোববার) সকাল সাড়ে ৮টায় ছাত্রলীগের ২০ থেকে ২৫ জন নেতাকর্মী উপাচার্যের বাসভবনে তালা লাগিয়ে সেখানে অবস্থান করেন। পরে প্রশাসন ও সিনেট ভাবনে তালা লাগিয়েছেন তারা।

জানা গেছে, এদিন সকাল সাড়ে ১০টায় উপাচার্য ভবনে ফাইনান্স কমিটির একটি সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো।

সভা শুরুর আগেই ভবনের মূল ফটকে তালা লাগায় আন্দোলনকারীরা। এর ফলে কয়েক ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকে উপাচার্য। এতে বন্ধ হয়ে যায় ফাইনান্স কমিটির সভা।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ‘অনিয়ম’ এর অভিযোগ এনে গত বছর ডিসেম্বরে শিক্ষা মন্ত্রণালয় চিঠি দিয়েছিল। এতে তার দুর্নীতির সাথে সংশ্লিষ্টতা স্পষ্ট। উপাচার্য এম আব্দুস সোবহান তার মেয়াদের শেষ সময়ে এসে সভায় আরও বড় ধরনের ‘অনিয়ম’ করবে বলে আমরা আশঙ্কা করছি। এজন্য আমরা মিটিং স্থগিতের দাবিতে অবস্থান নিয়েছি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘আজ ফাইনান্স কমিটির মিটিং ছিল, কিন্তু আন্দোলনকারীদের অবস্থানের কারণে কমিটির কেউ ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনি।’

এদিকে বেলা ১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমপ্লেক্স এর সামনে আমতলায় এক সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্যের মেয়াদ আগামী ৬ তারিখ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ধরনের কার্যক্রম স্থগিত রাখার দাবি জানিয়েছেন দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষকরা। সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্যের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ তোলেন শিক্ষকরা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষক সমাজের আহ্বায়ক অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম টিপু বলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যকাল আগামী ৬ মে, ২০২১ তারিখে শেষ হতে যাচ্ছে। মেয়াদের শেষে এসে বর্তমান প্রশাসন বরাবরের মতোই চরম অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছে। চাকরি প্রত্যাশী এবং স্বার্থান্বেষী মহলের চাপের মুখে ও দুর্নীতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে। এতে করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃত্বহীন হয়ে পড়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘সব ধরনের নিয়োগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও বর্তমান প্রশাসন নিয়োগ-বাণিজ্যের জন্য এডহকভিত্তিতে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ প্রদানে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। মেয়াদের শেষ পর্যায়ে করোনাকালীন সম্পূর্ণ বন্ধ ক্যাম্পাসে উপাচার্য কর্তৃক তড়িঘড়ি করে এসব আইনবহির্ভূত টেন্ডার নির্মাণ, মেরামতী ও রংকরণ কাজ, এডহক নিয়োগ ইত্যাদি বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার ও জনমনে নানা প্রশ্নের উদ্রেক করছে।

সংবাদ সংবাদ সম্মেলনে প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্যরা ছাড়াও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *