শখ পূরণে অনলাইন বিজনেস | প্রথম পর্ব

শখ পূরণে অনলাইন বিজনেস | প্রথম পর্ব

বিশেষ প্রতিনিধি


একদিকে চলছে করোনা মহামারী, তাই বন্ধ প্রাতিষ্ঠানিক সকল শিক্ষা কার্যক্রম। অন্যদিকে অনলাইন ক্লাসেরও তেমন বাধ্যবাধকতা না থাকায় শিক্ষার্থীরা সুযোগ পেয়েছেন অতীতের স্মৃতি রোমন্থন করার।

পড়ালেখার চাপে হয়তো কারও কারও দীর্ঘ কাল ছুঁয়ে দেখা হয়নি তার প্রিয় তুলি, রং – পেন্সিল কিংবা শখের আলপনা। কেউবা কাজ করতে চেয়েছিলেন নিজ জেলার ঐতিহ্যবাহী কোনো পণ্য নিয়ে। তবে মায়ের বকুনি খেয়ে সেই স্বপ্ন সেখানেই শেষ। অনেককে তো মায়ের বকুনির ভয়ে নিজের শখের আঁকাআঁকি আর অন্যান্য সব স্বপ্নও বাদ দিতে হয়েছিল।

তবে করোনায় সবকিছুতে যেমন পরিবর্তন এসেছে, তেমনি এমন অনেক শিক্ষার্থীও নতুন করে নিজের পুরনো শখকে পূরণ করতে নেমে পড়েছেন নতুন করে। কিন্তু তারা এখন যথেষ্ট পরিপূর্ণ, তাই নিজেদের দৃঢ় ইচ্ছার পাশাপাশি শখকে পুঁজি করে গড়ে তুলছেন স্ব-স্ব অনলাইন বিজনেস প্লাটফর্ম।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন কিছু তরুণ উদ্যোক্তাদের নিয়ে থাকছে দ্য ক্যাম্পাস টুডে’র তিন পর্বের ধারাবাহিক প্রতিবেদন। আজকের প্রথম পর্বে জবি’র দুজন শিক্ষার্থী- ছাবেকুন মোস্তফা ঋতু ও মারদিয়া রহমান তাদের অনলাইন ভিত্তিক বিজনেসের গল্প বলেছেন “দ্য ক্যাম্পাস টুডে’কে”।

চাঁদপুরের মেয়ে ছাবেকুন মোস্তফা ঋতু পড়ছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গন যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে। গ্রামীণ ঐতিহ্যের বাহক নকশিকাঁথা, একই সাথে কাঠের গহনা ও টি-শার্ট নিয়েও কাজ করছেন তিনি। সম্প্রতি ‘কাঁকন’ নামের এক ফেইসবুক পেইজ দিয়ে তিনি তার কার্যক্রম শুরু করেছেন।

অন্যদিকে মারদিয়া রহমান পড়ছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগে। কাজ করছেন তারই নিজ জেলা টাংগাইলের প্রসিদ্ধ সব মিষ্টি নিয়ে, ‘মিষ্টান্ন’ নামের এক পেইজ দিয়ে যাত্রা শুরু করেছেন তিনিও।

কীভাবে শখকে পুঁজি করে তারা দু’জন তাদের নিজস্ব অনলাইন বিজনেস শুরু করেছেন? আর কী কী নিয়ে তারা কাজ করছেন? এবং তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী? এমন নানান প্রশ্নের উত্তর জানার চেষ্টা করেছি তাদের কাছে,
চলুন সেসব গল্প শোনা যাক তাদের মুখ থেকেই-

“আমি ছাবেকুন মোস্তফা ঋতু। মূলত কাজ শুরু করছি নকশিকাঁথা,দেশীয় গহনা, পেন্টিং, টি-শার্ট ইত্যাদি নিয়ে। মূল ধারার বাহিরে গিয়ে গ্রামীণ ঐতিহ্যের দিকে মানুষের ঝোঁক সৃষ্টির লক্ষ্যে আমি কাজ করে যাচ্ছি।
‘সাশ্রয়ী মূল্যে রুচিশীল পণ্যের সমাহার ‘ এই মোটোকে সঙ্গী করে দেশীয় পণ্যের প্রতি ভালোবাসা থেকেই প্রথম নিজের কাজ শুরু করি।

নিজেকে আত্মনির্ভরশীল করার ইচ্ছে আমার বহুদিনের। তাই করোনাকালীন এই সময়টাকে কাজে লাগাতে চেয়েছি। যদিও শুরু করতে সময় লেগেছে তবে পরিশেষে আমার ক্ষুদ্র প্রয়াস “কাঁকন” ( পেইজের নাম)।

বর্তমান সময়ে অনলাইন একটি বড় প্লাটফর্ম, আর সামাজিক যোগাযোগের এই যুগে ফেইসবুক এক বিশাল প্লাটফর্ম। বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয় স্বজন সবাইকে একসাথে পাওয়া যায় এখানে। তাই আমার মূল টার্গেট এখানেই।

ইচ্ছা ছিলো অনেক আগে থেকেই নতুন করে কিছু করার, কিন্তু করা হচ্ছিলো না। করোনায় তাই হঠাৎ ই মাথায় এলো নিজের স্বপ্নের বাস্তবায়নের সুযোগ তো আমার হাতের মুঠোয়। তাই আর দেরী করলাম না।

কাছের মানুষদের উৎসাহ উদ্দীপনা আর নিজের ইচ্ছাকে পুঁজি করে গড়ে তুলেছি নিজেরই এক বিজনেস প্লাটফর্ম – কাঁকন। ভবিষ্যতে আরো ভালো কিছু নিয়ে যাতে এগিয়ে যেতে পারি এই দোয়া করবেন সবাই।”

অন্যদিকে মারদিয়া রহমান বলেন – “আমি মারদিয়া রহমান। আমার ছোট্ট একটি পেইজ “মিষ্টান্ন”। যেখানে টাংগাইলের৷ প্রসিদ্ধ পোড়াবাড়ির চমচম সহ আরও বাহারি মিষ্টি রয়েছে।

আমি সব সময় টাংগাইলের এই মিষ্টি নিয়ে কাজ করতে চেয়েছি।কিন্তু সেইভাবে সুযোগ হয়ে উঠে নি। তবে করোনায় এই দীর্ঘ সময় বাসায় বসে কিছু পরিকল্পনা করা হয়- কিভাবে কাজ করা যায়?

আর পরবর্তীতে আমার বোন আর আমার মিলিত চেষ্টায় এই উদ্যোগ নেওয়া। আর টাংগাইলের এই বিখ্যাত মিষ্টি গুলো ঢাকার বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে দেওয়ার। আমরা খুব ক্ষুদ্র পরিসরে কাজ করছি।

কিন্তু ভবিষ্যতে আমাদের কিছু পরিকল্পনা রয়েছে যে,আমরা আরও কিছু জিনিস যুক্ত করবো।যেমন হোমমেড মিষ্টি । আর ঢাকার বাহিরেও আমাদের এই প্রসিদ্ধ মিষ্টি গুলো পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করবো, ইনশাআল্লাহ।”

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *