সমালোচনা নয় করুন আত্মসমালোচনা!

সমালোচনা নয় করুন আত্মসমালোচনা!

মোজাহেদুর ইসলাম ইমন


আত্মসমালোচনা হলো নিজের সম্পর্কে সমালোচনা করা। ইংরেজিতে একে self-criticism বা self-accountability বলা হয়। এই বিশ্বলোকে কোনো মানুষই ত্রুটিবিচ্যুতির ঊর্ধ্বে নয়।

আমরা সকলে চলার পথে অনেক ভুল করি। কিন্তু ভুল আমাদের জীবনকে কোথা থেকে কোথায় নিয়ে যায়। সেটা শুধু বোঝা যায় যখন ভুলের মাশুল আমরা গুণি।

আমরা অন্যের ভালো-মন্দের বিচার যেভাবে করতে পারি, সেভাবে নিজের ভালো-মন্দের বিচার করতে পারি না কিংবা করি না।

কাউকে যদি দায়িত্ব দেয়া হয়, অপর একজন ব্যক্তির দশটি দোষ খুঁজে বের করতে,দেখা যাবে তিনি হয়তো ওই ব্যক্তির শতাধিক দোষ খুঁজে বের করে ফেলেছেন। আমরা অন্যের চলাফেরা, কথাবার্তায়, কাজকর্মে ও সার্বিক দিক বিবেচনা করে অনেক দোষ বা ভুল ধরতে পারি।

অন্যের ভুল বা দোষ নিয়ে একে অপরের সঙ্গে সমালোচনা করতে পারি। যদিও এটা একদমই অনুচিত ও গর্হিত কাজ। আমরা অন্যের ভুল বা দোষ খুঁজে বের করে তাকে সংশোধন করতে অনেক পরামর্শ দিয়ে থাকি,কিন্তু সেটা উচিত ছিল নিজের জন্য করা। কারন নিজের সমালোচনা করাই আত্মসমালোচনা৷

আজকাল অনেক মানুষই আছেন যারা কারণে-অকারণে অন্যের দুর্বল দিকগুলো জনসমক্ষে প্রকাশ করে খুব মজা পান। কিন্তু নিজের সমালোচনা কয়জনই বা করেন?

আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে একবার নিজের বিবেককে প্রশ্ন করে দেখুন তো? অন্যকে নিয়ে যে সমালোচনা করছেন,আসলেই কি তা ঠিক হচ্ছে? বিবেক ঠিকই সঠিক উত্তর দিবে। কারণ বিবেক সবসময় সঠিক দিক নির্দেশনা দেয়।

আমরা যে অন্যের সমালোচনায় মত্ত থাকি, আমরা নিজের সম্পর্কেই কতটাই বা জানি? নিজেকে আগে এই প্রশ্নগুলো করে দেখুন- ব্যক্তি হিসেবে আমি কতোটা পারফেক্ট? আমাদের কি কি দোষ ত্রুটি রয়েছে? তাহলেই দেখবেন একে একে নিজের খুঁত বা দুর্বলতা বের হয়ে আসছে এবং খুঁজে বের করাও কিন্তু খুব একটা কঠিন কাজ নয়।

ভালো একজন মানুষ হতে হলে অবশ্যই নিজেকে আগে জানতে হবে। আর যে নিজের সমালোচনা করতে পারে,সেই তো আসল বুদ্ধিমান। কারণ সে তার নিজেকে জানে,তার দোষ ত্রুটির খবর রাখে। অন্যকে জানার আগে নিজেকে জানা কি গুরুত্বপূর্ণ না?? অবশ্যই আগে নিজেকে জানতে হবে।

আর অন্যের সমালোচনা করে আপনি পার পেয়ে যাবেন এটা ভুল ধারণা! একটা না একটা সময় আপনার চাদরে মোড়া খারাপ দিকগুলো অন্যের সামনে প্রকাশ হবেই। তখন আর লজ্জার শেষ থাকবে না। অন্যের কিছু দিক খারাপ লাগতেই পারে। সেক্ষেত্রে, সেটা সরাসরি তাকে বলাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। তাই নিজেকে ভালোভাবে তৈরি করে, তারপর অন্যকে বিচার করতে যাওয়াই ভালো।

লেখক: শিক্ষার্থী, ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ ও সাধারণ সম্পাদক, গ্রীন ভয়েস, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *