সারা বছর বই প্রকাশ হওয়া দরকার

সারা বছর বই প্রকাশ হওয়া দরকার

বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয় কথা সাহিত্যিক প্রিন্স আশরাফ। রহস্য, থ্রিলার, হরর, অতিপ্রাকৃত, সায়েন্স ফিকশন, অনুবাদ গ্রন্থ সব কিছুতেই যার সমান বিচরণ।

ঘরবন্দী সময়েও তার লেখা ‘তামাম শুদ’উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়েছে। করোনা কালীন সময়ে তার ডাক্তার-সাহিত্যিক জীবনের গল্প ও অন্যান্য বই নিয়ে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন দ্য ক্যাম্পাস টুডের সাহিত্য সম্পাদক সোয়াদুজ্জামান সোয়াদ।

কেমন আছেন?

করোনাকালে চারিদিকের অস্থিরতার মধ্যেও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

ঘরবন্দী সময় কেমন কাটছে?

ঘরবন্দী সময়ের মধ্যেও কাজে হাসপাতালে যেতে হচ্ছে, তারপর বাকিটা সময় লেখালেখিতেই কেটে যাচ্ছে। মিমিক্রি নামে মেগাসাইজের থ্রিলার উপন্যাস লেখায় ব্যস্ত সময় পার করছি।তাছাড়া রক্তমাংসের আয়না নামে একটি সামাজিক উপন্যাস লেখা চলছে।

মহান একুশে গ্রন্থমেলা-২০২০ কেমন গেল?

মহান একুশে বইমেলা ২০২০এ আমার সাত সাতটি বই প্রকাশিত হয়, তারমধ্যে তিনটি পাণ্ডুলিপি পুরস্কার পাওয়া।মাটি উপন্যাসের জন্য প্রিয় বাংলা পাণ্ডুলিপি পুরস্কার, এখানে শিরদাঁড়া মেরামত করা হয়ে গল্পগ্রন্থের জন্য অক্ষরবৃত্ত পাণ্ডুলিপি পুরস্কার এবং পতাকার ফেরিওয়ালা কিশোর মুক্তিযুদ্ধের গল্পের জন্য কিশোরকলম পাণ্ডুলিপি পুরস্কার। সব মিলিয়ে বইমেলা খুব ভালো কেটেছে।

শুনলাম আপনার থ্রিলার উপন্যাস “তামাম শুদ” প্রকাশিত হচ্ছে?

নয়েজ পাবলিকেশন এর প্রথম প্রকাশিত বই হিসাবে আমার মৌলিক থ্রিলার উপন্যাস তামাম শুদ জুন-২০২০ এ প্রকাশিত হয়েছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে স্বনামধন্য বাতিঘর প্রকাশনীর প্রথম মৌলিক থ্রিলার উপন্যাস হিসাবে আমার যুযুধা প্রকাশিত হয়েছিল। কোন প্রকাশনীর প্রথম হিসাবে থাকতে পারাটা আনন্দের।

আপনি বৈশাখী টিভি চ্যানেলে নাটক লিখে পুরষ্কৃত হয়েছেন। এখন নাটক নিয়ে কাজ করছেন? পরবর্তীতে সিনেমা নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা আছে কি?

বৈশাখি চ্যানেলের নাট্যকার প্রতিযোগীতায় আমার গল্প চিঠি সেরা হওয়ায় মাতিয়া বানু শুকুর পরিচালনায় জ্যোতিকা জ্যোতি, স্বাধীন খসরু অভিনীত নাটকটি বেশ প্রশংসা কুড়ায়। তারপর লাভ গেম, সন্দেহের এপাশ ওপাশ সহ কয়েকটা ছোটখাট কাজ করলেও ব্যস্ততায় আর কাজ করা হয়নি।আপাতত নাটক সিনেমা নিয়ে তেমন কোন পরিকল্পনা নেই।

রহস্য, থ্রিলার, হরর, অতিপ্রাকৃত, সায়েন্স ফিকশন, অনুবাদ, এমন কি মুল ধারার গল্প উপন্যাসে ও আপনি সমান মনোযোগী। সে ক্ষেত্রে পাঠকেরা আপনার লেখা কবিতা-গান আশা করতে পারে?

কবিতা বা গান লেখে না এরকম লেখক পাওয়া বিরল ব্যাপার, আমিও দুচারটে লিখলেও তা নিজের কাছেই গ্রহণযোগ্য মনে না হওয়ায় লাইমলাইটে আনিনি। তবে ভবিষ্যতে আশা করতে পারেন।মজার ব্যাপার হলো কবিতা না লিখলেও লোকজন কবি হিসাবেই সম্বোধন করে। আমাদের দেশে লেখক বলতে বোধ হয় কবিই বোঝায়!

ডাক্তার-সাহিত্যিক গল্পটা জানতে চাই..

লেখালেখির ভূত কৈশোর থেকেই ভর করেছিল, যা আজও ছেড়ে যায়নি, তবে আমাদের মতো দেশে লেখক যেখানে কোন পেশা হিসাবে গণ্য করা হয় না, শখ হিসাবে দেখে হয় সেখানে খেয়ে পরে বেঁচে থাকতে হলে কোন না কোন পেশায় ঢুকতেই হতো, অগত্যা চিকিৎসা পেশাজীবি।

এখানে শিরদাঁড়া মেরামত করা হয়, রাজশহরের পরী, ডেটিকটিভ হেকিম হোমস, খাঁচা কোনটাকে এগিয়ে রাখবেন?

সবগুলোই নিজের পছন্দের। কোনটা রেখে কোনটা বলি। একেকটা একেক ঘরানার। আমি রাজশহরের পরীকে এগিয়ে রাখব, তবে প্রকাশক হয়তো ডিটেকটিভ হেকিম হোমসকে বেছে নেবেন, কারণ বইটি বইমেলায় খুব ভালো কাটতি ছিল।

পছন্দের লেখক?(১ জনের নাম)

গোটা দুনিয়া থেকে একজনকে বেছে নিতে হলে কলম্বিয়ার নোবেলজয়ী গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজকে বেছে নেব।

বেশির ভাগ লেখকই গ্রন্থমেলায় বই প্রকাশের জন্য ঝুকছে। সে বিষয়ে আপনার মতামত?

সারাবছর জুড়ে বই প্রকাশ হলে পাঠক প্রকাশ বারোমাসই ব্যস্ত থাকতে পারে, শুধু বইমেলার সময় দম ফেলার ফুরসৎ না পাওয়ার মতো অবস্থা হয় না। সেজন্য সারা বছর বই প্রকাশ হওয়া দরকার বলে আমি মনে করি।

বইমেলার বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আমি নিজেই বছরব্যাপী বই প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

জুনে তামাম শুদ প্রকাশিত হলো, আর কিছুদিনের মধ্যে আমার অতিপ্রাকৃত গল্প সমগ্র -১ অশুভ-কথন চমন প্রকাশ থেকে প্রকাশিত হবে।

তরুণ লেখকদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা-

আমি নিজেই এখনও তরুণ লেখক! নিজের প্রতি সৎ থাকার পাশাপাশি নিজের লেখার প্রতি সৎ থাকাটা জরুরি।

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *