‘নোবিপ্রবিতে মরার উপর খাঁড়ার ঘা ‘

নোবিপ্রবি প্রতিনিধি


 

করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে গত ১৮ মার্চ থেকে সারাদেশে সকল ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ব্যাহত হয়েছে শিক্ষা কার্যক্রম। এতে সেশনজটসহ নানা ভোগান্তিতে পড়েছে শিক্ষার্থীরা।

গত ২৫ জুন ইউজিসির সঙ্গে এক ভার্চুয়াল সভায় ৪৬ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা অনলাইনে পাঠদান কার্যক্রম শুরু করতে সম্মতি জানান। পরবর্তীতে ৩০ জুন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

এরপর বিভিন্ন বিভাগে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চলতে শুরু করলেও ‘মরার উপর খাঁড়ার ঘায়ের’ মত সামনে এসেছে শিক্ষকদের ক্লাস পরীক্ষা বর্জন।

শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে ১ অক্টোবর থেকে সকল ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত করেছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) শিক্ষকেরা।

সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. এম অহিদুজ্জামানের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে ২০১৯ সালের ২৮ এপ্রিল নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) সব পর্যায়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী নিয়োগ স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সে স্থগিত আদেশের দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো স্থগিত আদেশ তুলে নেয়নি শিক্ষা মন্ত্রণালয়। যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষক ও কর্মকর্তার সংকট চললেও নতুন করে নিয়োগ দিতে পারছে না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০ জন শিক্ষক অস্থায়ী পদে নিয়োগপ্রাপ্ত রয়েছেন। ইতোমধ্যে অনেক শিক্ষকের পরবর্তী পদে পদোন্নতির সময়ও প্রায় ১ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে, তাদের পরে স্থায়ী পদে নিযুক্ত শিক্ষকগণও পদোন্নতি পেয়ে যাওয়ায় শিক্ষকদের মাঝে একধরণের বৈষম্য দেখা যাচ্ছে। এছাড়াও অনেকগুলো বিভাগেই পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই, মাত্র ২ জন শিক্ষক দিয়ে ২টি শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম চলছে। ফলে মানসম্মত শিক্ষা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না এবং শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। নতুন নিয়োগ বন্ধ থাকায় বিভাগ পরিচালনায় পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই বলে অনেক বিভাগের শিক্ষকরা উচ্চশিক্ষার জন্য শিক্ষাছুটিতে যেতে পারছেন না। এতে করে শিক্ষকদের মাঝে উচ্চশিক্ষাজনিত একধরণের অনিশ্চয়তা পরিলক্ষিত হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী গোলাম সারওয়ার বলেন, করোনাভাইরাসে দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পর গত ১ জুলাই থেকে অনলাইন ক্লাস শুরু হয় যা আমাদের আশার আলো দেখিয়েছিলো। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে সকল ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত করেছে শিক্ষকেরা। যার ফলে আবারও শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে আমরা শঙ্কিত।

নোবিপ্রবি শিক্ষার্থী দিগন্ত ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকলেও গতকয়েকদিন আগে আমাদের অনলাইন ক্লাস শুরু হয়েছে। কিন্তু নিয়োগ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে শিক্ষকেরা ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে। আমরা আশা করি শিক্ষা মন্ত্রণালয় দ্রুত নিয়োগ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে আমাদেরকে পুনরায় শিক্ষা কার্যক্রমে ফিরিয়ে নিতে সহযোগিতা করবে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *