পাহাড়ের ওপর গাছে চড়ে অনলাইন ক্লাস দুই বোনের
ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক
করোনার মহামারির কারণে গোটা বিশ্ব জুড়ে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে চলছে ভার্চুয়াল তথা অনলাইন ক্লাস। কিন্তু প্রতিকূল পরিবেশের কারণে তাতে যোগ দিতে পারছে না অনেকে। তাই ঘটছে দুই বোন মাতিলদে ও মারলিনে পিমেনতেলের ক্ষেত্রেও।
তবে কোনো প্রতিবন্ধকতাই দমাতে পাড়ছে না তাদের পড়াশোনার আগ্রহ। মধ্য আমেরিকার দেশ এল সালভাদরের আরও অনেক বাসিন্দাদের মতোই তাদেরও বাস মাতিলদে ও মারলিনে। অনলাইন ক্লাসে যোগ দিতে প্রতিদিনই পাহাড় বেয়ে গাছে চড়তে হয় তাদের।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো করোনায় ধুঁকছে এল সালভাদরও। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে সেই মার্চ থেকে। তবে অনলাইনে চলছে পাঠদান কার্যক্রম।
মাতিলদে ও মারলিনের বাড়ি এমন প্রত্যন্ত এলাকায় যেখানে মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্কের সিগনাল পাওয়া যায় না বললেই চলে। ফলে নেটওয়ার্ক পেতে দূর পাহাড়ের উঁচু অলিভ গাছে ছড়ার কোনো বিকল্প নেই এই দুই কলেজ শিক্ষার্থীর।
২২ বছর বয়সী মাতিলদে বলেন, “আমরা যারা গ্রামে বাস করি, বেশির ভাগেরই পড়াশোনা করাটা কঠিন। এখানে কোনো ইন্টারনেট সংযোগ নেই।”
মাতিলদের ১৭ বছর বয়সী বোন মারলিনে বলেন, “ এখানে সামান্য নেটওয়ার্ক পাওয়া যায়। কিন্তু মাঝে মাঝে তাও পাওয়া যায় না।”
মাতিলদে গণিতের শিক্ষার্থী। মারলিনে পরিসংখ্যানের। উভয়ই পড়েন ইউনিভার্সিটি অব এল সালভাদররে।
পরিবারের দশ সন্তানদের মধ্যে মাতিলতে সপ্তম ও মারলিনে অষ্টম। তারা দুজনই এত বড় পরিবারের মধ্যে স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থী।
অনলাইনে ক্লাসে যোগ দিতে তাদের মর্মস্পর্শী চেষ্টার বিষয়টি প্রথম নজরে আসে পুলিশ অফিসার কাস্ত্রো রুইজের মাধ্যমে। ক্লাস করতে মাতিলদে ও মারলিনে প্রতিদিন যে এল টিগ্রে পাহাড়ে চড়েন সেখানেই টহল দিচ্ছিলেন তিনি।
একটি তরুণীকে অলিভ গাছে চড়তে দেখে বিস্মিত হয়ে গিয়েছিলেন বলে জানালেন রুইজ। এএফপিকে তিনি বলেন, “আমার প্রথম অভিব্যক্তি ছিল যে, তার মনে হয় কিছু একটা হয়েছে। আমি যখন তাকে জিজ্ঞেস করলাম, কী হয়েছে সে উত্তর দিলো- ‘আমি কেবল পড়াশোনা করতে চাই’।”
দুই বোনের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহের বিষয়টি দেখে মনে দাগ কাটে পুলিশ অফিসারের। এই দৃশ্যের একটি ছবি তোলে ফেসবুকে শেয়ার করার পর তা ভাইরাল হয়ে পড়ে।