জ্ঞানার্জনে বইমেলার ভূমিকা অকল্পনীয়

মোঃ রুবাইয়াদ ইসলাম: বই হচ্ছে মানুষের এক অমূল্য সম্পদ এবং জ্ঞান অর্জনের অন্যতম পাথেয়। আর বইমেলা হলো হরেক রকমের বইয়ের সাথে বিচিত্র মানুষের মেলবন্ধনের অন্যতম মাধ্যম। সাধারণত বইমেলা বিশেষ কোনো দিবস বা উপলক্ষ অনুযায়ী অস্থায়ীভাবে স্বল্প পরিসরে অথবা বৃহৎ পরিসরে গ্রামগঞ্জে কিংবা শহরে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

বইমেলা ঘিরে থাকে খাওয়া-দাওয়া করার জন্য তৈরি বিভিন্ন স্টোল ও বিনোদনের ব্যবস্থা। বইমেলার মাধ্যমে বইয়ের সাথে মানুষের এক ধরনের নিবিড় আত্মীয়তার সম্পর্ক তৈরি হয়ে থাকে। ব্যক্তিজীবনে জ্ঞানার্জনের জন্য বই পড়ার বিকল্প কোন উপায় নেই এবং এক্ষেত্রে বইমেলা অন্যতম সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে।

বিশ্বে সর্বপ্রথম প্রাচীন ইউরোপের দেশ জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টে ১৪৬২ খ্রিস্টাব্দে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বইমেলার আয়োজন করা হয় এবং ক্রমান্বয়ে তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। আমাদের দেশে স্বাধীনতা অর্জনের পর সর্বপ্রথম ১৯৭৫ সালে বাংলা একাডেমি কর্তৃক বইমেলার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় এবং তারপর থেকে প্রতিবছর ধারাবাহিকভাবে বইমেলার আয়োজন করা হয়ে আসছে।

বইমেলার মাধ্যমে মানুষের সৃজনশীলতা ও জ্ঞানচক্ষু উন্মীলন হলেও আমরা বই পড়া থেকে অনেকদূর পিছিয়ে রয়েছি। একটি বইয়ের মধ্যে বিচিত্র রকম তথ্য থাকে যা মানুষের জ্ঞান ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করার জন্য যথেষ্ট ভূমিকা পালন করে‌ থাকে। বই পড়ার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি সমস্ত মানবিক গুণাবলী সম্পর্কে জানতে ও বুঝতে পারে, ভালো-মন্দের বিচার করতে পারে এবং পূর্ণ মানসিকতা সম্পন্ন ব্যক্তিত্বে পরিণত হতে পারে।

বই পড়ার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি ইতিহাস, ঐতিহ্য, জীবনধারা, সমাজব্যবস্থা, রাষ্ট্রীয় কাঠামো এবং অতীত সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে পারে। বর্তমান আধুনিক পৃথিবী গড়ে ওঠার পেছনে বই পড়ে জ্ঞান অর্জন করে তা পরিশ্রমের মাধ্যমে প্রয়োগ করাকে মনে করা হয়ে থাকে।

একটি বই মেলায় থাকে নানান ধরনের বইয়ের সামগ্রী। তন্মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য হলঃ গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, কবিতা, গবেষণা, ছড়া, শিশুতোষ, জীবনী, মুক্তিযুদ্ধ, বিজ্ঞান, ভ্রমণ, ইতিহাস, রাজনীতি, রম্যধারা, ধর্মীয়, অনুবাদ, সায়েন্স ফিকশন এবং অন্যান্য বই। মেলার প্রতিটি স্টলের মধ্যে থাকে মলাটে মোড়ানো নতুন বইয়ের গন্ধ।

বইমেলার মধ্যে মানুষ বই কেনার পাশাপাশি বিনোদন কেন্দ্রগুলোতেও ভিড় করে থাকেন এবং খাবারের দোকানগুলো থেকে খাবার কিনে খান। অনেকেই আবার বই মেলায় ঘুরতে এসে নানান ধরনের বই কিনে বাড়ি ফিরেন। বইমেলাকে নবীন-প্রবীণ, জ্ঞানী-গুণী সকলের মিলনমেলা বলা হয়ে থাকে। বইমেলার মুক্তমঞ্চ থেকে প্রতিদিন নতুন নতুন বই প্রকাশিত হয়।

বইমেলায় অনেক নতুন লেখকের বই প্রকাশিত হওয়ায় এটি জ্ঞানচর্চার ও জ্ঞান লাভের এক বিশাল ক্ষেত্র তৈরি করে থাকে। প্রতিবছর বইমেলাকে ঘিরে এক উৎসবমুখর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বইমেলাকে ঘিরে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া এক ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করে।

আমাদের জাতীয় জীবনে বইমেলার গুরুত্ব অপরিসীম। লেখক, পাঠক‌ আর প্রকাশকদের ঘিরে তৈরি বইমেলা জাতির মননশীলতা, সুসংস্কৃতিবোধ এবং রুচিসম্মত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

আমাদের চিন্তা চেতনা বিকাশে বইমেলার ভূমিকা অনস্বীকার্য। বইমেলার মাধ্যমে জ্ঞান-বিজ্ঞান এবং সুস্থ মানসিকতা সম্পন্ন মানুষে ভরে যাবে প্রিয় মাতৃভূমি- এই প্রত্যাশা সবার।

লেখকঃ শিক্ষার্থী, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ,
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর।

বই মেলায় মাসুমের চিরবিদায় স্টোর

সাগর দে


একুশে বইমেলা -২০২১ শুরু হয়েছে গত ১৮ মার্চ থেকে। আর এ বই মেলায় স্থান পেয়েছে নোয়াখালী সরকারি কলেজের ‘দর্শন’ বিভাগের শিক্ষার্থী – তরুণ লেখক ও দ্য ক্যাম্পাস টুডের সাহিত্য সহ-সম্পাদক নুরুল করিম মাসুম -এর নতুন গল্প গ্রন্থ ‘চিরবিদায় স্টোর’। বিসর্গ প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত বইটির প্রচ্ছদ করেছেন পরাগ ওয়াহিদ।

এরই মধ্যে বইটির প্রি-অর্ডার চলছে দেশের বেশ কিছু অনলাইন শপ – DAAK ডট কম বিডি রকমারি.কম – এ। বইটি দূরের পাঠকেরা DAKK বা রকমারি থেকে সংগ্রহ করতে পারবে।

সে সাথে বইমেলার প্রথম দিন থেকেই পান্ডুলিপি প্রকাশের ‘৫৫৬’ স্টলে বইটি পাওয়া যাচ্ছে।

উল্লেখ্য যে- মাসুমের জন্ম কুমিল্লা জেলার লাকসামে। শৈশবের কল্পনাসক্ত এবং বিস্ময়কর এক মোহ থেকে কৈশোর কালে তার লিখালিখির শুরুটা কবিতা দিয়ে। তবে পাশাপাশি গল্প, প্রবন্ধ লিখার মাধ্যমে মানুষের বৈচিত্র্যময় জীবন যুক্তির সংমিশ্রণে তুলে আনতে চেষ্টা করেন তার কলমের স্পর্শে।

বইটির রকমারি ও ডাক অর্ডার লিংক:

http://www.daak.com.bd
https://www.rokomari.com/book/210943/chirobiday-store

ইমেরিটাস প্রফেসর অরুণ কুমারের লেখা বই ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা মানবতা’

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক: গবেষণা ও শিক্ষার্থীদের শেখানো যার এক প্রকার নেশা। শিক্ষার্থীদের সুপার হিরো। তিনি হলেন পদার্থবিজ্ঞানে দেশের একমাত্র ইমেরিটাস প্রফেসর ড. অরুণ কুমার বসাক।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অধ্যাপক তিনি। আশি-ঊর্ধ্ব এই অধ্যাপক শিক্ষাজগতের একজন জ্ঞানের বাতিঘর।

তিনি অধ্যাপনা থেকে অবসর নিলেও কেবল গবেষণার টানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বিজ্ঞান ভবনে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে প্রায় প্রতিদিনই আসেন।

গবেষণা করেন, ছাত্রদের শেখান। নিজের বেতনের সিংহভাগই দান করেন এই অধ্যাপক। তার বিলেতে গিয়ে গবেষণা করে উপার্জন করার পথ থাকলেও কেবল মাতৃভূমির জন্য কিছু করার তাগিদে ঘরে ফেরেন। রাজনৈতিক প্রভাব-প্রতিপত্তি তার কখনোই ছিল না। কিন্তু জ্ঞান বিতরণের মাধ্যমে শত শত শিক্ষার্থীর কাছে হয়ে আছেন শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার পাত্র।

‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা মানবতা’ শিরোনামে একটি বই প্রকাশিত হয়েছে এই গুণী পদার্থবিজ্ঞানে দেশের একমাত্র ইমেরিটাস অধ্যাপকের।

‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা মানবতা’ শিরোনামে প্রকাশিত বইটিতে বিশ্ববিদ্যালয় কেমন হওয়া উচিত, শিক্ষা কেমন হওয়া উচিত, সব কিছুর শেষ কথা যে মানবতা এ নিয়ে বিস্তর চিন্তা ভাবনা লেখক তুলে ধরেছেন। এদিকে গতকাল সোমবার (১৫মার্চ) শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ সিনেট ভবনে তার লেখা ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা মানবতা’ গ্রন্থটির প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বইটি চিহ্ন প্রকাশন থেকে প্রকাশিত হচ্ছে। বইটির গ্রন্থ-পরিকল্পনা ও রচনা-নির্বাচন করেছেন চিহ্ন সম্পাদক প্রফেসর শহীদ ইকবাল, প্রচ্ছদ করেছেন প্রফেসর সুভাষ চন্দ্র সূতার এবং সংকলন করেছেন মো. মাসুম বিল্লাহ আজাদ। বইটি আসন্ন অমর একুশে বইমেলা-২০২১ এ চিহ্ন প্রকাশনের স্টলে পাওয়া যাবে।

‘চিহ্ন’ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রকাশিত ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা মানবতা’ শীর্ষক এই গ্রন্থে প্রফেসর অরুণ কুমার বসাকের শিক্ষা, সমাজ, সংস্কৃতি ইত্যাদি বিষয়ে লেখা ৩৪টি প্রবন্ধ স্থান পেয়েছে। বইটির মুদ্রিত মূল্য ৪০০ টাকা।

দেশের গুণী এই অধ্যাপকের লেখা বই দেশের স্নাতক পর্যায়ে পড়ানো হয়। ২০০৮ সালে তিনি পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ থেকে অবসর নেন। ২০০৯ সালে ইমেরিটাস অধ্যাপক হিসেবে সম্মাননা পান।

এই অধ্যাপকের অধীনে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন পিএইচডিও করেছেন। শিক্ষা ও গবেষণায় বিশেষ ভূমিকা রাখায় ২০০৭ সালে পেনিনসুলা ওয়ালফেয়ার ট্রাস্ট রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বসাক বৃত্তি’ নামে একটি প্রকল্প চালু করে, যা প্রতি বছর মেধাবী শিক্ষার্থীদের দেওয়া হচ্ছে।

বেরোবি শিক্ষার্থী মনিরুলের উপন্যাসিকা ‘মৃত্যুর পাণ্ডুলিপি’র মোড়ক উন্মোচন

রবিউল হাসান সাকীব, বেরোবি প্রতিনিধি: তরুণ লেখক ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মনিরুল ইসলাম মুকুলের ‘মৃত্যুর পাণ্ডুলিপি ‘ উপন্যাসিকার মোড়ক উন্মোচন হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় এর ইংরেজি বিভাগে মোড়ক উন্মোচিত হয়েছে।

উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় রংপুর এর ইংরেজি বিভাগের আলী রায়হান সরকার-সহযোগী অধ্যাপক, আসিফ আল মতিন-সহযোগী অধ্যাপক, মৌটুসী রয়-সহকারী অধ্যাপক, মুশরিফুর জিলানী রকি-প্রভাষক।

উপন্যাসিকাটি মূলত আত্মকথন মূলক উপন্যাস প্রচেষ্টা।জীবন যুদ্ধে হেরে যাওয়া গল্পটি মানুষের জীবনে পুরোনো নয়, তারপরও মানুষের জয়ী হওয়ার এক অদম্য ইচ্ছে থাকে। যে ইচ্ছেটাই মানুষকে ভাবাতে শেখায়।এই উপন্যাসিকায় লেখক গল্পকে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন।

লেখক মনিরুল ইসলাম মুকুল বলেন, ‘মৃত্যুর পান্ডুলিপি ‘আমার দ্বিতীয় প্রকাশিত গ্রন্থ।যেটি অমর একুশে বইমেলা ২০২১ ঢাকায় ৫০৯ নাম্বার স্টলে পাওয়া যাবে এবং অনলাইম বুকশপ রকমারি ডট কমে পাওয়া যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, তরুণ লেখক মনিরুল ইসলাম মুকুল ১৯৯৬ সালের ১০ ডিসেম্বর ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ভাতগাঁও গ্রামে জন্মগ্রহন করেন।মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের গন্ডি পেড়িয়ে লেখক বর্তমানে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে পড়াশোনা করছেন।

তাঁর প্রথম প্রকাশিত কাব্য গ্রন্থ ‘শান্ত মেঘে লুকিয়ে তুই ‘প্রকাশের পরে ইতোমধ্যে তিনি ব্যাপক পাঠক প্রিয়তা অর্জন করেন।

একুশে গ্রন্থমেলায় তরুণ প্রজন্মের লেখক শাহমুব জুয়েলের ‘গিরিকন্যা’

সাহিত্য ডেস্ক


এবারের একুশে গ্রন্থমেলা-২০২১-এ প্রকাশিত হচ্ছে তরুণ প্রজন্মের লেখক শাহমুব জুয়েলের তৃতীয় উপন্যাস গিরিকন্যা। ‘দেশ পাবলিকেশন্সের’ ব্যানারে বইটির প্রচ্ছদ বানিয়েছেন মোস্তাফিজ কারিগর। পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ২৫৬ মুদ্রিত মূল্যঃ ৫০০ টাকা মাত্র। বইমেলার ৫৫-৫৬-৫৭ নং স্টলে পাওয়া যাবে। এছাড়াও অর্ডার করা যাবে রকমারি.কম থেকেও।

গিরিকন্যা উপন্যাসে বিস্তর মানুষের জীবনযাপনের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে নানান সমস্যা ও সংকট বিদ্যমান।চোখের সামনে নানান ঘটনা ঘটে।মানুষ নিরুপায় হয়ে দেখে। বদলে গেছে মানুষ। বদলে গেছে পরিবেশ ও প্রকৃতি। প্রকৃতি ও পরিবেশের সাথে মেলবন্ধন নেই মানুষের। অথচ বেঁচে থাকা ও জীবনাচরণের ক্ষেত্রে প্রকৃতি প্রধান ভূমিকা রাখে। মানুষ ধ্বংসে মাতোয়ারা। চারপাশের অবস্থা রক্ষা ও মানসিক উন্নতি ধারণের লক্ষে দুটি চরিত্র কাজ করছে। অদ্রি ও পারিজাত গিরিকন্যা উপন্যাসের প্রধান চরিত্র।

উপন্যাসে পাহাড় কাটা, বিল ভরাট, পাখি নিধন, ফসলের মাঠ বিরান, ছিন্নমূল মানুষের জীবনযাপন, হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যু, চোরাকারবারি, ঘুষবাণিজ্য, সংস্কৃতিচর্চার অভাব, বিলবোর্ডের মাধ্যমে গাছ পরিবেশ ধ্বংস এবং অপচয় রোধের চিত্র এসেছে।

পাখি প্রকৃতির রক্ষক। বক পরিচিত পাখি। শাদা পালক নেড়ে মঙ্গলের বার্তা বয়ে বেড়ায়। মাঠের প্রান্তে থেকে প্রান্তরে ধীর পায়ে হাঁটে । কখনো ধ্যানী সাধকের মত আলের কিনারে বসে মানুষের কথা ভাবে। পাখির চিত্র নান্দনিক রেখাচিত্রে বর্ণনা করা হয়েছে।

তেপান্তের সৌন্দর্য ফসল। মাঠের উপর সারি সারি বকের পাহারা বেশ মুগ্ধকর। মাঠে মাঠে ফসলের সমারোহ। গুটিপোকা আক্রমণ করলে বক সেগুলোকে তাড়া করে। তাতে ফসল রক্ষা পায়। হীনমনা মানুষ পাখিগুলো শিকারে মেতে উঠে। উপন্যাসের প্রধান চরিত্র পারিজাত শহর থেকে বিলের মাঝ দিয়ে নতুন সড়ক দিয়ে বাড়ি ফিরে। এ সময় শিকারী বন্দুক তাক করা দেখে বিস্মিত হয়। হঠাৎ গুলি ও বকের ডানা ঝাপটানো দেখে আহত হয়েছে। অন্যদিকে বক তাড়া খেয়ে বিল ছেড়ে যায়। গুটিপোকা এসে নষ্ট করে সোনালি ফসল। গ্রামীন কৃষক ফসল মাঠের চিত্রও সাবলীলভাবে ফুটে উঠেছে।

লেখক শাহমুব জুয়েল বলেন- “আমি মানুষের কাছে ঘেঁসে দেখি, ছিন্নমূল মানুষ, প্রকৃতির ধ্বংস, চাটুকারিতা, ধান্ধাবাজি, গোঁড়ামি, আধিপাত্য, বিপর্যয় ও অমানবিক আচরণ, তারপর চারপাশের নানান অনুষঙ্গকে লিপিবদ্ধ করি গল্পের রাজ্যে, মন ও মননে বিশ্বাস করে বুনন করি শব্দশিল্প। গ্রাম ও শহরের সেতুবন্ধন আমাকে টানে তাই অন্যান্য লেখার মত গিরিকন্যা উপন্যাসেও তা বৈচিত্র্যময়ভাবে ফুটে উঠেছে।”

নতুন প্রজন্মের সাথে বইয়ের সংযোগ ঘটানোর স্বপ্নবাজ এই লেখক এর পূর্বেও লিখেছেন সবুজডানা, সমুদ্রগামিনী উপন্যাস। লিখেছেন প্রবন্ধ গ্রন্থ ‘কথাসাহিত্যে রাজনৈতিক দর্শন ও বিবিধ প্রবন্ধ’। এছাড়াও তার সম্পাদিত লিটলম্যাগ বর্ণিল কবিতা গ্রন্থ: কাঁচা রোদের সন্ধানে (২০১৭)মুখোমুখি আহ্লাদি চিবুক (২০১৭),জলসিঁড়ি পেরিয়ে বালির সন্যাসে(২০১৯) গল্পগ্রন্থ : অথৈ সময়ের শ্বাস( ২০১৮)।

উল্লেখ্য, চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলায় জন্ম নেওয়া এই তরুণ লেখক পেশায় শিক্ষক হলেও সাহিত্যের প্রতিটি ক্ষেত্রে বিচরণ তার চিন্তার খোরাক। অল্প সময়েই করেছেন ঈর্ষান্বিত অর্জন। পেয়েছেন ছায়াবানী মিডিয়া কমিউনিকেশন সম্মাননা-২০১৮,কাব্যকথা ভাষা শহিদ স্মৃতি সম্মাননা- ২০১৮,চাঁদপুর মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক স্বরচিত কবিতা বিষয়ে বিজয়ী সম্মাননা -২০১৮,দৈনিক বাঙালির কণ্ঠ লেখক সম্মাননা- ২০১৯,বাঙালি কৃষ্টি ও সংস্কৃতি সম্মাননা-২০১৯,সিলেট কবিতা উৎসব সম্মাননা-২০১৯, ১১ তম চকুরঙ্গ ইলিশ উৎসব সম্মাননা-২০১৯।

“একুশ বাঁধে বাংলা,বাংলা রাঁধে একুশ”

আবুবকর সিদ্দিক শিবলি


আপনি ইংরেজি সাহিত্য,ইংরেজি কিংবা বহির্বিশ্ব সম্পর্কে জানেন তো ঠিকমত? যদি না জানেন তবে কিন্তু আপনি বুদ্ধিমান কিংবা সুদর্শন নন,আপনার জ্ঞান পরিমন্ডল বিস্তৃত নয়।

আপনি জানেন বা না জানেন তবে আপনাকে জানতেই হবে,লোকমুখে জ্ঞানী হতে চাইলে।কেননা,আমাদের কাছে জ্ঞান মানেই অজানাকে জানা,নিজের কাছে নতুন রূপে নিজেকে জানা নয়।

মাতৃভাষা,শব্দটা শুনলেই প্রথম মন অগোচরে যেই অনুভূতির উদ্রেক হয় সেটা একান্তই প্রিয়। নিজের ভাষা,মনের ভাষা,ইচ্ছেখুশি আবেগ উদগীরণের ভাষা।

কিন্তু বর্তমান? তাতে বিশ্বাসী নয়। আপনাকে জানতে হলে,জ্ঞানী হতে হলে কিংবা লোকমুখে বুদ্ধিমান হতে হলে অবশ্যই পরিশুদ্ধ বাংলার পাশাপাশি গুটিকয়েক ইংরেজি শব্দ কথাচ্ছলে যোগ করতে হবে,আঞ্চলিক তো ভুলেও নয়।

আমরা সামান্য(শতাংশ শূন্যের কাছাকাছি) আধুনিক হতে গিয়ে প্রতিনিয়ত আমাদের স্বকীয়তা হারাচ্ছি। যতটা না হচ্ছি জ্ঞানী,তার থেকেও দ্বিগুণ পরিমাণে হচ্ছি হযবরল ভাষাবিজ্ঞানী।

আমাদের যাবতকালের বাংলা সাহিত্যিক? নির্বোধ আমার মাঝেমধ্যে মনে হয়,তারা বোধহয় বাংলার মাঝে ইংরেজি ভাষার বাণিজ্য করছে। নয়তো কেন তারা এতো শ্রুতিমধুর বাংলা ভাষা রেখে আমার মতো মূর্খ পাঠকদের ইংরেজির বেড়াকলে ফেলে হয়রান করছে?

এই যে আপনাকেই বলছি,আপনার বাড়িতে ইংরেজি অভিধান আছে তো নাকি? বাংলা থাকুক বা না থাকুক চলবে,তবে ইংরেজি থাকতেই হবে। কারণ আমরা ইংরেজি পড়ি খুঁজে বুঝে।আর বাংলা,পারি বলে অধমের মতো না বুঝে।

একুশ এসেছে বাংলা হয়ে
লোক সমুচ্চরণে বলে কয়ে
দ্বিধা,ঘাত,সংঘাত ভুলে
রক্ত দিয়েছে মাতৃভাষা দখলে
বাংলাপ্রেমী উদ্যমী জাগ্রত জনতাবল
যাদের বিনিময়ে করছি মুখবদল।
তাই আজি তাদের প্রতি
রক্তিম সম্মানে জানাই ফুলেল ভালোবাসা নিরঙ্কুশ
আর বলি একাত্ব একাচ্চরণে
একুশ বাঁধে বাংলা,বাংলা রাঁধে একুশ।

লেখক
আবুবকর সিদ্দিক শিবলি
শিক্ষার্থী,
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

একুশের গান-কবিতায় ভাষা শহীদদের স্মরণ

 

সুপর্না রহমান


একুশের গান ও কবিতায় ভাষা শহীদদের স্মরণ করল সাভারের শহীদ সার্জেন্ট ছাবেদ দেওয়ান স্মৃতি সংঘ।

অমর একুশে স্মরণে শুক্রবার দুপুরে মির্জা গোলাম হাফিজ কলেজের শহীদ মিনার চত্ত্বরে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সংগঠনটি।

অনুষ্ঠানের শুরুতে শহীদ মিনারের মূল বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো গান গাওয়া হয়। এরপর একুশের গান পরিবেশন করেন জলসিঁড়ি শিল্পগোষ্ঠীর গামছা মারুফের দল। পরে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

মো. ফারুক দেওয়ানের সভাপতিত্বে ও পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) মো. মনসুর হোসেন মানিকের সঞ্চালনায় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আনন জামান এবং প্রধান আলোচক গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. ফুয়াদ হোসেন।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে সম্মিলিত মির্জা গোলাম হাফিজ কলেজের ক্রীড়া শিক্ষক মো. আছাদুজ্জামান, গ্লোবাল এটায়ার লিমিটেডের পরামর্শক রবিউল হোসেন ও গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক লিমন হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

সংগঠনের সভাপতি ফারুক দেওয়ান বলেন, শহীদ সার্জেন্ট ছাবেদ দেওয়ানরা বঙ্গবন্ধুর পথে হেঁটেছিল বলেই আজ আমরা স্বাধীন বাংলা পেয়েছি। আমি দুঃখিত না—আমি শহীদ ছাবেদ দেওয়ানের সন্তান।
আমাদের প্রয়াস ও আয়োজনের মাধ্যমে বাঙালির সাংস্কৃতি ও ইতিহাস মানুষের তুলে ধরছি।

ড. ফুয়াদ হোসেন বলেন, ভাষা শহীদরাই মুক্তিযোদ্ধাদের ভিত্তি। বঙ্গবন্ধু কোনো একক সত্ত্বা নয়। ৩০ লাখ শহীদের সম্মিলিত স্বত্ত্বাই বঙ্গবন্ধু।

উল্লেখ্য, শহীদ সার্জেন্ট ছাবেদ দেওয়ান ২৫ মার্চ রাতে রাজধানীর রাজারবাগে প্রতিরোধ যোদ্ধা হিসেবে পাক হানাদার বাহিনীর গুলিতে শহীদ হন ।

ওরা নিশাচর

ওরা নিশাচর


আধারে যেন কারা হাটে!!
দিন ফুরিয়ে নিকষ কালো অন্ধকার
যখন নেমে আসে নগরীর প্রতিটি গলিতে,
সন্ধ্যা প্রদীপ যখন নিভে যায়
সবাই ঘুমিয়ে পড়ে নির্জনতার বুকে
তখন তারা হাটে-
আমি রোজ শুনি তাদের হাটার শব্দ
বাতাসে প্রতিধ্বনিত হয় সেই শব্দের।

রাত গভীর হলেই ওরা নেমে পড়ে
ছড়িয়ে যায় এদিকে সেদিকে
তীব্র শীত কিংবা রাতের নির্জনতা
তাদের দমাতে পারে নাহ-
তারা চষে বেড়ায় লোকালয় থেকে লোকালয়
রেলস্টেশন থেকে বস্তি।
নগরীর প্রতিটি প্রান্তরে
তাদের পদচিহ্নের খবর পাওয়া যায় রোজ
শুনেছি তারা গুটি কয়েক,
সখিনার জীর্ণ কুটিরটিকেও বাদ দেয়নি।

দিনের আলোয় যারা স্বাভাবিক
যাদের স্লোগান ২ দলে বিভক্ত হয়
অথচ
রাতের অন্ধকারে তারা বদলে নেয় নিজেকে,
আমাদের জাগতিক সমাজ থেকে –
আলাদা এক সমাজ গঠন করে,
পদচিহ্ন একে দেয় শহরের নষ্ট গলি গুলোতেও।

আমি অবাক হয়ে শুনি-
নগরীর বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
রিকশার গ্যারেজ,উলঙ্গ ফুটপাতেও
তারা হানা দেয়,
ওরা থেমে থাকে নাহ।
রাত পেরিয়ে ভোর হবার আগেই
ওরা হেটে যায় মাইলের পরে মাইল,
সে হিসেব আমি লিখতে পারিনি
তাদের চলার এত দ্রুততা –
যেন বিশ্বের দ্রুততম মানব কেও হার মানায়।

হঠাৎ মাঝ রাতে শুনি
কারা যেন ফিসফিসিয়ে কথা বলছে
কারা যেন হেটে আসছে –
আমি দরজা খুলতেই, শব্দ বন্ধ হলো।
বললাম কে ওখানে? কে যায়?
উত্তর মেলেনি –
শুধু হাড় হিম করা বাতাস ফিসফিসিয়ে
বলে গেল –
ওরা নিশাচর, ওরা এসেছিলো
এক টুকরা উষ্ণতা দেবার জন্য।

তাজমিন রহমান,
ফোকলোর স্টাডিজ,
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।

কবি জসীম উদদীন সাহিত্য সম্মাননা পেলেন কথাসাহিত্যিক রাশিদা বেগম

কথাসাহিত্যে কবি জসীম উদদীন সাহিত্য সম্মাননা – ২০২১ পেলেন রাশিদা বেগম। লেখক উন্নয়ন কেন্দ্র এর আয়োজনে গত ২২ জানুয়ারি শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এ সম্মাননা দেওয়া হয়।

রাশিদা বেগমের বাড়ি নরসিংদী জেলার মনোহরদী উপজেলায়। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে বিএ (অনার্স) এমএ করেন। তখন থেকেই লেখালেখি শুরু করলেও ২০১৭ সাল থেকে বই প্রকাশ করে আসছেন। সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় তাঁর বিচরণ। কবিতা, ছোট গল্প ও উপন্যাসে ইতোমধ্যে পাঠকপ্রিয় হয়ে উঠছেন। তাঁর লেখায় কল্পনার আশ্রয় নেই বললেই চলে। সমাজের নিঃস্ব, অসহায়, নিঃসঙ্গ ও বঞ্চিত মানুষের ভেতরের চাপাকষ্ট আবিষ্কার করে উপন্যাসে তিনি তুলে ধরেছেন।

অ্যাওয়ার্ড পাওয়ার পর তিনি অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন,’ কোনো বড়ো প্রাপ্তির আনন্দ সীমাহীন। জসীম উদদীন তাঁর প্রিয় কবি। পল্লীর ডিটেইলসকে তিনি কাব্যে ধারণ করেছেন। এমন একজন কবির জন্মদিন উপলক্ষে সাহিত্য সম্মাননা পেয়ে তিনি আনন্দিত ও অভিভূত।

তিনি আরও বলেন, ‘শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে শিল্পের চর্চা করে যাওয়া উচিত। তিনি লিখে যাচ্ছেন অবিরাম। বর্তমানে কিছু লিখছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দুটি উপন্যাস লেখার কাজ চলমান। ছোট গল্প ও লিখছেন। শিশু সাহিত্য নিয়েও কাজ করার ইচ্ছা আছে বলে জানান।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব শওকত আলী ,শিশু সাহিত্যিক রফিকুল হক দাদুভাইসহ আরও অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। দেশের ৬৪ টি জেলার কবি সাহিত্যিকগণের মধ্যে মোট ১৩ জন কবি সাহিত্যিককে এ সম্মাননা দেওয়া হয়।

বইয়ের সঠিক মূল্য লিখুন

মো. সোহেল রানা: বই মানুষের জ্ঞান বৃদ্ধি করে। সমাজ আলোকিত করে ৷ সুনাগরিক গঠনেও বইয়ের অন্যতম ভূমিকা রয়েছে। এক কথায় জ্ঞান, সমৃদ্ধি ও উন্নতির অন্যতম প্রধান হাতিয়ার হলো বই

সুতরাং বই সকলের জন্য সহজলভ্য হওয়া প্রয়োজন এবং সকলের নিকট বই পৌঁছে দেওয়া কর্তব্য। নাগরিকের নিকট বই প্রাপ্তিতে বাধা মানে ভবিষ্যৎ বুদ্ধিজীবী ও সুনাগরিক গঠনে বাধা সৃষ্টি করা। সকল ধরনের বই যেমন, গবেষণামূলক বই, একাডেমিক বই, গল্পের বই, উপন্যাস, নাটক, জীবনীগ্রন্থ এবং অন্যান্য সকল বইয়ের প্রকৃত মূল্য থেকে দৃশ্যমান মূল্য অনেক বেশি। দৃশ্যমান মূল্য বেশি হওয়ার কারণে অনেকে বই ক্রয়ে নিরুৎসাহিত হয়৷

মনে করে যে, বই এর মূল্য অনেক বেশি! তাই বই ক্রয়ে আগ্রহ অনেক সময় কমে যায়। শহরের তুলনায় গ্রামের মানুষ স্বল্প শিক্ষিত বা বর্ণজ্ঞানহীন। তাঁরা কম বোঝেন। কিন্তু তাঁদের কম বোঝার ফলে ফাইদা হয় দোকানদারদের৷ যেমন, একটি বইয়ের মূল্য বইতে দেওয়া আছে চারশত বিশ টাকা কিন্তু দুইশত ত্রিশ টাকা হলো বিক্রয় মূল্য। তাহলে বইটির মূল্য চারশত বিশ টাকা দেওয়ার কোনো মানে হয় না! এক্ষেত্রে সাধারণ জনগণের ধোঁকা দেওয়ার সুযোগ পায় দোকানদার।

যদি চারশত বিশ টাকা মূল্যের বই দু’শ ত্রিশ টাকায় বিক্রি হয় তাহলে চারশত বিশ টাকা লেখা মানে দোকানদারদের সুযোগ করে দেওয়া ছাড়া কিছুই নয়! কারণ এক্ষেত্রে গ্রামের সহজ সরল মানুষের থেকে দৃশ্যমান মূল্য দেখিয়ে সেই মূল্য থেকে কিছু টাকা কমে বা সেই মূল্যে বই বিক্রি করে দিতে পারেন। এভাবে সাধারণ মানুষ ধোঁকা খায়। এর অনেক নজির রয়েছে।

লেখক মনে করতে পারেন যে, তাঁর বইয়ের মূল্য বেশি লিখলে হয়তো মানুষের কাছে মানসম্মত বই বলে বিবেচিত হবে বা তাঁর বইয়ের মানদণ্ড বৃদ্ধি পাবে। ভাল লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ হবে কিন্তু ভাল লেখক বা বইয়ের মূল্য নির্ভর করে লেখনীর মাধ্যমে, বিশ্লেষণ বা পাঠকের ভাল লাগার মাধ্যমে; উল্লেখ্য মূল্যের উপর নয়!

সব কিছুর একটি বিধিমালা বা আইনি প্রক্রিয়া থাকা প্রয়োজন। যেমন, কপিরাইট আইন জোরদার করা, বইয়ের সঠিক মূল্য লেখা ও অসামাজিক বই নিষিদ্ধ করা। এইগুলো বাস্তবায়ন করলে লেখা মানসম্মত হবে এবং পাঠকের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাবে! সেই সাথে নূতন কবি সাহিত্যিকও তৈরি হতে সহায়তা করবে এবং উৎসাহিত হবে। তাই লেখক ও প্রকাশকদের আহ্বান করছি এই বিষয়গুলো লক্ষ্য রেখে বই প্রকাশ করার জন্য!

লেখক- শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া