রাবির জিয়াউর রহমান হলের নতুন প্রাধ্যক্ষ ড. সুজন সেন

 

রাবি প্রতিনিধি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ জিয়াউর রহমান হলের নতুন প্রাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন চারুকলা অনুষদের চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সুজন সেন। রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের এক আদেশে পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত ড. সুজন সেনকে এই দায়িত্ব দেয়া হয়।

রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আবদুস সালাম তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। আগামী ১৩ এপ্রিল বর্তমান প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক রেজাউল করিম বকসি আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন বলে জানা গেছে।

জানতে চাইলে সুজন সেন বলেন, একজন হল প্রাধ্যক্ষ হিসেবে অবশ্যই আমি হলের যেকোনো শিক্ষার্থীর সহযোগীতায় পাশে থাকব। হলের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার পাশাপাশি হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার জন্য প্রয়োজনীয় সুবিধা প্রদাণ, খেলাধূলা এবং সংস্কৃতিচর্চার প্রতি গুরুত্বারোপ করবো। এছাড়া সকলের সহযোগীতায় হলটিকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার পাশাপাশি মানসম্মত খাবার প্রদাণে বদ্ধপরিকর থাকব।

রাবি: সাতদিনের মধ্যে পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত!

 

রাবি প্রতিনিধি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) স্থগিত হওয়া পরীক্ষা নেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করে আগামী সাতদিনের মধ্যে জরুরি সভা ডেকে পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ রোববার পরীক্ষা চালুর দাবিতে শিক্ষার্থীরা প্যারিস রোডে অবস্থান করলে তাদের আশ্বস্ত করে এসব বলেন উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহান।

উপাচার্য বলেন, ‘আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ রাখছি। মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা না পেলেও আমরা জরুরি একাডেমিক কাউন্সিলের সভা ডেকে পরীক্ষা নেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবো। আশা করি এ সপ্তাহের মধ্যেই ভালো সমাধান আসবে।’

এর আগে ধারাবাহিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে উপাচার্য বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমাদের পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল ২০১৯ সালে। দুঃখজনক হলেও সত্য এখনও সেই পরীক্ষা শেষ হয়নি। পরীক্ষার তারিখ দেওয়াতে আশার আলো দেখছিলাম, ঠিক তখনই থমকে গেলো সব। পরীক্ষা শেষ না হওয়াতে এটি গলার কাঁটা হয়ে দাড়িয়েছে। আমরা চাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে দ্রুত পরীক্ষাগুলো নেয়া হোক।

আন্দোলনরত আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের হল খোলা নিয়ে কোনও দাবি নেই। আমরা মেসে থেকেই এতদিন পরীক্ষা দিচ্ছিলাম। বাকিগুলোও দিতে চাই। আমরা আমাদের স্থগিত পরীক্ষাগুলো আবারও চলমান চাই।’

‌উল্লেখ্য, গত ২০ ফেব্রুয়ারি একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় সকল বর্ষের ২০১৯ সালে আটকে থাকা পরীক্ষা গ্রহণের ব্যাপার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এরপর ২২ ফেব্রুয়ারি অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ড. দিপু মনি পাঠদান ও পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেন।

 

পরীক্ষা স্থগিতাদেশ বাতিল দাবি রাবি শিক্ষার্থীদের

 

রাবি প্রতিনিধি

শিক্ষামন্ত্রণালয়ের দেয়া পরীক্ষা স্থগিতাদেশ বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় প্যারিস রোডে আয়োজিত এক কর্মসূচিতে হল বন্ধ রেখে হলেও পরীক্ষা নেয়ার দাবি জানান তারা। দাবি মেনে নেয়া না হলে আগামী রোববার কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেয়া হয়।

কর্মসূচিতে গণিত বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সামিরা খাতুন বলেন, ‘আমাদের তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষ হলেও শেষ হয়নি ব্যবহারিক। এতে আমরা যারা মেস নিয়ে পরীক্ষা দিতে এসেছি তাদের জন্য ভোগান্তি বেড়েছে। আমরা অর্থনৈতিক ও মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ছি।’

ভূতত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী তমালিকা বলেন, ‘আমাদের পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল ২০১৯ সালে। দুঃখজনক হলেও সত্য এখনও সেই পরীক্ষা শেষ হয়নি। পরীক্ষার তারিখ দেওয়াতে আশার আলো দেখছিলাম, ঠিক তখনই থমকে গেলো সব। তিনি বলেন, আমাদের দুটি পরীক্ষা হয়েছে, বাকি ছিল একটা। পরীক্ষা শেষ না হওয়াতে এটি গলার কাঁটা হয়ে দাড়িয়েছে।

গণিত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শেখ সুমন বলেন, ‘আমাদের হল খোলা নিয়ে কোনও দাবি নেই। আমরা মেসে থেকেই এতোদিন পরীক্ষা দিচ্ছিলাম। বাকিগুলোও দেবো। আমরা আজ আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবো। আমরা আগামী তিনদিনের মধ্যে আমাদের স্থগিত পরীক্ষাগুলো আবারও চলমান চাই।’

এদিকে প্রায় ৩০ মিনিট আন্দোলনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান এসে পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ করেন। প্রক্টর বলেন, শিক্ষার্থীদের পরীক্ষাগুলো চালু হয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি কষ্টের। পরীক্ষাগুলো পুনরায় চালু করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আমরা প্রক্টরিয়াল বডি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে অনুরোধ করবো। এসময় প্রক্টরের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করলেও। আগামী রোববার ফের আন্দোলনের ঘোষণা দেয় তারা।

প্রসঙ্গত, গত ২০ ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক কাউন্সিলে সভায় সভায় বিভিন্ন বিভাগের সকল বর্ষের পরীক্ষা নেওয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার পর সব বিভাগের পরীক্ষা স্থগিত হয়েছে।

পহেলা মার্চের আগে হল খুলে দেয়ার দাবি রাবি শিক্ষার্থীদের

রাবি টুডে


১ মার্চের আগে সকল হল খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি )শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় পূর্বঘোষিত কর্মসূচি পালন করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরির সামনে জড়ো হন তারা। সেখানেই এই ঘোষণা আসে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে।

তারা আরও বলেন ,এই সময়ের মধ্যে যদি হল খুলে দেয়া নাহয় তাহলে ১ মার্চ শিক্ষার্থীরা যেকোনো মূল্যে আবাসিক হলে প্রবেশ করবেন ।

হল খুলে দেয়ার দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

রাবি প্রতিনিধি: বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খুলে দেয়া এবং নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে আজ সন্ধ্যা ৬টায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শিক্ষার্থীরা।

শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেট থেকে মিছিল শুরু হয়ে প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে যুক্ত হয়।

এসময় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস ও হল খুলে না দেয়া পর্যন্ত লাগাতার আন্দোলনের হুঁশিয়ার দেয়।

বিক্ষোভ কর্মসূচিতে তারা- ‘ভ্যাক্সিন আনো ভ্যাক্সিন দাও, ক্যাম্পাস খুলে দাও’, আমার ভাইকে মারলো কেন প্রশাসন জবাব চাই’ বলে স্লোগান দিতে থাকে।

সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় আমাদের শিক্ষাজীবন প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। ক্যাম্পাস বন্ধ থাকলেও বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে চলে এসেছে এবং তারা মেসে থাকতে শুরু করেছে।

তারা বলেন, আপনারা জানেন, জাবি, ববির মেসে অবস্থান করা শিক্ষার্থীরা স্থানীয়দের নির্যাতনের শিকার হয়েছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা এঘটনার পুনরাবৃত্তি চাই না৷ পাশাপাশি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস যেন নিরাপদ থাকে সেই আহ্বান জানাচ্ছি।

হল খুলে না দিলে তীব্র আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা দীর্ঘদিন থেকে হলে থাকছে শিক্ষার্থীরা৷ এতে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এছাড়াও ২০২০ সালের পরীক্ষার্থীদের বিষয়ে একাডেমিক কাউন্সিলে পরীক্ষার ব্যাপারে উপযুক্ত কোন সিদ্ধান্ত নেয় নি প্রশাসন। এতে করে আমরা দীর্ঘ জটের সম্মুখীন হতে যাচ্ছি, পাশাপাশি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছি। এসময় তারা হল খুলে দিয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানান।

হল খোলাসহ ৫ দফা দাবিতে সমাবেশ রাবি শিক্ষার্থীদের

 

রাবি প্রতিনিধি


ফেব্রুয়ারির মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ও হল খোলাসহ পাঁচ দফা দাবিতে ছাত্র সমাবেশ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। আজ(সোমবার) বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

শিক্ষার্থীদের অন্য দাবিগুলো হলো- অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিভিন্ন বর্ষের পরীক্ষার রুটিন ফেব্রুয়ারি অথবা মার্চের মধ্যে দেয়া, আটকে থাকা পরীক্ষা দ্রুত সম্পন্ন করা, সিলেবাস কমিয়ে দ্রুত ক্লাস শেষ করা, করোনাকালীন হল ফি মওকুফসহ সকল ফি ৫০ শতাংশ হ্রাস করা।

সমাবেশে পপুলেশন সায়েন্স এন্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী আমানুল্লাহ আমানের সঞ্চালনায় নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন মানিক বলেন, ‘নীতিনির্ধারকগণ মনে করেন, করোনা বিরাজ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। অথচ আপনারা দেখবেন, হাট-বাজার, সিনেমাহলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দাপ্তরিক কাজগুলো অনায়াসেই চলছে। আর আমরা থমকে রয়েছি কোন এক অজানা আদেশের অপেক্ষায়। আমরা চাই অবিলম্বে ক্যাম্পাস খুলে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা হোক।

প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘দীর্ঘদিন থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়ে আর থাকতে চাই না। শুধু বিশ^বিদ্যালয় খুলে দিলে সমস্যার সমাধান হবে না। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে হলগুলোও খুলে দিতে হবে। অন্যথায় আমরা কঠোর আন্দোলন করতে বাধ্য হবো।

আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘হল বন্ধ রেখে পরীক্ষা নেওয়া আমাদের জন্য মরার উপর খাঁড়ার ঘা’র মত। অনেক শিক্ষার্থীরই সামর্থ্য নেই মেসে অবস্থান করে পরীক্ষা দেওয়ার। তাই মানবিক দিক বিবেচনা করে অনতিবিলম্বে প্রশাসনকে হল খুলে দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।

সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মহাব্বত হোসেন মিলন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মামুন, পপুলেশন সায়েন্স এন্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী আবিদ হাসান, আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী মাজহারুল ইসলাম ও মোস্তাফিজুর রহমান, রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী শাকিল হোসেন প্রমুখ। সমাবেশে সাংস্কৃতিক জোট, ছাত্র ফেডারেশন, ছাত্র মৈত্রী, ছাত্র অধিকার পরিষদ রাবি শাখার নেতা-কর্মীরা সংহতি প্রকাশ করেন।

রাবি: সরব ক্যাম্পাসে নিরব প্রশাসন!

 

ওয়াসিফ রিয়াদ, রাবি


করোনার কারণে গত বছর মার্চে বন্ধ হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। দীর্ঘ ছুটিতে জৌলুস হারায় ক্যাম্পাসটি। বন্ধের ১০ মাস পর ধীরে ধীরে ঝিমিয়ে পড়া ক্যাম্পাস ফের সরব হয়েছে। ক্যাম্পাসের প্রতিটি চত্বর প্রাণচাঞ্চল্যতা ফিরে পেলেও বিশ্ববিদ্যালয় ও হলগুলো খোলার ব্যাপারে নিরব রয়েছে প্রশাসন। প্রশাসন বলছে- ‘সরকারি নির্দেশনা পেলেই খুলবে ক্যাম্পাস’।

ক্যাম্পাস খোলার প্রস্তুতির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম আবদুস সোবহান জানান, ‘বিশ^বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও দাপ্তরিক কার্যক্রম অনেকদিন থেকেই চলছে। বিশ্ববিদ্যালয় খোলার জন্য নতুন করে প্রস্তুতির প্রয়োজন নেই। তিনি বলেন, বিশ^বিদ্যালয় ও হল খোলার বিষয়ে সরকারি নির্দেশনা পেলেই খুলে দেয়া হবে। এছাড়া আমাদের কিছু করার নেই।’

এদিকে বন্ধ ক্যাম্পাসে আসতে শুরু করেছে শিক্ষার্থীরা। গল্প-আড্ডা, গ্রুপ স্টাডিসহ নানা ধরণের সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আড্ডায় মেতেছে তারা।

সরেজমিনে ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহন মার্কেট, আমতলা, শহিদ মিনার, জোহা চত্বর, প্যারিস রোডে জনসমাগম বেড়েছে। শুধু তাই নয়, প্রাণহীন সেই টুকিটাকি চত্বরও ফিরে পেয়েছে তার যৌবন। চায়ের কাপের টুংটাং শব্দে আড্ডা, গানে মেতেছে শিক্ষার্থীরা।

ছবিঃ গল্প-আড্ডায় রাবি শিক্ষার্থীরা

 

এদিকে আটকে থাকা পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশনা দিলেও হল খোলার বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি প্রশাসন। এতে শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে ফেব্রুয়ারিতেই বিশ্ববিদ্যালয় ও আবাসিক হল খোলার দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী এনামুল হক বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া সব কিছুই চলছে, সেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে কি সমস্যা সেটা আমাদের বুঝে আসে না। ঢাবির হল খুলছে ১৩ মার্চ, ইবির হল খোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে সেখানে রাবি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হয়েও কোন সিদ্ধান্তে আসতে পারছে না, এটা অনেক দুঃখজনক।’

প্রাণীবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সবাই দেশের প্রথম সারির নাগরিক। তারা নিজেদের সুরক্ষার ব্যাপারে যতেষ্ঠ সচেতন। তিনি আরও বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে না দেয়া সরকারের ভুল সিদ্ধান্ত। আর এর মাসুল দিতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। বর্তমানে শিক্ষাব্যবস্থা নড়বড়ে হয়ে গেছে। দিন দিন পরিস্থিতি জটিল হয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় রাবি একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হয়েও কিভাবে সরকারের নির্দেশনার অপেক্ষায় থাকে?’

এদিকে ক্যাম্পাসের ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের নেতারাও হল খুলে পরীক্ষা গ্রহণের দাবি জানিয়ে আসছেন। তারা বলছেন, আবাসিক হল বন্ধ রেখে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত অবিবেচক। এতে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। হল খোলার দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে তাদের সমর্থন রয়েছে।

রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ‘আমরা উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে দ্রুত হল ও ক্যাম্পাস খোলার দাবি জানিয়েছিলাম। আমরা চাই শিক্ষার্থীরা হলে থেকে সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করুক।’

রাবি শাখা ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাব্বত হোসেন মিলন বলেন, ‘দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়েছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক করার দাবি জানাই।’

ছাত্র ইউনিয়ন রাবি সংসদের সভাপতি শাকিলা খাতুন বলেন, ‘দীর্ঘদিন ক্যাম্পাস বন্ধ থাকার কারণে সামগ্রিক দিক থেকে শিক্ষা ব্যবস্থা একটু পিছিয়ে গেছে। এ অবস্থায় ক্যাম্পাস খোলা জরুরি। তবে এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি নজরে রাখতে হবে।’ শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে দ্রুত ক্যাম্পাস খোলার দাবি জানান তিনি।

 

রাবিতে হল না খুলে পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত

 

রাবি প্রতিনিধি

‘বিভাগগুলো চাইলে যে কোন সময় শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিতে পারবে। এছাড়া হল খোলার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কিছু ভাবছে না।’।
আজ (সোমবার) দুপুরে ৪ দফা দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্যের সাথে সাক্ষাতের পর প্রশাসনের নেয়া এমন সিদ্ধান্তের কথা জানান কয়েকজন শিক্ষার্থী।

শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমরা হল খুলে পরীক্ষা নেয়াসহ ৪ দফা দাবি নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক আবদুস সোবহানের সাথে সাক্ষাৎ করলে তিনি পরীক্ষার ব্যাপারে আমাদের আশ্বস্থ করেন। কিন্তু হল খোলার বিষয়ে প্রশাসন কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি বলে জানান। আমরা চাই, স্বাস্থ্যবিধি মেনে হল খুলে পরীক্ষাগুলো নেয়া হোক। এতে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তী কমবে।’

এবিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক এম আবদুস সোবহান জানান, ‘আমি চাইনা তোমাদের শিক্ষাজীবণ থেকে একটি দিনও নষ্ট হোক। এজন্য পরীক্ষার বিষয়ে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের কোন আপত্তি নেই। বিভাগ যে কোন সময় পরীক্ষা নিতে পারবে।’

হল খোলার বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, ‘হল খুলে দিলে অন্য শিক্ষার্থীরাও হলে এসে থাকতে শুরু করবে। সেটা অনেকটা বিপদজনক। এজন্য আমরা হল খোলার বিষয়ে এখন পর্যন্ত কিছু ভাবি নি।’

এর আগে গত রোববার চতুর্থ বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণাসহ ৪ দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে রাবি শিক্ষার্থীরা। আগামী বৃহস্পতিবারের (৪ ফেব্রুয়ারি) মধ্যে দাবি মেনে নিয়ে পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা না করলে লাগাতার আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেয় তারা। তাদের অন্য দাবিগুলো হলো- ‘২০১৬-১৭ সেশনের চূড়ান্ত পরীক্ষা আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে সম্পন্ন করা, পরীক্ষার আগে স্বাস্থ্যবিধি মেনে হল খুলে দেয়া, করোনাকালীন হলসহ অন্যান্য অতিরিক্ত ফি মওকুফ করা’

 

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: পরীক্ষার তারিখ ঘোষণার দাবিতে শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটাম

রাবি প্রতিনিধি: চতুর্থ বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণাসহ ৪ দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা।

রবিবার বেলা ১২টায় সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবনের সামনে ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থীদের আয়োজিত মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়।

আগামী বৃহস্পতিবারের (৪ ফেব্রুয়ারি) মধ্যে দাবি মেনে নিয়ে পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা না করলে লাগাতার আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেয় শিক্ষার্থীরা।

তাদের অন্য দাবিগুলো হলো- ‘২০১৬-১৭ সেশনের চূড়ান্ত পরীক্ষা আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে সম্পন্ন করা, পরীক্ষার আগে স্বাস্থ্যবিধি মেনে হল খুলে দেয়া, করোনাকালীন হলসহ অন্যান্য অতিরিক্ত ফি মওকুফ করা’

নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন মানিকের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদ সাকী বলেন, শিক্ষকরা আমাদের পিতৃতুল্য। কিন্তু সেই শিক্ষকরাই এখন আর আমাদের নিয়ে ভাবেন না। যদি ভাবতেন তাহলে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো আমাদেরও পরীক্ষা নিতেন।

তিনি বলেন, আপনাদের নিয়োগ বাণিজ্য তো থেমে নেই, সিনেট অধিবেশন থেমে নেই, প্রশাসনিক সকল কার্যক্রম চলছে, তাহলে আমার পরীক্ষা থেমে আছে কেন? আপনাদের যে সংকীর্ণতা তা পরিহার করে আমাদের কথা ভাবুন। আমরা বাঁচলে রাষ্ট্র বাঁচবে, আমরা বাঁচলে আগামী ভবিষ্যত বাঁচবে।

অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী খাইরুল ইসলাম দুখু বলেন, ‘আর কতদিন এভাবে আমাদের প্রতীক্ষার প্রহর গুনতে হবে? ইতোমধ্যে আমরা পরিবারের বোঝা হয়ে পড়েছি। কিছুদিন পর রাষ্ট্রের বোঝা হয়ে যাবো। আমাদের নাকের ডগা দিয়ে পরীক্ষার সার্কুলার যাচ্ছে, আমরা আবেদন করতে পারছি না। এতে আমরদের হতাশা বাড়ছে পাশাপাশি মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ছি।

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শরীফ বলেন, গণমাধ্যম থেকে জানতে পারি- সরকার বলছে স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত প্রশাসন নিবে। এদিকে প্রশাসন সরকারের নির্দেশনার কথা বলছে। সরকার ও প্রশাসনের লোফালুফি খেলায় আমাদের হতাশা বাড়ছে, জীবনের আশার আলোস্তিমিত হয়ে যাচ্ছে। দিনশেষে এর দায়ভার কে নিবে?

হল খোলার দাবি জানিয়ে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আবিদ হাসান বলেন, সরকারি হিসেবে কওমী মাদ্রাসায় প্রায় ১৪ লাখ শিক্ষার্থী। মাদ্রাসা খোলার ৫-৬ মাস পার হয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত কোনো শিক্ষার্থীর করোনায় আক্রান্তের ঘটনা আমারা দেখিনি। কওমী মাদ্রাসাগুলোতে যেখানে শিক্ষার্থীরা একই রুমে গাদাগাদি করে থাকছে, সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে প্রতি রুমে ২ থেকে ৪ জন শিক্ষার্থী থাকেন। তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক হল খুলে দিতে সমস্যা কোথায়?

এসময় আরও বক্তব্য রাখেন ফিসারিজ বিভাগের শিক্ষার্থী শ্যামল অধিকারী, ম্যাটেরিয়াল সায়েন্সের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ইবরাহিম খলিল, ফোকলোর বিভাগের শিক্ষার্থী আভা প্রমুখ।

রাবি শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

 

রাবি প্রতিনিধি


ঝুলন্ত অবস্থায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মোবাসসিরা তাহসিন ইরা নামের এক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল(০শনিবার) দিবাগত রাত তিনটার দিকে নগরীর মির্জাপুর এলাকায় একটি ছাত্রী হোস্টেল থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ
এদিকে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক হাসিবুল আলম প্রধান এবং মতিহার থানার এসআই ইমরান হোসেন।

মোবাসসিরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের তৃতীয় বর্ষের ছিলেন। তার বাড়ি নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়া উপজেলায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আবাসিক হোস্টেলের সূত্রে জানা যায়, শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে সর্বশেষ মোবাসসিরার সঙ্গে কথা হয় হোস্টেলের অন্য আবাসিক ছাত্রীদের। তারপর তার সাড়াশব্দ না পেয়ে ও দরজা বন্ধ পেয়ে তারা ডাকাডাকি করে। পরে দরজা ভেঙ্গে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান হোস্টেলের অন্য শিক্ষার্থীরা।

পরে পুলিশ ও আইন বিভাগের সভাপতিকে খবর দেয়া হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান মতিহার থানা পুলিশ, আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. হাসিবুল আলম প্রধান, বিভাগের আরেক শিক্ষক অধ্যাপক এম এ হান্নান। পরে ওই ছাত্রীর বাড়িতে খবর দেন তারা।

এই ব্যাপারে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. হাসিবুল আলম প্রধান বলেন, কী কারণে এই ঘটনা ঘটলো তা এখনও জানা যাচ্ছে না। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।

তিনি আরও বলেন, আমি খবর পেয়েই ছুটে আসি। মেয়ের বাসায় খবর দেয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর বিষয়টি হয়তো জানা যাবে।