ইবি ক্যাম্পাসে রাবি শিক্ষার্থীদের লাঞ্ছনার অভিযোগ

 

রাবি প্রতিনিধি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ৬ শিক্ষার্থীকে লাঞ্ছনার অভিযোগ উঠেছে কুষ্টিয়া ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) প্রক্টর ড. পরেশ চন্দ্র বর্ম্মণের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, গত সোমবার রাবির কয়েকজন শিক্ষার্থী ইবি ক্যাম্পাসে ঘুরতে গেলে এমন ঘটনা ঘটে।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভুক্তভোগী রাবির ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী চঞ্চল আহমেদ একটি স্ট্যাটাস দেয়ার পর থেকে বিষয়টি নিয়ে শুরু হয় সমালোচনা।

ঘটনার শিকার হওয়া বাকি শিক্ষার্থীরা হলেন- নাবিল হাসান, রাজিব হোসেন, মো. রাফিজ, মো. ইমন বিশ্বাস ও রাজু আহমেদ সিয়াম। এরা সবাই রাবির ১৮-১৯ সেশনের বিভিন্ন বিভাগের ছাত্র।

স্ট্যাটাসে চঞ্চল লিখেন, ‘‘আমরা গতকাল (২ তারিখ) কুষ্টিয়ার ছয়জন রাবির দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরতে যাই। ক্যাম্পাসের মূল ফটক দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করি কোন প্রকার বাঁধা ছাড়াই।

আমরা তখন ইবির কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীর সামনে অবস্থান করছিলাম। এমন সময় একটি প্রাইভেট কার এসে আমাদের সামনে দাঁড়ায় এবং ইবি প্রক্টর পরেশ চন্দ্র বর্ম্মণ স্যার আমাদের পরিচয় জিজ্ঞেস করেন।

আমরা রাবির শিক্ষার্থী পরিচয় দিতেই উনি খুব খারাপভাবে রিয়াক্ট করেন এবং বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকো আসুক আর আফগানিস্তান থেকে আসুক, চলে যাও, যাও। চরম লজ্জিত আর অপমানিত হয়ে আমরা ফিরে যাচ্ছিলাম।

এরপর তিনি প্রচন্ড বেগে গাড়ি তেড়ে এসে, রেগে আগুন হয়ে আঙুল তুলে, তুই তুকারী করে, খুব বাজেভাবে তাড়িয়ে দেন। আমরা একজন শিক্ষকের থেকে এমন অসঙ্গত আচরণ কখনোই আশা করি না। তিনি আমাদেরকে ভালোভাবেও বলতে পারতেন! কিন্তু তিনি তা না করে এমন দাম্ভিকতাপূর্ণ ও অসঙ্গত আচরণ দেখিয়েছেন। তার এমন জঘন্য ব্যবহারের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’’

শুধু তাই নয়, প্রক্টরের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ইবি শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রায়ই সময় কোন ধরণের উপযুক্ত কারণ ছাড়াই তিনি তাদের হ্যারেসমেন্ট করতেন।

অকারণে শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ড নিয়ে অফিসে রেখে দিতেন। ছাত্রী হলের সামন দিয়ে হেটে গেলেই আইডিকার্ড নিয়ে বাড়িতে ফোন দিতেন। এছাড়া প্রায়ই শিক্ষার্থীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করতেন তিনি।

সকল অভিযোগ অস্বীকার করে ইবি প্রক্টর ড. পরেশ চন্দ্র বর্ম্মণ বলেন, সেদিন বিকেলের দিকে ক্যাম্পাস পরিদর্শনের জন্য বের হই। কর্মচারী কোয়াটার থেকে কিছু অভিযোগ ছিল যে, ছোট বাচ্চাদের খেলার সময় বহিরাগতরা এসে তাদের বিরক্ত করছে।

আমি গাড়ি নিয়ে বের হতেই দেখলাম কোয়াটারের ওখানে পুরো রাস্তাটা ব্লক করে কয়েকজন দাঁড়িয়ে আছে। আমি গাড়ি থামালাম তারা রাস্তার পাশে গিয়ে দাঁড়াল, গাড়ি থেকে না নেমেই জিজ্ঞাসা করলাম তোমরা কারা?

তখন তাদের মধ্যে থেকে একজন হাত দিয়ে ইশারা করে বললো তাদের বাড়ি শান্তিডাঙ্গা, ছাত্র না। তখন আমি বললাম, মাস্ক নাই তোমাদের এভাবে এখানে চলাফেরা করা উচিৎ না, তোমরা চলে যাও।

তিনি আরও বলেন, আমি তাদের উচ্চস্বরেই বের হতে বলেছি। তবে তাদের সাথে তুইতুকারী করিনি। অন্যান্য অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, আমি কোন শিক্ষার্থীকে অযথা হ্যারেসমেন্ট করি না।

অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইবি উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সালাম বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনি নি। তবে সত্যি যদি এমনটা হয়ে থাকে তাহলে এটা উচিৎ হয়নি। ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশের বিষয়ে কোন নির্দেশনা দেয়া হয়নি, তবে নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা পরিচয় অথবা আইডিকার্ড দেখতে পারি।

কিন্তু পরিচয় দেয়ার পর অসৌজন্যমূলক আচরণ অবশ্যই কাম্য নয়। আমি বিষয়টি নিয়ে প্রক্টরের সাথে কথা বলবো।

হ্যারেসমেন্টসহ নানা অভিযোগের বিষয়টি কিভাবে দেখছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন শিক্ষার্থীকে অকারণে হ্যারেস করার অধিকার কারো নেই।