রেললাইনে বসে মোবাইল গেমে মত্ত, এইচএসসি পরীক্ষার্থীর দেহ বিচ্ছিন্ন

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক


নাটোরের লালপুরে স্মার্টফোন গেমস আসক্তিতে ফারুক হোসেন (১৮) নামে এক কলেজছাত্রের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার বাওড়া-বৃষ্টপুর রেললাইনে ঈশ্বরদীগামী একটি মালবাহী ট্রেনে কাটা পড়ে তার মৃত্যু হয়।

নিহত ফারুক উপজেলার বাওড়া গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে এবং গোপালপুর পৌর টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের ছাত্র। তিনি এ বছর এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন।

জানা যায়, রাতে উপজেলার গোপালপুর রেলগেটের রাস্তার ওপর মাথাবিহীন টুকরো টুকরো একটি মরদেহ পাওয়া যায়।

ঈশ্বরদী রেলওয়ে পুলিশ গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে। পরে এক কিলোমিটার দূরে বিচ্ছিন্ন মাথা ও একটি মোবাইল ফোন পাওয়া যায়। এতে মরদেহটি ফারুকের বলে শনাক্ত হয়।

স্থানীয়রা জানান, বাওড়া-বৃষ্টপুর রেলওয়ে স্থানীয় তরুণদের কাছে ‘ফ্রি ফায়ার জোন’। বিকেল থেকে রেললাইনের ওপর সারি সারি বসে মোবাইলে গেমে মেতে ওঠে স্থানীয় তরুণরা।

নিহত ফারুকের বাবা বাচ্চু মিয়া জানান, বাড়ির পাশে রেললাইন হওয়ায় সন্ধ্যায় ফারুক রেললাইনে বসে চার বন্ধুর সঙ্গে মোবাইলে গেম খেলছিল। পরে রাত হওয়ায় বন্ধুরা চলে গেলেও ফারুক সেখানে বসেই গেম খেলতে থাকে। রাতে ঈশ্বরদী রেলওয়ে পুলিশের মাধ্যমে ছেলের মৃত্যুর খবর জানতে পারেন বাচ্চু মিয়া।

এ ব্যাপারে লালপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা ট্রেনে কাটা পড়ে একজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, যেহেতু ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু হয়েছে, তাই এ বিষয়ে ঈশ্বরদী রেলওয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।

ভালোবাসার মানুষকে পেতে নাটোরে নারী থেকে পুরুষ হয়ে তরুণীকে বিয়ে

নাটোর টুডে


আশ্চর্যজনক এক ঘটনা ঘটেছে উত্তরবঙ্গের জেলা নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার লক্ষ্মীকোল বাজার এলাকায়। ভালবাসার মানুষটিকে নিজের করতে নারী থেকে পুরুষ হয়েছেন ‘শাহরিয়ার সুলতানা’। বর্তমানে তার নাম রাখা হয়েছে শাহরিয়ার জাইন।

নারী থেকে পুরুষে রূপান্তর হতে যে মেয়েটি তাকে সহায়তা করেছেন এবং জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সঙ্গে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তাকেই জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নিলেন তিনি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বড়াইগ্রাম থানাধীন লক্ষীকোল বাজারের বাসিন্দা পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী উপপরিদর্শক সাজেদুর রহমানের সংসারের ৩৫ বছর আগে জন্ম নেন শাহরিয়ার সুলতানা। তবে শাহরিয়ার সুলতানা কলেজে পড়া অবস্থায় তার শারীরিক কিছু পরিবর্তন দেখা দেয়। এ পরিস্থিতিতে বিএ পাস করে বাড়িতেই থাকতেন শাহরিয়ার সুলতানা। এরমধ্যে তার শরীরের গঠন অনেকটা পুরুষের মত হয়ে যায়।

শাহরিয়ার সুলতানা বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ২ বছর আগে বগুড়া সদর উপজেলার শিববাটি এলাকার মাহবুবা আক্তারের সাথে পরিচয় হয়। পরিচয়ের একপর্যায়ে আমি তাকে আমার সমস্যাগুলো জানাই। সে আমার পাশে এগিয়ে আসে। চিকিৎসার পরামর্শ দেয়ার পাশাপাশি সারা জীবন পাশে থাকার আশ্বাস দেয় সে। পাশপাশি চিকিৎসার জন্য অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করে সে।

তিনি জানান, এক বছর আগে ভারতে নিউ দিল্লির একটি হাসপাতালে স্তন অপারেশন এবং জেন্ডার ডিসফোরিয়া অপারেশন করেন তিনি। এরপর আস্তে আস্তে সম্পূর্ণ পুরুষে রূপান্তরিত হন।

ঢাবি ছাত্রী সুমাইয়া: হত্যা নাকি আত্মহত্যা?

সানজিদ আরা সরকার বিথী, ঢাবি


নাটোরের মেয়ে সুমাইয়া খাতুন।ইসলামিক স্টাডিজ২০১৪-১৫ সেশনের ৯ম ব্যাচের ছাত্রী ছিলেন।

৭ মাস আগে মৃত বাবার ইচ্ছা ছিল মেয়ে আমার বিসিএস ক্যাডার হবে।সেই ইচ্ছার বীজ হৃদয়ে বপন করে সুমাইয়া বিয়ের পর ও চেষ্টা করে যাচ্ছিল বাবার অপূর্ন ইচ্ছাকে বাস্তবে রূপ দিতে।

কিন্তু শ্বশুরবাড়ির লোক চাইত সুমাইয়া ঘরের কাজ করুক, চাকরি করবে ঘরের বউ এটা তারা মেনে নিতে পারত না।বিয়ে হয়েছিল ২০১৯ সালের ২৪ এপ্রিল। ৪২ দিন হল তার একটি বাচ্চা নষ্ট হয়েছে। মায়ের অনিচ্ছাসত্ত্বেও মেয়ে শনিবার শ্বশুরবাড়ি যায়, আর ফিরতে হল লাশ হয়ে।

গতকাল সকাল ৭ঃ৩০ টায় সুমাইয়ার শ্বশুর সুমাইয়ার মাকে ফোন করে হাসপাতালে যেতে বলে গিয়ে দেখে মেয়ে তার নিথর লাশ হয়ে পরে আছে পাশে নেই শ্বশুরবাড়ির কেউ।চারজনকে (স্বামী, শশুর, শাশুড়ী,ননদ)আসামি করে মামলা করা হয়েছে। স্বামী -শ্বশুর -শ্বাশুরি পলাতক।

নাটোর জেলা এসপি লিটন কুমার সাহা ফোর্স সহ শ্বশুর বাড়িতে হানা দিলে ননদকে পায়। পুলিশ জেরা করলে একেক সময় একেক কথা বলে তারা জানায় ফজরের নামাজ পরেছে সুমাইয়া অথচ ময়নাতদন্ত বলছে সুমাইয়া মারা গেছে রাত ১২ টা নাগাদ।

অতঃপর বড় ননদকে গ্রেফতার করা হয়।সুমাইয়ার পরিবারের লোকেরা মানতে পারছেননা সুমাইয়া আত্মহত্যা করতে পারেনা। তারা দাবি করছে এটা হত্যা। সুমাইয়ার ভাই জানায় বোন তার সবসময় কোরআন -হাদীস পড়ত আর পরিবারের লোকজনকে শুনাত৷

সুমাইয়ার ভাই আরো জানায় বোনকে হয়তো টাকার জন্য চাপ দেয়া হত পারিবারিক দুরবস্থার কারনে মাকে জানাতনা।

এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সুমাইয়া হত্যার বিচারের জন্য উত্তাল শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় না পুরো বাংলাদেশ সুমাইয়া হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চায়।যাতে আর কোনো সুমাইয়ার স্বপ্নের পাহাড় চুরমার না হয়ে যায়।

নাটোরের ইতিহাস ও ঐতিহ্য

ইসরাত জাহান ইতি


প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি নাটোর জেলা বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে অবস্থিত একটি জেলা। এ জেলার উত্তরে নওগাঁ ও বগুড়া জেলা, দক্ষিণে পাবনা ও কুষ্টিয়া জেলা, পূর্বে পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলা এবং পশ্চিমে রাজশাহী জেলা অবস্থিত। জেলাটির আয়তন প্রায় ১৯০৫.০৫ বর্গ কিলোমিটার।

বর্তমানে এক হাজার চারশত চৌত্রিশ গ্রাম ও সাতটি উপজেলা তথা নাটোর সদর, সিংড়া, গুরুদাসপুর, বড়াইগ্রাম, লালপুর, বাগাতিপাড়া, নলডাঙ্গা নিয়ে এ জেলা গঠিত।

পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে সভ্যতা। প্রকৃতি, পরিবেশ, যাতায়াত ব্যবস্থা, সংস্কৃতি, জীবনযাত্রা, অর্থনীতি সবই নদীর সঙ্গে সম্পর্কিত। নাটোর জেলার উল্লেখযোগ্য নদ-নদীর মধ্যের রয়েছে মুসাখান, নন্দকুঁজা, বারনই, গোদাই, বড়াল, খলিসা ডাঙ্গা, গুনাই, নারদ নদ।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, নারদ বাংলাদেশের অতি প্রাচীনতম নদের একটি। এ নদকে ঘিরে প্রায় তিনশত বছর আগে নাটোর শহরের গোড়াপত্তন হয়। এরপর ধীরে ধীরে নারদ নদের চারপাশের উর্বর ভূমিকে কেন্দ্র করে বসতি গড়ে ওঠতে থাকে। ব্যবসা-বাণিজ্য ও যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ছিল খরস্রোতা এই নারদ নদ। নাটোরের রাজা রামজীবন ও রঘুনাথ আঠারো শতকের প্রথম দিকে এখানে তাদের রাজধানী স্থাপন করেন।

প্রাচীন ঐতিহ্য ও প্রত্নতাত্বিক ঐশ্বর্য্যমন্ডিত বরেন্দ্র ভূমি সংলগ্ন এ নাটোর জেলা। কথিত আছে, নাটোর জেলার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নারদ নদীর নাম থেকেই ‘নাটোর’ শব্দটির উৎপত্তি। ভাষা গবেষকদের মতে মূল শব্দ হচ্ছে, ‘নাতোর’ । উচ্চারণগত কারণে এটি ‘নাটোর’ হয়েছে। নাটোর অঞ্চলটি নিম্নমুখী হওয়ায় চলাচল করা ছিল খুব কষ্টকর। এই জনপদের দুর্গমতার বোঝাতেই বলা হতো ‘নাতোর’। এর অর্থ দুর্গম।

আবার অনেকেই বলেন, বর্তমান নাটোর শহরের ওপরেই একসময় চলনবিলের বিস্তৃতি ছিল। জনৈক রাজা নৌকায় চড়ে সেই স্থানের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় সাপকে ব্যাঙ ধরেছে দেখে নৌকার মাঝিদের ‘নাও ঠারো’ অর্থাৎ নৌকা থামাও বলেছিলেন। হিন্দু ধর্মমতে বেঙ সাপকে ধরলে মনসাদেবী ক্রোধান্বিত হন। সুতরাং নৌকা থামিয়ে মনসা পুজা করাই হিন্দু রাজার পক্ষে অধিক সংগত। তাই ‘নাও ঠারো’ কথা হতেই নাটোর নামের উৎপত্তি হয়েছে বলে অনুমান করা হয়।

ঐতিহাসিকদের মতে অষ্টাদশ শতকে নাটোরের রাজবংশের উৎপত্তি। রাজা রামজীবন রায় ছিলেন নাটোর রাজ বংশের প্রতিষ্ঠাতা। মান-মর্যাদা ও বিষয় সম্পত্তিতে নাটোরের রাজা ছিলেন উত্তরবঙ্গের মধ্যে অসামান্য। কথিত আছে লস্কর খাঁ তার সৈন্য-সামন্তদের জন্য যে স্থান (বর্তমান পুঠিয়া এলাকা) হতে রসদ সংগ্রহ করতেন তা কালক্রমে লস্করপুর পরগনা নামে রুপান্তর হয়। এই পরগনার একটি নিচু চলাভূমির নাম ছিল ছাইভাংগা ।

১৭১০ সনে রাজা রামজীবন রায় এ স্থানে মাটি ভরাট করে তার রাজধানী স্থাপন করেন। দিনেদিনে তা প্রাসাদ, দীঘি, উদ্যান, মন্দির ও মনোরম অট্রালিকা দ্বারা সুসজ্জিত নগরিতে পরিনত হয় উঠে । রামজীবনের পালিত পুত্র রামকান্ত রায়ের সাথে বগুড়া জেলার ছাতিয়ান গ্রামের আত্মারাম চৌধুরীর একমাত্র কন্যা ভবানীর বিবাহ হয়। বিয়ের সময় ভবানীর বয়স ছিল ১৫ বছর। রাজা রামজীবন রায় ১৭৩০ সালে মৃত্যুবরন করেন। মৃত্যুর পূর্বে তিনি রামকান্ত রায়কে রাজা এবং দেওয়ান দয়ারাম রায়কে তার অভিভাবক নিযুক্ত করেন। রামকান্ত রাজা হলেও প্রকৃত পক্ষে সম্পূর্ণ রাজকার্যাদি পরিচালনা করতেন দয়ারাম রায়। তাঁর দক্ষতার কারনে নাটোর রাজবংশের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি ঘটে।

১৭৪৮ সালে রাজা রামকান্ত পরোলোকগমন করেন। স্বামীর মৃত্যুর পর রাণী ভবানী জমিদারী পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহন করেন। এবং রাণী ভবানী নায়েব দয়ারামের উপরে সন্তুষ্ট হয়ে তাঁকে দিঘাপতিয়া পরগনা উপহার দেন যা এখন উত্তরা গণভবন নামে পরিচিত। বর্তমান উত্তরা গণভবনটি দয়ারামের পরবর্তী বংশধর রাজা প্রমদানাথের সময় রূপকথার রাজ প্রাসাদে উন্নীত হয়। ১৭৮২ সালে ক্যাপ্টেন রেনেল এর ম্যাপ অনুযায়ী রাণী ভবানীর জমিদারীর পরিমাণ ছিল ১২৯৯৯ বর্গমাইল। শাসন ব্যবস্থার সুবিধার জন্য সুবেদার মুর্শিদ কুলী খান বাংলাকে ১৩ টি চাকলায় বিভক্ত করেন। এর মধ্যে রাণী ভবানীর জমিদারী ছিল ৮ চাকলা বিস্তৃত।

বর্তমান বাংলাদেশের রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, রংপুর, দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, যশোর, ময়মনসিংহ জেলার পুখুরিয়া পরগণা এবং ঢাকা জেলার রাণীবাড়ী অঞ্চল এবং পশ্চিমবঙ্গের মালদা, মুর্শিদাবাদ ও বীরভূম জেলাব্যাপী বিস্তৃত ছিল তার রাজত্ব । এ বিশাল জমিদারীর অধিশ্বরী হওয়ার জন্যই তাকে মহারাণী উপাধী দেয়া হয় এবং তাকে অর্ধ-বঙ্গেশ্বরী হিসাবে অভিহিত করা হতো। ১৮০২ সালে বড়নগর রাজবাড়ীতে ৭৯ বছর বয়সে রাণী ভবানী মৃত্যুবরণ করেন।

প্রাচীন জনপদগুলো সচরাচর সংস্কৃতির ভান্ডার ও বৈচিত্র্যময় হয়ে থাকে। নাটোর ও তার ব্যতিক্রম নয়। এ অঞ্চলে রয়েছে আঞ্চলিক অসংখ্য প্রবাদ-প্রবচন পালাগান, লোকসংস্কৃতি, পল্লীগীতি, গ্রাম্য ধাঁধা যাকে নাটোরের কোনো কোনো অঞ্চলে ‘মান’ বলা হয় । বৈচিত্র্য এ প্রবাদ-প্রবচনে কৃষি, আবহাওয়া, সামাজিক অবস্থাসহ মানুষের দৈনন্দিন জীবন যাত্রার নানাদিক ফুটে উঠে ।

এর মাধ্যমে তারা বিচিত্র অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে থাকে ।জোছনা ভরা সন্ধ্যায় গ্রামাঞ্চলের মুরুব্বিরা সারাদিনের কর্মক্লান্ত দেহ এলিয়ে ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতনিকে সাথে নিয়ে উঠোনে সপ বা পাটি বিছিয়ে শুয়ে-বসে নানা ধরনের ধাঁধা, প্রবাদ-প্রবচন, পালাগান ও পল্লীগীতির আসর বসিয়ে থাকেন। এ অঞ্চলের আঞ্চলিক গানগুলোর মধ্যে মাদার গান, পদ্মপুরাণ বা মনসার গান ও ভাসানযাত্রা, বিয়ের গীত, মনসার গান বা ভাসান যাত্রা, বারোসা গান, মুর্শিদী গান উল্লেখযোগ্য।

বাংলাদেশের অন্যান্য অনেক অঞ্চলের তুলনায় নাটোরের আদিবাসী সম্প্রদায়ের ও রয়েছে সুপ্রাচীন ঐতিহ্য । নাটোরের ৬টি উপজেলাতে বসবাসরত মোট আদিবাসী জনগোষ্ঠী প্রায় ৪৫ হাজার । আদিবাসী সম্প্রদায় আছে ২২-২৩ টি। সম্প্রদায়গুলো হচ্ছে : ওঁরাও, পাহান, পাহাড়ী, সিং, মাহাতো, মুন্ডারী, সাঁওতাল, লোহার, তেলী, রায়, চৌহান, মাল পাহাড়ী, বাগতি, রামদাস, রবিদাস, মল্লিক, গারো, হাড়ী, তুড়ি, ভান্ডারী, ঋষি, কোনাই, মালো প্রভৃতি।

এদের রয়েছে নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি, ধর্ম ও অন্যান্য আচার-অনুষ্ঠান। এদের প্রচলিত ভাষাসমূহের মধ্যে রয়েছে সাদ্রি, কুরুখ,সাঁওতালী, ফারসী, নাগরী, উড়িয়া, পাহাড়ী ইত্যাদি । আদিবাসীরা মূলতঃ প্রকৃতি পূজারী। আদিবাসীদের নিজস্ব কিছু ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক আচার-অনুষ্ঠান রয়েছে । এসব অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে জন্ম-মৃত্যু, বিবাহ, কারাং উৎসব, ধান বান গাড়ী, শহরাই উৎসব, পুংটাডী, ডান্ডা-কাটনা, ফাগুয়া। এছাড়াও এরা সনাতন ধর্মের পূজা পার্বণ পালন করে থাকে ।

কবি জীবনানন্দ দাশ-এর লেখা বিখ্যাত ‘বনলতা সেন, কবিতায় নাটোর অমর হয়ে আছে। ঐতিহ্য আর প্রাচীন ইতিহাসের নীরব সাক্ষী হিসাবে দাঁড়িয়ে আছে নাটোরের দিঘাপতিয়া রাজবাড়ি। প্রাচীণ ঐতিহ্য আর প্রত্নতাত্বিক ঐশ্বর্য্যমণ্ডিত তিলোত্তমা এই রাজবাড়ি নাটোরকে এনে দিয়েছে এক বিশেষ খ্যাতি ও পরিচিতি।

রাণী ভবানীর রাজবাড়ী, উত্তরা গণভবন, দয়ারামপুর রাজবাড়ি, চাপিলা শাহী মসজিদে, চলনবিল, চলনিবল যাদুঘর, হালতির বিল বনপাড়া লুর্দের রাণী মা মারিয়া ধর্মপল্লী ও অন্যান্য দর্শনীয় ঐতিহাসিক স্থাপনা নিয়ে পর্যটন জোন গড়ে তোলা গেলে তা এ অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারবে ।


লেখকঃ তরুণ নারী উদ্যোক্তা ।

বিনামূল্যে ফেসশিল্ড সরবরাহ করছে নাটোরের একদল শিক্ষার্থী

নাটোর টুডেঃ নাটোরের একদল শিক্ষার্থী মিলে নিজ উদ্যোগে ১০০ পিচফেসশিল্ড তৈরি করেছেন। ফেসশিল্ড তৈরিতে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেছেন ‘নাটোর আ্যসোসিয়েশন অফ কুয়েট এ্যালামনাই”।

আজ সোমবার নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাঃ মোঃ আনছারুল হক এর কাছে ফেসশিল্ড হস্তান্তর করেন।

বর্তমানে করোনা ভাইরাসের থেকে সুরক্ষা পেতে ব্যবহৃত হচ্ছেপিপিই। সেই সঙ্গে বিশেষ সুরক্ষা দিতে পিপিই এর সাথে ব্যবহৃত হচ্ছে ফেসশিল্ড। হাঁচি – কাঁশির ড্রপলেটে করোনার প্রধান ট্রান্সমিশন পাথ। চোখ এবং মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক এবং গগলসের সঙ্গে ফেসশিল্ড আরো এক ধাপ বেশি সুরক্ষা প্রদান করে ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের।

ওই ৫জন শিক্ষার্থী হলেন- আল মাহমুদ মুরাদ (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়); মাহির ফয়সাল অংকন (খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়); শিখন বিশ্বাস (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়); হাবিব ফারাবি রাব্বি ( ঢাকা কলেজ); মায়মুনা সরকার ইফতি ( ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক)।

শিক্ষার্থী আল মাহমুদ মুরাদ বলেন, করোনা ভাইরাস মোকাবিলা করা আমাদের সকলে দায়িত্ব। নিজ নিজ অবস্থান থেকে যে যেভাবে পারি এগিয়ে আসি। এছাড়া নাটোরের সবগুলো উপজেলায় আমরা আমাদের এই সামগ্রী পৌঁছে দিতে চাই।

এ ব্যাপারে শিক্ষার্থী মাহির ফয়সাল অংকন জানান, এই ফেসশিল্ড যেকোন শিক্ষার্থী বাসায় বসেই বানাতে পারে। এভাবে সারাদেশব্যপী শিক্ষার্থীরা যদি এমন উদ্যোগ গ্রহণ করে তাহলে দেশের সকল পর্যায়ের চিকিৎসক এবং মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের অতিরিক্ত সুরক্ষা প্রদান করা সম্ভব হবে। কোভিড-১৯ এর এই মহামারি মোকাবিলা করতে হলে সবাইকে নিজ নিজ স্থান থেকে এগিয়ে আসতে হবে।”